Dhaka ১২:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টানা বর্ষণে ডুবে গেছে সীতাকুণ্ডের নিম্নাঞ্চল, ভূমিধ্বসের শঙ্কা

টানা বর্ষণে ডুবে গেছে সীতাকুণ্ডের নিম্নাঞ্চল

সোমবার সন্ধ্যা থেকে টানা বর্ষণে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জনজীবনে আবারো নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। ইতিমধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চল ও উপকূলীয় এলাকার লক্ষাধিক মানুষ। তলিয়ে গেছে হাজার হাজার একর ফসলি জমি।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে সোমবার সন্ধ্যা থেকে টানা বৃষ্টিতে সীতাকুণ্ডের নিম্নাঞ্চল ও উপকূলীয় এলাকার বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। এদিকে টানা বৃষ্টির কারণে সড়কে পানি উঠে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় দুর্ভোগে পড়েছে এলাকাবাসী।

ভারী বর্ষণে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার বসতবাড়িতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। সোমবার সুলতানা মন্দির দত্তপাড়া এলাকায়

বুধবার সকালে সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, উপকূলীয় বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের আকিলপুর, বোয়ালিয়াকূল, জমাদার পাড়া, কুমিরা কাজী পাড়া, সমাদ্দার পাড়া, সোনারপাড়া, বাড়বকুণ্ড , বারৈয়াঢালা ও সৈয়দপুর ইউনিয়নের অন্তরখালী, ব্রিকফিল্ড, পিছের মাথা, শেখেরহাট, মাদেরদারী উপকূলীয় গ্রামের রাস্তাঘাট, ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

বারৈয়াঢালার টেরিয়াইলের বাসিন্দা মুহাম্মদ ফিরোজ জানান, সোমবার সন্ধ্যা থেকে থেকে শুরু হওয়া এ বৃষ্টি সন্ধ্যার দিকে থেমে থেমে হলেও রাত বাড়ার পর টানা ভোররাত পর্যন্ত হতে দেখা গেছে। এতে বিশেষ করে নিম্নাঞ্চল এলাকাগুলোর রাস্তাঘাট ও বাড়িতে হাঁটু পরিমাণ পানি হওয়ায় যান চলাচলসহ আনুষাঙ্গিক কাজ করতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে এলাকাবাসী। এতে অনেকের ঠিকমতো রান্নাবান্না করাটাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

মুরাদপুরের কৃষক মো. আলাউদ্দীন বলেন, এতদিন ধরে পানির জন্য আল্লাহ আল্লাহ করলাম। জমিতে চাষের জন্য পানি ছিল না তাই পানির জন্য প্রার্থনা করলাম। এখন তো উল্টোটা হয়ে গেল। এতদিন পানির অভাবে চাষ করতে পারিনি আর এখনতো হবেই না। কারণ সবকিছু পানিতে তলিয়ে গেছে।

ভারী বর্ষণে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার বসতবাড়িতে পানি উঠেছে। সোমবার সকালে উপজেলার সুলতানা মন্দির দত্তপাড়া এলাকায়

সীতাকুণ্ড পৌরসভার বাসিন্দারা বলেন, পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় আছে। ভারী বর্ষণের কারণে পাহাড়ি ঢলের পানি দ্রুত নিষ্কাশিত না হওয়ায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়াবিদ খোঃ হাফিজুর রহমান পাহাড়ি এলাকাগুলোতে ভূমিধ্বসের আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন পাশাপাশি পাহাড়ি এলাকা ও নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারীদের প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ বলেন, এলাকায় ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে, বরবটি, শিম, চিচিঙ্গাসহ বিভিন্ন সবজির খেত আছে। যদি বেশি দিন পানি আটকে থাকে, তাহলে সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে।

May be an image of body of water

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফখরুল ইসলাম।বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে আবারো নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। আমরা আশপাশের এলাকায় খোঁজখবর নিয়েছি। কোথাও কোনো ধরনের হতাহতের খবর এখনো পর্যন্ত পাইনি। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা কিছুটা দুর্বল হওয়ায় পানি নামতে সময় লাগছে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;
আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
লেখক তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় পোস্ট

আনোয়ারা সাংবাদিক সমিতির নতুন কমিটি গঠন, সভাপতি নাবিদ ও সম্পাদক ফরহাদুল

টানা বর্ষণে ডুবে গেছে সীতাকুণ্ডের নিম্নাঞ্চল, ভূমিধ্বসের শঙ্কা

আপডেটের সময় : ০৮:৩২:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫

সোমবার সন্ধ্যা থেকে টানা বর্ষণে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জনজীবনে আবারো নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। ইতিমধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চল ও উপকূলীয় এলাকার লক্ষাধিক মানুষ। তলিয়ে গেছে হাজার হাজার একর ফসলি জমি।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে সোমবার সন্ধ্যা থেকে টানা বৃষ্টিতে সীতাকুণ্ডের নিম্নাঞ্চল ও উপকূলীয় এলাকার বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। এদিকে টানা বৃষ্টির কারণে সড়কে পানি উঠে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় দুর্ভোগে পড়েছে এলাকাবাসী।

ভারী বর্ষণে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার বসতবাড়িতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। সোমবার সুলতানা মন্দির দত্তপাড়া এলাকায়

বুধবার সকালে সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, উপকূলীয় বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের আকিলপুর, বোয়ালিয়াকূল, জমাদার পাড়া, কুমিরা কাজী পাড়া, সমাদ্দার পাড়া, সোনারপাড়া, বাড়বকুণ্ড , বারৈয়াঢালা ও সৈয়দপুর ইউনিয়নের অন্তরখালী, ব্রিকফিল্ড, পিছের মাথা, শেখেরহাট, মাদেরদারী উপকূলীয় গ্রামের রাস্তাঘাট, ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

বারৈয়াঢালার টেরিয়াইলের বাসিন্দা মুহাম্মদ ফিরোজ জানান, সোমবার সন্ধ্যা থেকে থেকে শুরু হওয়া এ বৃষ্টি সন্ধ্যার দিকে থেমে থেমে হলেও রাত বাড়ার পর টানা ভোররাত পর্যন্ত হতে দেখা গেছে। এতে বিশেষ করে নিম্নাঞ্চল এলাকাগুলোর রাস্তাঘাট ও বাড়িতে হাঁটু পরিমাণ পানি হওয়ায় যান চলাচলসহ আনুষাঙ্গিক কাজ করতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে এলাকাবাসী। এতে অনেকের ঠিকমতো রান্নাবান্না করাটাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

মুরাদপুরের কৃষক মো. আলাউদ্দীন বলেন, এতদিন ধরে পানির জন্য আল্লাহ আল্লাহ করলাম। জমিতে চাষের জন্য পানি ছিল না তাই পানির জন্য প্রার্থনা করলাম। এখন তো উল্টোটা হয়ে গেল। এতদিন পানির অভাবে চাষ করতে পারিনি আর এখনতো হবেই না। কারণ সবকিছু পানিতে তলিয়ে গেছে।

ভারী বর্ষণে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার বসতবাড়িতে পানি উঠেছে। সোমবার সকালে উপজেলার সুলতানা মন্দির দত্তপাড়া এলাকায়

সীতাকুণ্ড পৌরসভার বাসিন্দারা বলেন, পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় আছে। ভারী বর্ষণের কারণে পাহাড়ি ঢলের পানি দ্রুত নিষ্কাশিত না হওয়ায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়াবিদ খোঃ হাফিজুর রহমান পাহাড়ি এলাকাগুলোতে ভূমিধ্বসের আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন পাশাপাশি পাহাড়ি এলাকা ও নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারীদের প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ বলেন, এলাকায় ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে, বরবটি, শিম, চিচিঙ্গাসহ বিভিন্ন সবজির খেত আছে। যদি বেশি দিন পানি আটকে থাকে, তাহলে সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে।

May be an image of body of water

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফখরুল ইসলাম।বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে আবারো নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। আমরা আশপাশের এলাকায় খোঁজখবর নিয়েছি। কোথাও কোনো ধরনের হতাহতের খবর এখনো পর্যন্ত পাইনি। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা কিছুটা দুর্বল হওয়ায় পানি নামতে সময় লাগছে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;
আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন