চট্টগ্রামের বহু আকাঙ্ক্ষিত কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে চট্টগ্রামে আগমন করছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস। এ উপলক্ষে ১৩ মে (মঙ্গলবার) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনরত সংগঠন চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরাম ড. ইউনুসকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তাকে ‘চট্টগ্রামের সম্ভাবনার বার্তাবাহক’ হিসেবে আখ্যা দেয়।
সংগঠনের মহাসচিব ও সাংবাদিক মো. কামাল উদ্দিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, “কালুরঘাট সেতু শুধু একটি অবকাঠামো নয়, এটি দক্ষিণ চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক মুক্তির চাবিকাঠি। আমরা এই সেতুর দাবিতে ১৯৮৮ সাল থেকে আন্দোলন করে আসছি। অনেক সরকার এই আন্দোলনকে বিরোধী রাজনীতি বলে অপবাদ দিলেও আমরা থেমে থাকিনি। আজ ড. ইউনুসের আগমন আমাদের দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল।”
তিনি আরও বলেন, “আগামী ১৪ মে ২০২৫ তারিখে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে ড. ইউনুসের উপস্থিতি শুধু একটি প্রকল্পের সূচনা নয়, এটি চট্টগ্রামের নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচন করবে। আমরা তাঁকে জানাচ্ছি হৃদয় নিংড়ানো স্বাগত।”
সেতু নির্মাণে দ্রুত অগ্রগতি নিশ্চিত করতে নাগরিক ফোরামের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হয়। এ প্রসঙ্গে মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “পদ্মা সেতু যেখানে ৮ বছরে নির্মিত হয়েছে, সেখানে মাত্র ৭০০ মিটার দৈর্ঘ্যের কালুরঘাট সেতু চাইলে ২০২৮ সালের মধ্যেই সম্পন্ন করা সম্ভব। এ জন্য প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি তদারকি কামনা করছি।”
চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়, “এই সেতু নিয়ে কোনো ধরনের কালক্ষেপণ বা অবহেলা আমরা মেনে নেব না। প্রয়োজনে আবারো জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে নামবো।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অন্য বক্তাদের মধ্যে গবেষক সোহেল মোহাম্মদ ফখরুদ্দীন বলেন, “চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ এই সেতুর জন্য যুগ যুগ ধরে অপেক্ষা করছে। আজ তাদের আশা পূরণের দ্বারপ্রান্তে আমরা দাঁড়িয়ে আছি।”
মিডিয়া ব্যক্তিত্ব কামরুল ইসলাম বলেন, “এই সেতু নির্মাণ দক্ষিণ চট্টগ্রামের অবকাঠামোগত উন্নয়নে গতি আনবে। আমরা চাই দ্রুত নির্মাণ কাজ শুরু হোক।”
লায়ন আসিফ আহমেদ বলেন, “এটি কোনো রাজনৈতিক ইস্যু নয়, এটি মানুষের জীবন ও জীবিকার প্রশ্ন।”
সংবাদ সম্মেলনের শেষভাগে নাগরিক ফোরামের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়, “চট্টগ্রামের সব গণমাধ্যম, রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন এবং সাধারণ জনগণ যেন ঐক্যবদ্ধভাবে এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে অংশগ্রহণ করে এবং ২০২৮ সালের মধ্যে নতুন কালুরঘাট সেতুর উদ্বোধনের ঐতিহাসিক আনন্দে সকলে মিলিত হতে পারে।”
খালেদ / পোস্টকার্ড ;