Dhaka ০৮:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
৪ ‘সমন্বয়ক’ গ্রেপ্তার, অন্যদের খুঁজছে পুলিশ

সমন্বয়ক পরিচয়ে গার্মেন্ট কর্মকর্তা অপহরণ, ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়

‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে গার্মেন্ট কর্মকর্তাকে অপহরণ, ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে চট্টগ্রামে এক গার্মেন্ট কর্মকর্তা ও তার গাড়িচালককে বাসা থেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ বাবদ ৫ লাখ টাকা এবং ১৫ লাখ টাকার চেক আদায়ের ঘটনা ঘটেছে।

এর সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের একজনের বাসা থেকে মুক্তিপণের ৫ লাখ টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় আকবর শাহ থানাধীন সিডিএ আবাসিক এলাকায় চাঞ্চল্যকর এই অপহরণের ঘটনা ঘটে। অপহরণের শিকার গার্মেন্ট কর্মকর্তার নাম আবেদিন আল মামুন। তিনি প্যাসিফিক জিন্স লিমিটেডের সহকারী মহাব্যবস্থাপক। তার গাড়িচালকের নাম জুয়েল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি নামধারী গ্রেফতার হওয়া চারজন হলেন- নাজমুল আবেদিন, নইমুল আমিন ইমন, আরাফাত হোসেন ফহিম ও রসতি বিন ইউসুফ। তাদের সবার বসবাস আকবর শাহ থানাধীন সিডিএ আবাসিক ও উত্তর কাট্টলী এলাকায়।

সিএমপির প্রেস বিজ্ঞপ্তি এবং অপহৃতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি পরিচয়ধারী ৮-১০ যুবক আকবর শাহ থানাধীন সিডিএ আবাসিক এলাকায় অবস্থিত ফ্যাসিফিক জিন্সের কর্মকর্তা আবেদিন আল মামুনের বাসায় হানা দেয়। তারা জোরপূর্বক আবেদিন আল মামুন ও তার গাড়িচালক জুয়েলকে গাড়িতে তুলে রওয়ানা দেয়। এরপর তারা পতেঙ্গা সাগরপাড় এলাকা ও পাহাড়তলী কর্নেলহাট জোন রোড এলাকাসহ পাহাড়তলী এবং আকবরশাহ বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করতে থাকে।

এ সময়ের মধ্যে ভিকটিমের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার লিলি বেগমের মোবাইলে ফোন করে অপহরণকারীরা স্বামীর মুক্তিপণ হিসাবে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় প্রাণনাশের হুমকি দেয়। স্বামীকে ফিরে পেতে ফাতেমা আক্তার অপহরণকারী দলের সদস্যদের হাতে নগদ ৫ লাখ টাকা তুলে দেন। পাশাপাশি ১৫ লাখ টাকার চেক লিখে দেন।

অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের খবর পাওয়ার পর সিএমপির কমিশনার হাসিব আজিজ যেকোনো মূল্যে জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন পুলিশকে। সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) হুসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়ার নেতৃত্বে পাহাড়তলী জোন পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগ যৌথ অভিযান শুরু করে।

অভিযানের খবর পেয়ে অপহরণকারীরা আবেদিন আলী ও তার গাড়িচালককে অ্যাপোলো ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল এলাকায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আবেদিন আল মামুন ও তার ড্রাইভার জুয়েলকে উদ্ধার করে পুলিশ। রাতে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে চার অপহরণকারীকে নিজ নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করে।

জিজ্ঞাসাবাদের পরিপ্রেক্ষিতে আসামি নইমুল আমিন ইমনের বাসা থেকে মুক্তিপণের টাকা উদ্ধার করা হয়। অপহরণের শিকার আবেদিন আল মামুনের বাসা সিডিএ আবাসিক এলাকার প্রভাতী স্কুলের বিপরীতে।

আকবরশাহ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো কামরুজ্জামান বলেন, গ্রেফতার চারজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে অপহরণ করেছে। এই চারজন ছাড়াও অপহরণের সঙ্গে অপি, আলাউদ্দিন, আরাফাত আসিফসহ আরও বেশ কয়েকজনের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের সবার বয়স ২২ থেকে ২৫-এর মধ্যে। তারা নিজেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসাবে পরিচয় দিলেও তারা কোথায় কিভাবে আন্দোলনে ছিল বা আদৌ ছিল কিনা সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নেওয়া হচ্ছে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
লেখক তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় পোস্ট

