Dhaka ০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ২১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংস্কারের উদ্যোগ নেই সীতাকুণ্ড মহাসড়কে ভেঙে পড়া ফুট ওভারব্রিজ !

সংস্কারের উদ্যোগ নেই সীতাকুণ্ড মহাসড়কে ভেঙে পড়া ফুট ওভারব্রিজ !

সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়ায় ফুটওভার ব্রিজ ২০২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা ব্যবহার শুরু করে । স্বাচ্ছন্দ্যেই চলাফেলা করছিল । ব্রীজটি হওয়ার পর এ স্থান দিয়ে কোনো পথচারীকে ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পার হতে দেখা যায়নি। সবাই ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে পার হতেন। হঠাৎ চলতি বছরের ১৬ মে ভোররাতে ঢাকামুখী একটি মালবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুট ওভারব্রিজে ধাক্কা দিলে ব্রিজের সিঁড়ির নিচের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং তখন থেকে কার্যত অকেজো হয়ে যায় ।

প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও দুর্ঘটনায় ভেঙে পড়া ফুট ওভারব্রিজ আর সংস্কার করা হয়নি। ফলে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীকে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পার হয়ে বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে হয়। পাশাপাশি বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে স্থানীয়রা , অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠিয়ে সারাক্ষণ আতঙ্কের মধ্যে থাকেন অভিভাবকরা।

স্থানীয় সূত্র জানা যায়, এই ফুট ওভারব্রিজটি ২০২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর থেকে আর আর টেক্সটাইল মিলস উচ্চ বিদ্যালয় এবং একই জায়গায় অবস্থিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতশত শিক্ষার্থীরা খুবই নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে ফুট ওভারব্রিজ দিয়ে চলাচল করেছিল। কিন্তু চলতি বছরের ১৬ মে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকামুখী একটি মালবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুট ওভারব্রিজে ধাক্কা দিলে ব্রিজের সিঁড়ির নিচের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং তখন থেকে ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ির নিচের অংশ ভেঙে পড়ায় ব্রিজ দিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আর তখন থেকে ঝুঁকি নিয়ে দুটি সড়ক পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের ।

ঘটনার দিন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবহিত করে। এরপর প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সড়ক ও জনপদ বিভাগ । ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ঢাকা-চট্টগ্রামের দুটি মহাসড়ক পার হয়ে শিক্ষার্থীদেরকে বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে হয়।

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিদা খানম বলেন, এই ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করেই আমি প্রতিদিন রাস্তা পার হই। এটি ব্যবহার করে রাস্তার সবপাশেই যাওয়া যায়। কিন্তু ব্রীজটা সংস্কার না হওয়ায় রাস্তা পার হতে ভয় হয় । অন্য শিক্ষার্থী মাহিয়া নূর জানান , ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ হওয়ার পর থেকে তারা নিরাপদে চলাচল করেছিল। কিন্তু ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ির নিচের অংশটি ভেঙে পড়ায় কেউ ব্রিজ দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। তাই ঝুঁকি নিয়ে দুটি মহাসড়ক পার হয়ে বিদ্যালয় যেতে হচ্ছে তাদের। শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে ফুটওভার ব্রিজ সংস্কার করে তাদের চলাচল ঝুঁকিমুক্ত করা হউক।

স্থানীয় অভিভাবক আব্দুল আওয়াল জানান, ফুট ওভারব্রিজ ভেঙে যাওয়ার পর থেকে ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয় পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে থাকার উপায় নেই । বিদ্যালয় থেকে ছেলেমেয়েরা বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত অস্থিরতার মধ্যে থাকতে হয় ।

বাঁশবাড়িয়া আর আর টেক্সটাইল মিলস্ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারহানা রহমান বলেন, গত ১৬ মে ফুট ওভারব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমি ঘটনার দিন চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ পরিদপ্তর বরাবরে চিঠির মাধ্যমে তাদের অবহিত করেছি। তাছাড়া বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি মো. আব্দুল মোমিনের কাছে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সড়ক ও জনপদ বিভাগ । তিনি বলেন, প্রতিটি মুহূর্তে ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের চলাচল করতে হচ্ছে। যার ফলে অভিভাবকসহ আমরা সবাই আতঙ্কে প্রতি মুহুর্ত আতঙ্কে থাকি ।

বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি মো. আব্দুল মোমিন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ফুটওভার ব্রিজ ভেঙে পড়ার বিষয়টি নিয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্তৃপক্ষের সাথে কয়েক বার কথা হয়েছে। তারা বলেছেন ফুটওভার ব্রিজ দ্রুত সংস্কার করে দিবেন।

সওজ’র উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারহান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ির নিচের অংশ ভেঙে যাওয়ার খবর শুনে আমি সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে এসেছি। লোক ঠিক করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে ফুট ওভারব্রিজটি সংস্কার করা হবে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
লেখক তথ্য সম্পর্কে

মোটরসাইকেলের ধাক্কায় সীতাকুণ্ডে মারা গেলেন শিক্ষক

সংস্কারের উদ্যোগ নেই সীতাকুণ্ড মহাসড়কে ভেঙে পড়া ফুট ওভারব্রিজ !

আপডেটের সময় : ০৬:৩২:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ জুন ২০২৫

সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়ায় ফুটওভার ব্রিজ ২০২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা ব্যবহার শুরু করে । স্বাচ্ছন্দ্যেই চলাফেলা করছিল । ব্রীজটি হওয়ার পর এ স্থান দিয়ে কোনো পথচারীকে ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পার হতে দেখা যায়নি। সবাই ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে পার হতেন। হঠাৎ চলতি বছরের ১৬ মে ভোররাতে ঢাকামুখী একটি মালবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুট ওভারব্রিজে ধাক্কা দিলে ব্রিজের সিঁড়ির নিচের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং তখন থেকে কার্যত অকেজো হয়ে যায় ।

প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও দুর্ঘটনায় ভেঙে পড়া ফুট ওভারব্রিজ আর সংস্কার করা হয়নি। ফলে সহস্রাধিক শিক্ষার্থীকে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পার হয়ে বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে হয়। পাশাপাশি বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে স্থানীয়রা , অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠিয়ে সারাক্ষণ আতঙ্কের মধ্যে থাকেন অভিভাবকরা।

স্থানীয় সূত্র জানা যায়, এই ফুট ওভারব্রিজটি ২০২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর থেকে আর আর টেক্সটাইল মিলস উচ্চ বিদ্যালয় এবং একই জায়গায় অবস্থিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতশত শিক্ষার্থীরা খুবই নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে ফুট ওভারব্রিজ দিয়ে চলাচল করেছিল। কিন্তু চলতি বছরের ১৬ মে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকামুখী একটি মালবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুট ওভারব্রিজে ধাক্কা দিলে ব্রিজের সিঁড়ির নিচের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায় এবং তখন থেকে ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ির নিচের অংশ ভেঙে পড়ায় ব্রিজ দিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আর তখন থেকে ঝুঁকি নিয়ে দুটি সড়ক পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের ।

ঘটনার দিন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবহিত করে। এরপর প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সড়ক ও জনপদ বিভাগ । ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ঢাকা-চট্টগ্রামের দুটি মহাসড়ক পার হয়ে শিক্ষার্থীদেরকে বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে হয়।

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিদা খানম বলেন, এই ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করেই আমি প্রতিদিন রাস্তা পার হই। এটি ব্যবহার করে রাস্তার সবপাশেই যাওয়া যায়। কিন্তু ব্রীজটা সংস্কার না হওয়ায় রাস্তা পার হতে ভয় হয় । অন্য শিক্ষার্থী মাহিয়া নূর জানান , ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ হওয়ার পর থেকে তারা নিরাপদে চলাচল করেছিল। কিন্তু ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ির নিচের অংশটি ভেঙে পড়ায় কেউ ব্রিজ দিয়ে চলাচল করতে পারছে না। তাই ঝুঁকি নিয়ে দুটি মহাসড়ক পার হয়ে বিদ্যালয় যেতে হচ্ছে তাদের। শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে ফুটওভার ব্রিজ সংস্কার করে তাদের চলাচল ঝুঁকিমুক্ত করা হউক।

স্থানীয় অভিভাবক আব্দুল আওয়াল জানান, ফুট ওভারব্রিজ ভেঙে যাওয়ার পর থেকে ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয় পাঠিয়ে নিশ্চিন্তে থাকার উপায় নেই । বিদ্যালয় থেকে ছেলেমেয়েরা বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত অস্থিরতার মধ্যে থাকতে হয় ।

বাঁশবাড়িয়া আর আর টেক্সটাইল মিলস্ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফারহানা রহমান বলেন, গত ১৬ মে ফুট ওভারব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমি ঘটনার দিন চট্টগ্রাম সড়ক ও জনপদ পরিদপ্তর বরাবরে চিঠির মাধ্যমে তাদের অবহিত করেছি। তাছাড়া বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি মো. আব্দুল মোমিনের কাছে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সড়ক ও জনপদ বিভাগ । তিনি বলেন, প্রতিটি মুহূর্তে ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের চলাচল করতে হচ্ছে। যার ফলে অভিভাবকসহ আমরা সবাই আতঙ্কে প্রতি মুহুর্ত আতঙ্কে থাকি ।

বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি মো. আব্দুল মোমিন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ফুটওভার ব্রিজ ভেঙে পড়ার বিষয়টি নিয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্তৃপক্ষের সাথে কয়েক বার কথা হয়েছে। তারা বলেছেন ফুটওভার ব্রিজ দ্রুত সংস্কার করে দিবেন।

সওজ’র উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফারহান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ফুট ওভারব্রিজের সিঁড়ির নিচের অংশ ভেঙে যাওয়ার খবর শুনে আমি সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে এসেছি। লোক ঠিক করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে ফুট ওভারব্রিজটি সংস্কার করা হবে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন