Dhaka ০৪:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সীতাকুণ্ড কথাকলি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র পুনর্মিলনী সম্পন্ন

সীতাকুণ্ডের ঐতিহ্যবাহী কথাকলি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে নিউ পান্জেরীর সভাপতি ইফতেখার উদ্দিনের সঞ্চালনায় দুই পর্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বাচ্চু।

দুপুর ১২ টার দিকে প্রথম পর্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন,‘‘এত সুন্দর ও চমৎকার পরিবেশ খুব কম বিদ্যালয়ে দেখা যায়। একপাশে সুবিশাল দীঘি, আরেক পাশে বিশাল খেলার মাঠ ও চমৎকার রাস্তা বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য অনেকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। এই বিদ্যালয়ে এসে আমি শৈশবে হারিয়ে গিয়েছি।” পুনর্মিলনী আয়োজনের উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি ভবিষ্যতে যেকোন প্রয়োজনে বিদ্যালয়ের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

প্রথম অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার নুরুল আলম দুলাল, পৌরসদর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রেজাউল করিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেম ওয়াহিদী, সমাজ সেবক আবুল হোসেন, পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর রায়হান উদ্দিন, প্রধান শিক্ষক রুপন চন্দ্র দে, সাংবাদিক কাইয়ুম চৌধুরী ও সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম।

দ্বিতীয় পর্বে বিকেল ৪ টায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইমাম উদ্দিন ভূইঁয়া। তিনি বলেন, ‘ঘরে চুরি হলে কিছু জিনিস অবশিষ্ট থাকে। কিন্তু আগুন লাগলে কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। যেটাকে ডিজেষ্টার বা ধ্বংস বলা হয়। বিগত ১৫ বছর বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আগে আমরা যেকোন শিক্ষককে দেখলেই সম্মান করতাম। শিক্ষক হলেই তার সম্মানটা ছিল ভিন্ন। অন্তর থেকে শ্রদ্ধা আসত। আর এখন শিক্ষকরা ভয়ে থাকে কখন কোন ছাত্র বেয়াদবি করে ফেলে। শুধু শিক্ষকরা না পিতা-মাতাও আতঙ্কে থাকেন সন্তানদের নিয়ে। এখন সন্তানদের কাছে পিতামাতাও অসহায় হয়ে গেছেন। তারা পারছেন না ঘর ছেড়ে কোথাও চলে যেতে।

সম্প্রতি দ্য ইকোনমিষ্টের একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন,“তবে আশার কথা হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে শিক্ষা ক্ষেত্রে পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। বাংলাদেশ আগে ধ্বংসের দিকে এক নাম্বার থাকলেও এখন পরিবর্তনে এক নাম্বার। আশা করছি শীঘ্রই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ঘুরে দাড়াঁবে। শিক্ষার্থীদের মাঝে আবার সুস্থ প্রতিযোগীতা শুরু হবে।”

২য় আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বারৈয়ার হাট কলেজের সাবেক অধ্যাপক নুরুল গণি, সরকারি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সলিমুল্লাহ, সমাজ সেবক মো. দিদারুল আলম, ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন। এছাড়া বিদ্যালয়ের কয়েকজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেন। দীর্ঘ দিনের পুরনো বন্ধুদের কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন অনেকে। অয়োজক কমিটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন,“এই দিনটি ভুলবার নয়। স্কুল জীবনের বন্ধুদের কাছে পেয়ে একটি দিন যেন চোখের পলকে কেটে গেল। অতীতের অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল। স্মৃতির পাতায় আজকের দিনটি অমলিন হয়ে থাকবে।”

এর আগে সকাল ১০টায় কয়েকশত প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের অংশগ্রহণে আনন্দ র‌্যালী অনষ্ঠিত হয়। র‌্যালীটি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে পৌরসদরের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিদ্যালয়ে ফিরে আসে।

অংশগ্রহণকারীরা সুন্দর একটি পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ইফতেখার উদ্দিনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তবে ইফতেখার উদ্দীন বলেন, “এত বড় অনুষ্ঠান একার পক্ষে আয়োজন করা কখনো সম্ভব নয়। নাসির উদ্দিন, আবুল কালাম, সোহেল, শাহরিয়ার, মোহাম্মদ আলী সহ আরো কয়েকজন গত কয়েক দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে অনুষ্ঠানটি সার্থক করেছেন।

খালেদ / চট্টগ্রাম ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
ট্যাগ:
লেখক তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় পোস্ট