সীতাকুণ্ড জাহাজভাঙা শ্রমিকদের ঈদ বোনাস, বেতন ও ন্যায্য মজুরির দাবিতে মানববন্ধন

৪ ‘সমন্বয়ক’ গ্রেপ্তার, অন্যদের খুঁজছে পুলিশ

সমন্বয়ক পরিচয়ে গার্মেন্ট কর্মকর্তা অপহরণ, ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়

আপডেটের সময় : ১২:২০:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে চট্টগ্রামে এক গার্মেন্ট কর্মকর্তা ও তার গাড়িচালককে বাসা থেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ বাবদ ৫ লাখ টাকা এবং ১৫ লাখ টাকার চেক আদায়ের ঘটনা ঘটেছে।

এর সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের একজনের বাসা থেকে মুক্তিপণের ৫ লাখ টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় আকবর শাহ থানাধীন সিডিএ আবাসিক এলাকায় চাঞ্চল্যকর এই অপহরণের ঘটনা ঘটে। অপহরণের শিকার গার্মেন্ট কর্মকর্তার নাম আবেদিন আল মামুন। তিনি প্যাসিফিক জিন্স লিমিটেডের সহকারী মহাব্যবস্থাপক। তার গাড়িচালকের নাম জুয়েল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি নামধারী গ্রেফতার হওয়া চারজন হলেন- নাজমুল আবেদিন, নইমুল আমিন ইমন, আরাফাত হোসেন ফহিম ও রসতি বিন ইউসুফ। তাদের সবার বসবাস আকবর শাহ থানাধীন সিডিএ আবাসিক ও উত্তর কাট্টলী এলাকায়।

সিএমপির প্রেস বিজ্ঞপ্তি এবং অপহৃতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি পরিচয়ধারী ৮-১০ যুবক আকবর শাহ থানাধীন সিডিএ আবাসিক এলাকায় অবস্থিত ফ্যাসিফিক জিন্সের কর্মকর্তা আবেদিন আল মামুনের বাসায় হানা দেয়। তারা জোরপূর্বক আবেদিন আল মামুন ও তার গাড়িচালক জুয়েলকে গাড়িতে তুলে রওয়ানা দেয়। এরপর তারা পতেঙ্গা সাগরপাড় এলাকা ও পাহাড়তলী কর্নেলহাট জোন রোড এলাকাসহ পাহাড়তলী এবং আকবরশাহ বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করতে থাকে।

এ সময়ের মধ্যে ভিকটিমের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার লিলি বেগমের মোবাইলে ফোন করে অপহরণকারীরা স্বামীর মুক্তিপণ হিসাবে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় প্রাণনাশের হুমকি দেয়। স্বামীকে ফিরে পেতে ফাতেমা আক্তার অপহরণকারী দলের সদস্যদের হাতে নগদ ৫ লাখ টাকা তুলে দেন। পাশাপাশি ১৫ লাখ টাকার চেক লিখে দেন।

অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের খবর পাওয়ার পর সিএমপির কমিশনার হাসিব আজিজ যেকোনো মূল্যে জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন পুলিশকে। সিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) হুসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়ার নেতৃত্বে পাহাড়তলী জোন পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগ যৌথ অভিযান শুরু করে।

অভিযানের খবর পেয়ে অপহরণকারীরা আবেদিন আলী ও তার গাড়িচালককে অ্যাপোলো ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল এলাকায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আবেদিন আল মামুন ও তার ড্রাইভার জুয়েলকে উদ্ধার করে পুলিশ। রাতে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে চার অপহরণকারীকে নিজ নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করে।

জিজ্ঞাসাবাদের পরিপ্রেক্ষিতে আসামি নইমুল আমিন ইমনের বাসা থেকে মুক্তিপণের টাকা উদ্ধার করা হয়। অপহরণের শিকার আবেদিন আল মামুনের বাসা সিডিএ আবাসিক এলাকার প্রভাতী স্কুলের বিপরীতে।

আকবরশাহ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো কামরুজ্জামান বলেন, গ্রেফতার চারজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে অপহরণ করেছে। এই চারজন ছাড়াও অপহরণের সঙ্গে অপি, আলাউদ্দিন, আরাফাত আসিফসহ আরও বেশ কয়েকজনের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের সবার বয়স ২২ থেকে ২৫-এর মধ্যে। তারা নিজেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসাবে পরিচয় দিলেও তারা কোথায় কিভাবে আন্দোলনে ছিল বা আদৌ ছিল কিনা সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নেওয়া হচ্ছে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন