Dhaka ০১:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সীতাকুণ্ড জাহাজভাঙা শিল্পে ৬ মাসে ১৬ দুর্ঘটনা, চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণে মালিকপক্ষের গড়িমসি!

সীতাকুণ্ডে জাহাজভাঙা শিল্পে ৬ মাসে ১৬ দুর্ঘটনা, চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণে মালিকপক্ষের গড়িমসি!

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জাহাজভাঙা শিল্পের বিভিন্ন কারখানায় চলতি বছরের ৬ মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন) ১৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরাম এ তথ্য জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন ) জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের উদ্যোগে সীতাকুণ্ডের ইপসা এইচআরডি সেন্টারে আয়োজিত সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয় ।
জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের আহ্বায়ক তপন দত্তের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব ও বিলস-ওশ সেন্টারের কো-অর্ডিনেটর ফজলুল কবির মিন্টু সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সীতাকুণ্ড উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা লুতফুন্নেসা বেগম, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের পরিদর্শক নাহিদুল ইসলাম, জাহাজভাঙা শ্রমিক সেফটি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক দিদারুল আলম চৌধুরী, জাহাজভাঙা শ্রমিক সেফটি কমিটির সদস্য মাহাবুব চৌধুরী, বিএমএফের যুগ্ম সম্পাদক মো. আলী, বিএমএসএফ এর যুগ্ম সম্পাদক মো. ইদ্রিস ও টিইউসির সংগঠক জামাল উদ্দিন প্রমুখ।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, বিশ্বের ৯২% জাহাজভাঙা কার্যক্রম বাংলাদেশসহ চারটি দেশে পরিচালিত হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। প্রতিবছর ২০-২৫ লাখ টন রি-রোলেবল স্ক্র্যাপ সংগ্রহ করে দেশের ইস্পাত চাহিদার প্রায় ৬০% পূরণ করা হলেও শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপেক্ষিত।
তথ্যমতে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে সীতাকুণ্ডে ১৬টি দুর্ঘটনায় একজন শ্রমিক নিহত ও ১৭ জন আহত হয়েছেন। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মালিকপক্ষ চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণে গড়িমসি করছে। এস এন করপোরেশন দুর্ঘটনার পর তিন মাস বন্ধ ছিল। কিন্তু শ্রমিকদের কেউ মজুরি পায়নি, কেউ চাকরি হারিয়েছে।
সেমিনারে বক্তারা। ছবি: সময়ের আলো
সেমিনারে বক্তারা। ছবি: পোস্টকার্ড 
বক্তারা বলেন, এখনো জাহাজে বিষাক্ত অ্যাসবেস্টস পাওয়া যাচ্ছে, যা শ্রমিকদের মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলছে। শ্রমিকদের জন্য নির্মিত বিএসবিএ হাসপাতালে শ্রমিকরা পর্যাপ্ত চিকিৎসা পাচ্ছেন না। নেই কোনো ট্রমা সেন্টার/ কাজের প্রকৃত ঝুঁকি ও বাস্তবতা সম্পর্কে না জেনেই শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত না হওয়ায় জিম্মি হয়ে পড়ছেন এই শিল্পে কাজ করা শ্রমিক ।
পরিবেশদূষণ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে বক্তারা জানান, উপকূলীয় অঞ্চলে সিসা, ক্রোমিয়ামসহ ক্ষতিকর পদার্থ জমা হচ্ছে। গাছ টিকছে না, মানুষ কিভাবে টিকবে, এ প্রশ্ন ওঠে।
তারা বলেন, সিসা উদ্ভিদের জীবন চক্রকে প্রভাবিত করে। উদ্ভিদের অক্সিজেন উৎপাদনকে বাধাগ্রস্ত করে, সালোক সংশ্লেষণ প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত করে। অন্যদিকে খাবারের মাধ্যমে শরীরে যদি মাত্রাতিরিক্ত সিসা, ক্রোমিয়াম ও কীটনাশক প্রবেশ করে তাহলে মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গ সাময়িক বা স্থায়ীভাবে অকেজো হয়ে পড়তে পারে।
খালেদ / পোস্টকার্ড ;
আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
লেখক তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় পোস্ট

আনোয়ারা সাংবাদিক সমিতির নতুন কমিটি গঠন, সভাপতি নাবিদ ও সম্পাদক ফরহাদুল

সীতাকুণ্ড জাহাজভাঙা শিল্পে ৬ মাসে ১৬ দুর্ঘটনা, চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণে মালিকপক্ষের গড়িমসি!

আপডেটের সময় : ০৮:২৭:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জাহাজভাঙা শিল্পের বিভিন্ন কারখানায় চলতি বছরের ৬ মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন) ১৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরাম এ তথ্য জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন ) জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের উদ্যোগে সীতাকুণ্ডের ইপসা এইচআরডি সেন্টারে আয়োজিত সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয় ।
জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের আহ্বায়ক তপন দত্তের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব ও বিলস-ওশ সেন্টারের কো-অর্ডিনেটর ফজলুল কবির মিন্টু সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সীতাকুণ্ড উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা লুতফুন্নেসা বেগম, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের পরিদর্শক নাহিদুল ইসলাম, জাহাজভাঙা শ্রমিক সেফটি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক দিদারুল আলম চৌধুরী, জাহাজভাঙা শ্রমিক সেফটি কমিটির সদস্য মাহাবুব চৌধুরী, বিএমএফের যুগ্ম সম্পাদক মো. আলী, বিএমএসএফ এর যুগ্ম সম্পাদক মো. ইদ্রিস ও টিইউসির সংগঠক জামাল উদ্দিন প্রমুখ।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, বিশ্বের ৯২% জাহাজভাঙা কার্যক্রম বাংলাদেশসহ চারটি দেশে পরিচালিত হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। প্রতিবছর ২০-২৫ লাখ টন রি-রোলেবল স্ক্র্যাপ সংগ্রহ করে দেশের ইস্পাত চাহিদার প্রায় ৬০% পূরণ করা হলেও শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপেক্ষিত।
তথ্যমতে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে সীতাকুণ্ডে ১৬টি দুর্ঘটনায় একজন শ্রমিক নিহত ও ১৭ জন আহত হয়েছেন। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মালিকপক্ষ চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণে গড়িমসি করছে। এস এন করপোরেশন দুর্ঘটনার পর তিন মাস বন্ধ ছিল। কিন্তু শ্রমিকদের কেউ মজুরি পায়নি, কেউ চাকরি হারিয়েছে।
সেমিনারে বক্তারা। ছবি: সময়ের আলো
সেমিনারে বক্তারা। ছবি: পোস্টকার্ড 
বক্তারা বলেন, এখনো জাহাজে বিষাক্ত অ্যাসবেস্টস পাওয়া যাচ্ছে, যা শ্রমিকদের মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলছে। শ্রমিকদের জন্য নির্মিত বিএসবিএ হাসপাতালে শ্রমিকরা পর্যাপ্ত চিকিৎসা পাচ্ছেন না। নেই কোনো ট্রমা সেন্টার/ কাজের প্রকৃত ঝুঁকি ও বাস্তবতা সম্পর্কে না জেনেই শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন। নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত না হওয়ায় জিম্মি হয়ে পড়ছেন এই শিল্পে কাজ করা শ্রমিক ।
পরিবেশদূষণ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে বক্তারা জানান, উপকূলীয় অঞ্চলে সিসা, ক্রোমিয়ামসহ ক্ষতিকর পদার্থ জমা হচ্ছে। গাছ টিকছে না, মানুষ কিভাবে টিকবে, এ প্রশ্ন ওঠে।
তারা বলেন, সিসা উদ্ভিদের জীবন চক্রকে প্রভাবিত করে। উদ্ভিদের অক্সিজেন উৎপাদনকে বাধাগ্রস্ত করে, সালোক সংশ্লেষণ প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত করে। অন্যদিকে খাবারের মাধ্যমে শরীরে যদি মাত্রাতিরিক্ত সিসা, ক্রোমিয়াম ও কীটনাশক প্রবেশ করে তাহলে মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গ সাময়িক বা স্থায়ীভাবে অকেজো হয়ে পড়তে পারে।
খালেদ / পোস্টকার্ড ;
আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন