করোনা শনাক্ত বৃদ্ধার নিকটাত্মীয়ের বাড়ি চন্দনাইশের জামিজুরী গ্রামে লকডাউন এবার

করোনা শনাক্ত বৃদ্ধার নিকটাত্মীয়ের বাড়ি চন্দনাইশের জামিজুরী গ্রামে লকডাউন এবার
চন্দনাইশের জামিজুরী গ্রামে লকডাউন এবার

চন্দনাইশ প্রতিনিধি ।।

চন্দনাইশ থানার দোহাজারী পৌরসভার জামিজুরী গ্রামের আবদুল আলিম ফকির বাড়ি লকডাউন করেছে প্রশাসন। ওই স্থানে চট্টগ্রামে করোনা শনাক্ত হওয়া বৃদ্ধের নিকটাত্মীয়ের বাড়ি। শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে প্রশাসন এ বাড়িটি লকডাউন করে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএসও ডাঃ শাহীন হাসান চৌধুরী, চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ কেশব চক্রবর্তী, দোহাজারী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া।

এ বিষয়ে চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ কেশব চক্রবর্তী বলেন, ‘জামিজুরী গ্রামের আবদুল আলিম ফকির বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের দামপাড়া এলাকার করোনা আক্রান্ত রোগীর নিকটাত্মীয় তারা। এ বাড়ির লোকজন সৌদি আরব ফেরত ওই আক্রান্ত ব্যক্তির মেয়ে অথবা মেয়ের শ্বাশুড়ির সংস্পর্শে আসার তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর বাড়িটি লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’

একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই বাড়ির ১৫ জন সদস্য কয়েকদিন আগে দামপাড়ার আক্রান্ত ব্যক্তির বাসায় অথবা সাতকানিয়ায় যে বাড়িতে আক্রান্ত ব্যক্তির সৌদি আরব ফেরত মেয়ে ও মেয়ের শ্বাশুড়ি থাকেন সে বাড়িতে দাওয়াতে অংশ গিয়েছিলেন। তাই প্রশাসন বাড়িটি লকডাউন করে।

এর আগেশুক্রবার (৩ এপ্রিল) চট্টগ্রামের দামপাড়া এলাকায় একজন করোনা আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মেলে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ওই রোগীর হিস্ট্রিতে বিদেশ যাতায়াত ও বিদেশ ফেরত কারো সংষ্পর্শে আসার তথ্য নেই বলে জানালেও পরে জানা যায় বৃদ্ধের মেয়ে ও তার শাশুড়ি সম্প্রতি সৌদি আরব থেকে ওমরাহ পালন করে ফিরেছেন।

এর পরপরই শুক্রবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের একটি অংশ লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় প্রশাসন। চট্টগ্রামে করোনা শনাক্ত হওয়া বৃদ্ধের এক মেয়ের শ্বশুরবাড়ি ওই ইউনিয়নে। তার স্বামীও সৌদিপ্রবাসী। কিছুদিন আগে সৌদি আরব থেকে ওমরাহ পালন করে এসেছেন করোনা ‘পজিটিভ’ দামপাড়ার ওই বৃদ্ধের মেয়ে ও তার শাশুড়ি। ওই নারী বর্তমানে তার পিতার বাড়ি দামপাড়ায় অবস্থান করছেন। তবে সৌদি আরব থেকে ফিরে ওই মেয়ের শাশুড়ি বর্তমানে সাতকানিয়ার পুরানগড়ে নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছেন। তাই ওই এলাকা লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর এ আলম।

চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘করোনাভাইরাস আক্রান্ত বৃদ্ধের মেয়ে এবং মেয়ের শ্বাশুড়ি ১২ মার্চ সৌদি থেকে ওমরা করে দেশে ফেরেন। মেয়ের স্বামী নিজেই সৌদিআরব প্রবাসী। ১২ মার্চ মেয়ের শ্বাশুড়ি গ্রামের বাড়ি সাতকানিয়া যাওয়ার পথে বেয়াইয়ের বাড়ি তথা দামপাড়ায় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেন। বিশ্রাম শেষে যে গাড়িতে বিমানবন্দর থেকে এসেছিলেন সেই গাড়িতেই সাতকানিয়া চলে যান। তবে বাপের বাড়ি থেকে যান বিদেশ ফেরত ওই মেয়ে এবং তিনি ৩ এপ্রিল পর্যন্ত দামপাড়াতে রয়েছেন।’

করোনা শনাক্ত হওয়া বৃদ্ধ ও তার পরিবার শুরু থেকেই বিদেশফেরত কারও সংস্পর্শের বিষয়টি গোপন করেছেন। রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর একে একে প্রকাশ হয় বিদেশফেরত হিস্ট্রি। এরই প্রেক্ষিতে বিগত কয়েকদিনে তারা যেসব ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন সবার করোনা টেস্ট করা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে প্রশাসন।