তেলের ডিপোতে পড়ে সীতাকুণ্ডে একজনের মৃত্যু, দগ্ধ ৩

সীতাকুণ্ড কথাকলি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র পুনর্মিলনী সম্পন্ন

আপডেটের সময় : ০৫:৩৪:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

সীতাকুণ্ডের ঐতিহ্যবাহী কথাকলি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে নিউ পান্জেরীর সভাপতি ইফতেখার উদ্দিনের সঞ্চালনায় দুই পর্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বাচ্চু।

দুপুর ১২ টার দিকে প্রথম পর্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন,‘‘এত সুন্দর ও চমৎকার পরিবেশ খুব কম বিদ্যালয়ে দেখা যায়। একপাশে সুবিশাল দীঘি, আরেক পাশে বিশাল খেলার মাঠ ও চমৎকার রাস্তা বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য অনেকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। এই বিদ্যালয়ে এসে আমি শৈশবে হারিয়ে গিয়েছি।” পুনর্মিলনী আয়োজনের উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি ভবিষ্যতে যেকোন প্রয়োজনে বিদ্যালয়ের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

প্রথম অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার নুরুল আলম দুলাল, পৌরসদর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রেজাউল করিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেম ওয়াহিদী, সমাজ সেবক আবুল হোসেন, পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর রায়হান উদ্দিন, প্রধান শিক্ষক রুপন চন্দ্র দে, সাংবাদিক কাইয়ুম চৌধুরী ও সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম।

দ্বিতীয় পর্বে বিকেল ৪ টায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইমাম উদ্দিন ভূইঁয়া। তিনি বলেন, ‘ঘরে চুরি হলে কিছু জিনিস অবশিষ্ট থাকে। কিন্তু আগুন লাগলে কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। যেটাকে ডিজেষ্টার বা ধ্বংস বলা হয়। বিগত ১৫ বছর বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আগে আমরা যেকোন শিক্ষককে দেখলেই সম্মান করতাম। শিক্ষক হলেই তার সম্মানটা ছিল ভিন্ন। অন্তর থেকে শ্রদ্ধা আসত। আর এখন শিক্ষকরা ভয়ে থাকে কখন কোন ছাত্র বেয়াদবি করে ফেলে। শুধু শিক্ষকরা না পিতা-মাতাও আতঙ্কে থাকেন সন্তানদের নিয়ে। এখন সন্তানদের কাছে পিতামাতাও অসহায় হয়ে গেছেন। তারা পারছেন না ঘর ছেড়ে কোথাও চলে যেতে।

সম্প্রতি দ্য ইকোনমিষ্টের একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন,“তবে আশার কথা হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে শিক্ষা ক্ষেত্রে পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। বাংলাদেশ আগে ধ্বংসের দিকে এক নাম্বার থাকলেও এখন পরিবর্তনে এক নাম্বার। আশা করছি শীঘ্রই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ঘুরে দাড়াঁবে। শিক্ষার্থীদের মাঝে আবার সুস্থ প্রতিযোগীতা শুরু হবে।”

২য় আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বারৈয়ার হাট কলেজের সাবেক অধ্যাপক নুরুল গণি, সরকারি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সলিমুল্লাহ, সমাজ সেবক মো. দিদারুল আলম, ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন। এছাড়া বিদ্যালয়ের কয়েকজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেন। দীর্ঘ দিনের পুরনো বন্ধুদের কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন অনেকে। অয়োজক কমিটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন,“এই দিনটি ভুলবার নয়। স্কুল জীবনের বন্ধুদের কাছে পেয়ে একটি দিন যেন চোখের পলকে কেটে গেল। অতীতের অনেক স্মৃতি মনে পড়ে গেল। স্মৃতির পাতায় আজকের দিনটি অমলিন হয়ে থাকবে।”

এর আগে সকাল ১০টায় কয়েকশত প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের অংশগ্রহণে আনন্দ র‌্যালী অনষ্ঠিত হয়। র‌্যালীটি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে পৌরসদরের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিদ্যালয়ে ফিরে আসে।

অংশগ্রহণকারীরা সুন্দর একটি পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ইফতেখার উদ্দিনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তবে ইফতেখার উদ্দীন বলেন, “এত বড় অনুষ্ঠান একার পক্ষে আয়োজন করা কখনো সম্ভব নয়। নাসির উদ্দিন, আবুল কালাম, সোহেল, শাহরিয়ার, মোহাম্মদ আলী সহ আরো কয়েকজন গত কয়েক দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে অনুষ্ঠানটি সার্থক করেছেন।

খালেদ / চট্টগ্রাম ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন