Dhaka ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্যস্ত সময় পার করছে ছাতা কারিগররা

ব্যস্ত সময় পার করছে বেড়েছে ছাতা কারিগররা

বৃষ্টি ছাতার কারিগরদের জন্য যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছে । যদিও বৃষ্টি অনেকের জন্য ভোগান্তির কারণ  । সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও বর্ষা যেন তাদের বাড়তি উপার্জনের উপলক্ষ হয়ে দেখা দেয়।
পুরো বছরের অধিকাংশ দিন ছাতা ঘরের এককোণে অবহেলায় পড়ে থাকে। কিন্তু বৃষ্টি হলেই তার খোঁজ পড়ে। তার কদর বেড়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর যখন কাক্সিক্ষত সেই ছাতার খোঁজ মেলে তখন দেখা যায় তা ব্যবহারের অনুপযুক্ত। হয়তো শিক ভাঙা, নয়তো কাপড় ছিঁড়ে গেছে, নয়তো হাতল ভাঙা। আর তখনই সেই ছাতা নিয়ে ছুটতে হয় ছাতা মেরামতের কারিগরের কাছে। কিন্তু সেখানেও ভোগান্তি। সব জায়গায় তো এসব কারিগর থাকেন না। তবে বর্ষার শুরুতে পাড়া-মহল্লায় ‘এই ছাতা ঠিক করবেন…’ বলে ডাক দিয়ে যান ছাতা মেরামতের কারিগররা। যদিও আলসেমির কারণে অনেকেই তাদের সেই ডাকে সাড়া দেন না। কিন্তু বৃষ্টির সময় বাইরে বের হতে হলেই মনে পড়ে ছাতা কারিগরদের কথা। তাই গত কয়েক দিন ধরে সেই অকেজো ছাতা সচল করতে অনেকে ছুটছেন ছাতা মেরামতের কারিগরদের কাছে। তাই তো ফুরসত পাচ্ছেন না কারিগররা। মিরপুর-১ নম্বরে, মুক্তবাংলা মার্কেটের সামনে এমন কারিগরদের দেখা মিলল গতকাল।
সেখানে ১২ মাস তালা-চাবি মেরামত করেন জনাবিশেক কারিগর। কিন্তু গত দুই দিন ধরে তারা সবাই ব্যস্ত ছাতা মেরামত করতে। স্তূপ করে রাখা আছে ছাতা। খুবই কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন সবাই। জানালেন সারা বছর তালা-চাবি মেরামতের কাজ করলেও এই বর্ষা মৌসুমে বাড়তি উপার্জনের জন্য পাশাপাশি ছাতাও মেরামত করেন।
ছাতা মেরামতের কারিগর শাওন জানান, গত কয়েক দিন ধরে বেশ কিছু ছাতা মেরামত করেছেন। অন্যান্য সময় তালা, যেকোনো ধরনের লক, ডুপ্লিকেট চাবি তৈরির কাজ করলেও বর্ষার এই সময়ে ছাতা মেরামত করেন। তার মতো এখানে সবাই একই কাজ করেন।  জানালেন, কয়েক দিনের মধ্যে গত বৃহস্পতিবারই সবচেয়ে বেশি ছাতা মেরামত করেছেন। সে দিন ২ হাজার টাকারও বেশি তার আয় হয়েছে বলে জানান।
সরেজমিন দেখা যায়, রাস্তার মাঝখানে রোড ডিভাইডারে বসে মনোযোগ দিয়ে ছাতা মেরামত করছেন সবাই। সবার সামনেই মেরামতের জন্য স্তূপ করে রেখে দেওয়া হয়েছে ছাতা। যার অধিকাংশই ফোল্ডিং ছাতা।
ছাতা মেরামতকারী আবদুস সালাম জানান, ছাতা ও কাজ ভেদে মেরামতের জন্য অর্থ নিয়ে থাকেন তারা। সাধারণ একটি ছাতার একটি শিকের জন্য ন্যূনতম ২০ টাকা নিয়ে থাকেন। আবার কোয়ালিটি ভেদে তা ১০০ টাকাও হয়ে থাকে। দুইটি ফোল্ডিং ছাতা মেরামতের জন্য নিয়ে আসেন ফরিদ মোল্লা। কারিগরকে তাড়া দিতে থাকেন দ্রুত মেরামত করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু কারিগরের সাফকথা- তিন ঘণ্টা পরে আসেন, হাতে অনেক কাজ।
ফরিদ মোল্লা জানালেন, বাসায় কোথায় যে ছাতা দুটি রেখেছিলেন খুঁজে পাচ্ছিলেন না। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ছাতার প্রয়োজন হওয়ায় পুরোনো জিনিসপত্রের ভেতর থেকে তা বের করে দেখেন একটির শিক ভাঙা, অন্যটির কাপড়ের সেলাই খুলে গেছে। তাই নিয়ে এসেছেন মেরামত করতে।
গত কয়েক দিন রাজধানীতে থেমে থেমে বৃষ্টিতে জনজীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। সে সঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দাবি আদায়ের নামে রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভের ফলে দুর্ভোগের মাত্রা চরমে পৌঁছায়। গত বৃহস্পতিবার দিনভর তুমুল বৃষ্টি যেন ভোগান্তির সব মাত্রা অতিক্রম করে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী কয়েক দিনও আকাশ মেঘলা থাকার পাশাপাশি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
খালেদ/ পোস্টকার্ড ; 
আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
লেখক তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় পোস্ট

তকিকে সভাপতি এবং রুবেলকে সা. সম্পাদক করে চট্টগ্রাম উত্তরজেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা

ব্যস্ত সময় পার করছে ছাতা কারিগররা

আপডেটের সময় : ০৩:৫১:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
বৃষ্টি ছাতার কারিগরদের জন্য যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছে । যদিও বৃষ্টি অনেকের জন্য ভোগান্তির কারণ  । সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও বর্ষা যেন তাদের বাড়তি উপার্জনের উপলক্ষ হয়ে দেখা দেয়।
পুরো বছরের অধিকাংশ দিন ছাতা ঘরের এককোণে অবহেলায় পড়ে থাকে। কিন্তু বৃষ্টি হলেই তার খোঁজ পড়ে। তার কদর বেড়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর যখন কাক্সিক্ষত সেই ছাতার খোঁজ মেলে তখন দেখা যায় তা ব্যবহারের অনুপযুক্ত। হয়তো শিক ভাঙা, নয়তো কাপড় ছিঁড়ে গেছে, নয়তো হাতল ভাঙা। আর তখনই সেই ছাতা নিয়ে ছুটতে হয় ছাতা মেরামতের কারিগরের কাছে। কিন্তু সেখানেও ভোগান্তি। সব জায়গায় তো এসব কারিগর থাকেন না। তবে বর্ষার শুরুতে পাড়া-মহল্লায় ‘এই ছাতা ঠিক করবেন…’ বলে ডাক দিয়ে যান ছাতা মেরামতের কারিগররা। যদিও আলসেমির কারণে অনেকেই তাদের সেই ডাকে সাড়া দেন না। কিন্তু বৃষ্টির সময় বাইরে বের হতে হলেই মনে পড়ে ছাতা কারিগরদের কথা। তাই গত কয়েক দিন ধরে সেই অকেজো ছাতা সচল করতে অনেকে ছুটছেন ছাতা মেরামতের কারিগরদের কাছে। তাই তো ফুরসত পাচ্ছেন না কারিগররা। মিরপুর-১ নম্বরে, মুক্তবাংলা মার্কেটের সামনে এমন কারিগরদের দেখা মিলল গতকাল।
সেখানে ১২ মাস তালা-চাবি মেরামত করেন জনাবিশেক কারিগর। কিন্তু গত দুই দিন ধরে তারা সবাই ব্যস্ত ছাতা মেরামত করতে। স্তূপ করে রাখা আছে ছাতা। খুবই কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন সবাই। জানালেন সারা বছর তালা-চাবি মেরামতের কাজ করলেও এই বর্ষা মৌসুমে বাড়তি উপার্জনের জন্য পাশাপাশি ছাতাও মেরামত করেন।
ছাতা মেরামতের কারিগর শাওন জানান, গত কয়েক দিন ধরে বেশ কিছু ছাতা মেরামত করেছেন। অন্যান্য সময় তালা, যেকোনো ধরনের লক, ডুপ্লিকেট চাবি তৈরির কাজ করলেও বর্ষার এই সময়ে ছাতা মেরামত করেন। তার মতো এখানে সবাই একই কাজ করেন।  জানালেন, কয়েক দিনের মধ্যে গত বৃহস্পতিবারই সবচেয়ে বেশি ছাতা মেরামত করেছেন। সে দিন ২ হাজার টাকারও বেশি তার আয় হয়েছে বলে জানান।
সরেজমিন দেখা যায়, রাস্তার মাঝখানে রোড ডিভাইডারে বসে মনোযোগ দিয়ে ছাতা মেরামত করছেন সবাই। সবার সামনেই মেরামতের জন্য স্তূপ করে রেখে দেওয়া হয়েছে ছাতা। যার অধিকাংশই ফোল্ডিং ছাতা।
ছাতা মেরামতকারী আবদুস সালাম জানান, ছাতা ও কাজ ভেদে মেরামতের জন্য অর্থ নিয়ে থাকেন তারা। সাধারণ একটি ছাতার একটি শিকের জন্য ন্যূনতম ২০ টাকা নিয়ে থাকেন। আবার কোয়ালিটি ভেদে তা ১০০ টাকাও হয়ে থাকে। দুইটি ফোল্ডিং ছাতা মেরামতের জন্য নিয়ে আসেন ফরিদ মোল্লা। কারিগরকে তাড়া দিতে থাকেন দ্রুত মেরামত করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু কারিগরের সাফকথা- তিন ঘণ্টা পরে আসেন, হাতে অনেক কাজ।
ফরিদ মোল্লা জানালেন, বাসায় কোথায় যে ছাতা দুটি রেখেছিলেন খুঁজে পাচ্ছিলেন না। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ছাতার প্রয়োজন হওয়ায় পুরোনো জিনিসপত্রের ভেতর থেকে তা বের করে দেখেন একটির শিক ভাঙা, অন্যটির কাপড়ের সেলাই খুলে গেছে। তাই নিয়ে এসেছেন মেরামত করতে।
গত কয়েক দিন রাজধানীতে থেমে থেমে বৃষ্টিতে জনজীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। সে সঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দাবি আদায়ের নামে রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভের ফলে দুর্ভোগের মাত্রা চরমে পৌঁছায়। গত বৃহস্পতিবার দিনভর তুমুল বৃষ্টি যেন ভোগান্তির সব মাত্রা অতিক্রম করে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী কয়েক দিনও আকাশ মেঘলা থাকার পাশাপাশি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
খালেদ/ পোস্টকার্ড ; 
আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন