‘নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করি, নিজের জমি সুরক্ষিত রাখি’ এই প্রতিপাদ্যে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ৩ দিন ব্যাপী ভূমি মেলার ভূমি সেবা প্রার্থীদের উপচে পড়া ভীড়ের মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ ঘন্টায় আমিরাবাদের এস. এম. নূরুল গনিকে খতিয়ান করে দিয়ে প্রসংশার দাবীদার হলেন সীতাকুন্ড এসি ল্যান্ড অফিস।
মঙ্গলবার (২৭ মে) দিনব্যাপি ব্যতিক্রমী আয়োজন, সেবাগ্রহীতাদের সরাসরি অংশগ্রহণ এবং বিভিন্ন সমস্যা-সমাধানমুখী কার্যক্রমের মধ্যদিয়ে মেলার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)’ আব্দুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে ভূমি মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন ইউ এন ও মোঃ ফখরুল ইসলাম। এ সময় তিনি কুইজসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করেন ।
উপজেলা ভূমি অফিস চত্বরে আয়োজিত এ মেলার মূল আকর্ষণ ছিলো ভূমি সংক্রান্ত গণশুনানি ও সমস্যা সমাধান কর্মসূচি । প্রায় দুই শতাধিক সেবাগ্রহীতা তাদের জমি সংক্রান্ত নানা প্রশ্ন, অভিযোগ ও সমস্যার সরাসরি উপস্থাপন করেন। কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে শুনে তাৎক্ষণিক সমাধান দেন বেশ কয়েকটি অভিযোগের। একাধিক নাগরিক তাদের ভূমি নামজারি, খতিয়ান সংশোধন, অনলাইন আবেদন, রেজিস্ট্রি সংক্রান্ত জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিভিন্ন ব্যাখ্যা ও করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেন।
কয়েকজন সেবাগ্রহীতা জানান, ভূমি অফিসের ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগে তারা আশান্বিত। দীর্ঘদিনের জমিজমা সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে তারা কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন এবং সমাধানের আশ্বাসও মিলেছে বলে জানান।
অতিথি হিসেবে উপস্হিত ছিলেন উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফ আলম সরকার,সমাজসেবা কর্মকর্তা লুৎফরনেছা, সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ইসমত আরা বেগম, সমবায় অফিসার মঞ্জুমান আরা, জনস্বাস্হ্য অফিসার গণবেশ মহাজন, তথ্য সেবা অফিসার আছমারুল হোসনা,পল্লী অফিসার মরিয়ম আক্তার, ভূমি অফিসের পেশকার সবদেব হোসেন, নাজির কাজী নুরুদ্দীন হাসনাত, তহসিরদার মোঃ জসিম উদ্দিন, সীতাকুণ্ড সদর,কুমিরা,ভাটিয়ারী ভূমি অফিসের তহসীলদারগন, ক্রেডিট চেকিং সজিব দাসসহ সাংবাদিক, সেবা গ্রহীতা প্রমূখ।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ইউএনও ফখরুল ইসলাম বলেন, ভূমি মেলার মূল লক্ষ হচ্ছে ভূমি সেবা নিতে আসা সেবা প্রার্থীদের সচেতন করা,যাতে তারা নিজেদের কাজ নিজেরা করতে পারে। সেবা প্রার্থীরা যেন দালালের খপ্পরে পড়ে হয়রানীর স্বীকার হতে না হয়। এবিষয়েও তাদেরকে সচেতন করা। নিজের জমির কাগজপত্র নিজেই অপডেট রাখা। সময় মত কর পরিশোধ করে রাজস্ব দানে সহায়তার পাশাপাশি নিজের সম্পদ নিরাপদ রাখার সচেনতা বৃদ্ধি করা।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অনেকেই জমি সংক্রান্ত জটিলতা বা অনলাইন পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন না। এ ধরনের মেলার মাধ্যমে তারা সচেতন হচ্ছেন এবং সরাসরি সেবা পাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, ২৫ মে শুরু হওয়া এ ভূমি মেলায় প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে দুই শতাধিক নাগরিক সেবা নিতে আসেন।
সেবাগ্রহীতারা মনে করেন, এই সেবা সপ্তাহ যেনো প্রমাণ করলো, যদি প্রশাসনের আন্তরিকতা থাকে এবং জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়, তবে সরকারি সেবাও হয়ে উঠতে পারে আস্থার অন্য নাম। সচেতনতা, সরলতা ও সমানাধিকারে বিশ্বাসী এই আয়োজনটি সীতাকুণ্ডের মানুষের হৃদয়ে এক ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তা দিয়ে গেলো।
খালেদ / পোস্টকার্ড ;