Dhaka ১১:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুসলিম সম্প্রদায়ের অধঃপতন ও অমুসলিমদের উন্নতির কারণ !

  • ইসলাম ডেস্ক ।।
  • আপডেটের সময় : ০৩:২০:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
  • ৩৬ টাইম ভিউ

মুসলিম সম্প্রদায়ের অধঃপতন ও অমুসলিমদের উন্নতির কারণ !

পৃথিবী এমন জগৎ, যেখানে উপায় অবলম্বনের সঙ্গে ফলাফল সম্পৃক্ত। বিধর্মীরাও যথাযথ উপকরণ গ্রহণ করলে মহান আল্লাহ দুনিয়াতে তাদের উন্নতি দান করবেন। যদিও পরকালে তাদের জন্য কল্যাণ থাকবে না।

সামাজিক জীবনের যেসব আদর্শ রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের শিখিয়েছেন, বিধর্মীরা আজ সেসব লুফে নিয়েছে। তাই মহান আল্লাহ তাদের উন্নতি দান করেছেন। আমাদের অভিযোগ, আমরা মুসলমান, কালিমা পাঠ করেছি, এক আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছি; এরপরও এ জগতে আমরা লাঞ্ছিত ও বঞ্চিত। অপরদিকে ওরা অমুসলিম হয়েও দিন দিন উন্নতির শিখরে আরোহণ করছে। কিন্তু অভিযোগের আগে আমাদের ভাবা দরকার ছিল, এসব অমুসলিমরা আজ ইসলামের শিক্ষা গ্রহণ করেছে। তারা নিজেদের লেনদেনে আমানতদারি রক্ষা করছে। ব্যবসায় তারা মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে না। যার ফলশ্রুতিতে মহান আল্লাহ তাদের ব্যবসাকে আলোকিত করে দিচ্ছেন। এর বিপরীতে মুসলমানরা নিজেদের ধর্মের শিক্ষা বিস্মৃত হয়েছে। তারা ধর্মকে মসজিদ ও মাদরাসার গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ করে জীবনের অন্যান্য শাখা থেকে ধর্মকে একরকম বহিষ্কার করে দিয়েছে। যার ফলে তারা নিজেদের ধর্ম থেকেও দূরে সরে গেছে, আর দুনিয়াতেও লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছে। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের এসব কিছুই শিখিয়েছেন, যেন আমরা এগুলোকে দ্বীনের অনুষঙ্গ বিবেচনা করে নিজেদের মধ্যে ধারণ করি। (ইসলাহি খুতুবাত, খণ্ড:৫, পৃষ্ঠা: ১৭৩)

সাহাবিরা নবীজি (সা.)-এর সুন্নতের অনুসরণ করে পুরো বিশ্বকে করতলগত করেছিলেন। অথচ আজ আমরা এই ভয়ে তটস্থ, যদি নবীজির অমুক সুন্নতের পালন করি, তাহলে আমাকে নিয়ে মানুষ কী বলবে? দুনিয়াবাসী আমাকে নিয়ে উপহাস করবে। ব্রিটিশরা আমাদের নিয়ে হাসাহাসি করবে। অমুক দেশের মানুষরা বিদ্রূপ করবে। যার পরিণতিতে বিশ্বজুড়ে আমরা লাঞ্ছিত ও বঞ্চিত।

আজ পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা মুসলিম। পৃথিবীতে এখন যত মুসলমানের বসবাস, তা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অধিক। মুসলমানদের হাতে এখন যে পরিমাণ অর্থসম্পদ রয়েছে, তা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।

কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সা.) ভবিষ্যদ্বানী করেছেন, একসময় তোমরা সংখ্যায় অনেক বেশি হবে, কিন্তু তোমাদের অবস্থা হবে পানিতে ভাসমান খড়কুটোর মতো। তোমাদের নিজস্ব কোনো ক্ষমতা থাকবে না। আজ আমাদের অবস্থা অনেকটা এমন। আমরা আমাদের শত্রুদের মনোরঞ্জনের জন্য নিজেদের সকল স্বকীয়তা বিলিয়ে দিচ্ছি। নিজেদের নৈতিকতা, আখলাক, আদর্শ ও বৈশিষ্ট্য সবকিছুই জলাঞ্জলি দিয়েছি। এমনকি নিজেদের বেশ-ভূষাও পাল্টে ফেলেছি। আপাদমস্তক বিধর্মীদের অনুকরণ করে শত্রুদের জানান দিচ্ছি, আমরা তোমাদের একান্ত গোলাম। তবুও তারা আমাদের ওপর সন্তুষ্ট নয়। প্রতিদিন আমাদের মারছে। কখনো ইসরায়েলে, আবার কখনো অন্য কোনো দেশে। মনে রাখতে হবে, মুসলমান যখন নবীজির আদর্শ ছেড়ে দেবে, তারা সর্বদা লাঞ্ছিত হতে থাকবে।

হচ্ছেও তাই। পুরো বিশ্ব আমাদের নিয়ে বিদ্রূপই করছে। মুসলমানরা যখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নতকে মাথা পেতে মেনে নেবে, পুরো বিশ্ব আবার মুসলমানদের শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নেবে। (ইসলাহি খুতুবাত, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ১৬৮)

এককালে মুসলমানের বৈশিষ্ট্য ছিল ব্যবসায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা। সততা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা ছিল তাদের নীতি। ধোঁকা আর প্রতারণার কথা কেউ কল্পনাও করত না। আর আজকের মুসলমানরা তাদের এসব নীতি ও আদর্শকে ভুলে গেছে। অপরদিকে ব্রিটিশ ও মার্কিনিরা-সহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো নিজেদের ব্যবসায় এসব নীতিমালা গ্রহণ করেছে। ফলে দিন দিন তাদের অর্থনীতি উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এরকম নানাবিধ কারণে মুসলিমদের অধঃপতন হয়েছে ও হচ্ছে। অন্যদিকে অমুসলিমরা ইসলামের সৌন্দর্য ধারণের ফলে তাদের উন্নতি হচ্ছে। (যুগজিজ্ঞাসার ইসলামি সমাধান, আল্লামা মুফতি তকি উসমানি, অনুবাদ, মহিউদ্দিন কাসেমী, মাকতাবাতুল খিদমাহ, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ১৭৩-১৭৪)

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
লেখক তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় পোস্ট

আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ইশরাককে শপথ পড়ানো যাবে না: রিটকারীর আইনজীবী

মুসলিম সম্প্রদায়ের অধঃপতন ও অমুসলিমদের উন্নতির কারণ !

আপডেটের সময় : ০৩:২০:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫

পৃথিবী এমন জগৎ, যেখানে উপায় অবলম্বনের সঙ্গে ফলাফল সম্পৃক্ত। বিধর্মীরাও যথাযথ উপকরণ গ্রহণ করলে মহান আল্লাহ দুনিয়াতে তাদের উন্নতি দান করবেন। যদিও পরকালে তাদের জন্য কল্যাণ থাকবে না।

সামাজিক জীবনের যেসব আদর্শ রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের শিখিয়েছেন, বিধর্মীরা আজ সেসব লুফে নিয়েছে। তাই মহান আল্লাহ তাদের উন্নতি দান করেছেন। আমাদের অভিযোগ, আমরা মুসলমান, কালিমা পাঠ করেছি, এক আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছি; এরপরও এ জগতে আমরা লাঞ্ছিত ও বঞ্চিত। অপরদিকে ওরা অমুসলিম হয়েও দিন দিন উন্নতির শিখরে আরোহণ করছে। কিন্তু অভিযোগের আগে আমাদের ভাবা দরকার ছিল, এসব অমুসলিমরা আজ ইসলামের শিক্ষা গ্রহণ করেছে। তারা নিজেদের লেনদেনে আমানতদারি রক্ষা করছে। ব্যবসায় তারা মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে না। যার ফলশ্রুতিতে মহান আল্লাহ তাদের ব্যবসাকে আলোকিত করে দিচ্ছেন। এর বিপরীতে মুসলমানরা নিজেদের ধর্মের শিক্ষা বিস্মৃত হয়েছে। তারা ধর্মকে মসজিদ ও মাদরাসার গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ করে জীবনের অন্যান্য শাখা থেকে ধর্মকে একরকম বহিষ্কার করে দিয়েছে। যার ফলে তারা নিজেদের ধর্ম থেকেও দূরে সরে গেছে, আর দুনিয়াতেও লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছে। অথচ রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের এসব কিছুই শিখিয়েছেন, যেন আমরা এগুলোকে দ্বীনের অনুষঙ্গ বিবেচনা করে নিজেদের মধ্যে ধারণ করি। (ইসলাহি খুতুবাত, খণ্ড:৫, পৃষ্ঠা: ১৭৩)

সাহাবিরা নবীজি (সা.)-এর সুন্নতের অনুসরণ করে পুরো বিশ্বকে করতলগত করেছিলেন। অথচ আজ আমরা এই ভয়ে তটস্থ, যদি নবীজির অমুক সুন্নতের পালন করি, তাহলে আমাকে নিয়ে মানুষ কী বলবে? দুনিয়াবাসী আমাকে নিয়ে উপহাস করবে। ব্রিটিশরা আমাদের নিয়ে হাসাহাসি করবে। অমুক দেশের মানুষরা বিদ্রূপ করবে। যার পরিণতিতে বিশ্বজুড়ে আমরা লাঞ্ছিত ও বঞ্চিত।

আজ পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা মুসলিম। পৃথিবীতে এখন যত মুসলমানের বসবাস, তা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অধিক। মুসলমানদের হাতে এখন যে পরিমাণ অর্থসম্পদ রয়েছে, তা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।

কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সা.) ভবিষ্যদ্বানী করেছেন, একসময় তোমরা সংখ্যায় অনেক বেশি হবে, কিন্তু তোমাদের অবস্থা হবে পানিতে ভাসমান খড়কুটোর মতো। তোমাদের নিজস্ব কোনো ক্ষমতা থাকবে না। আজ আমাদের অবস্থা অনেকটা এমন। আমরা আমাদের শত্রুদের মনোরঞ্জনের জন্য নিজেদের সকল স্বকীয়তা বিলিয়ে দিচ্ছি। নিজেদের নৈতিকতা, আখলাক, আদর্শ ও বৈশিষ্ট্য সবকিছুই জলাঞ্জলি দিয়েছি। এমনকি নিজেদের বেশ-ভূষাও পাল্টে ফেলেছি। আপাদমস্তক বিধর্মীদের অনুকরণ করে শত্রুদের জানান দিচ্ছি, আমরা তোমাদের একান্ত গোলাম। তবুও তারা আমাদের ওপর সন্তুষ্ট নয়। প্রতিদিন আমাদের মারছে। কখনো ইসরায়েলে, আবার কখনো অন্য কোনো দেশে। মনে রাখতে হবে, মুসলমান যখন নবীজির আদর্শ ছেড়ে দেবে, তারা সর্বদা লাঞ্ছিত হতে থাকবে।

হচ্ছেও তাই। পুরো বিশ্ব আমাদের নিয়ে বিদ্রূপই করছে। মুসলমানরা যখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নতকে মাথা পেতে মেনে নেবে, পুরো বিশ্ব আবার মুসলমানদের শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নেবে। (ইসলাহি খুতুবাত, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ১৬৮)

এককালে মুসলমানের বৈশিষ্ট্য ছিল ব্যবসায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা। সততা ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা ছিল তাদের নীতি। ধোঁকা আর প্রতারণার কথা কেউ কল্পনাও করত না। আর আজকের মুসলমানরা তাদের এসব নীতি ও আদর্শকে ভুলে গেছে। অপরদিকে ব্রিটিশ ও মার্কিনিরা-সহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো নিজেদের ব্যবসায় এসব নীতিমালা গ্রহণ করেছে। ফলে দিন দিন তাদের অর্থনীতি উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এরকম নানাবিধ কারণে মুসলিমদের অধঃপতন হয়েছে ও হচ্ছে। অন্যদিকে অমুসলিমরা ইসলামের সৌন্দর্য ধারণের ফলে তাদের উন্নতি হচ্ছে। (যুগজিজ্ঞাসার ইসলামি সমাধান, আল্লামা মুফতি তকি উসমানি, অনুবাদ, মহিউদ্দিন কাসেমী, মাকতাবাতুল খিদমাহ, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ১৭৩-১৭৪)

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন