Dhaka ০৭:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টানা বর্ষণে উপকূলের ৬১ স্পট ক্ষতিগ্রস্ত, ভেঙ্গে গেছে বাঁশখালী, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ের ১১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ

টানা বর্ষণে উপকূলের ৬১ স্পট ক্ষতিগ্রস্ত, ভেঙ্গে গেছে বাঁশখালী, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ের ১১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ

টানা তিন দিনের বর্ষণে উপকূলীয় এলাকার ৬১টি স্পট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ।

বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলের জলোচ্ছ্বাস নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড তাৎক্ষণিক এমন তথ্য দিলেও বেড়িবাঁধের আরও বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলীরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী স্বপন কুমার বড়ুয়া বলেন, অতিরিক্ত পানির চাপে বাঁশখালী ও সীতাকুণ্ডের কিছু এলাকায় বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। আনোয়ারায় একটি অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করেছে। বৃষ্টিপাত কমলে তালিকা প্রস্তুত করে জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সংস্কার করা হবে। কিছু কিছু এলাকায় বাঁধের উচ্চতা কম থাকায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে।

পাউবো জানায়, বাঁশখালীর ৩৪টি স্পটে ৯ দশমিক ১২০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে জলকদর খালে শেখেরখীল বাজারের উত্তর পাশে চারটি, সরকার বাজারের দক্ষিণ পাশে চারটি, সরকার বাজারের উত্তর পাশে দুটি, বাংলা বাজারের উত্তর পাশে দুটি, চাম্বল গোদার পাড়ের একটি স্পটে বাঁধে ভাঙন হয়েছে। ছনুয়া আনন্দ বাজারে রাজাখালী খালের ইন্টেরিয়র ডাইকের দুটি, ছনুয়া মধুখালীর ইন্টেরিয়র ডাইকের দুটি, ছনুয়া জলকদর খালের রেজাউল করিম ডকের ইন্টেরিয়র ডাইকের একটি, ছনুয়া ৭নং ওয়ার্ডে ছনুয়া খালে ইন্টেরিয়র ডাইকের একটি, ছনুয়া হাবাখালীর ছনুয়া খালের ইন্টেরিয়র ডাইকের দুটি, বাহারছড়া জলকদর খালের সোনাইছড়ি ব্রিজের পাশে ইন্টেরিয়র ডাইকের একটি স্পর্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাথরিয়ার জলকদর খালের বরইতলী কূপে দুটি স্পটে বাঁধ ভেঙেছে। জলকদর খালে সরল বাজারের পশ্চিম পাশে একটি স্পটে বাঁধের মাটি ক্ষয়, শীলকূপ জালিয়াখালী বাজারে ইন্টেরিয়র ডাইকের একটি স্পট, পশ্চিম মনকিচর নয়া ঘোনার ইন্টেরিয়র ডাইকের দুটি, মনকিচর দক্ষিণ পাড়ায় ইন্টেরিয়র ডাইক একটি, গণ্ডামারায় হামিদ টেকে ইন্টেরিয়র ডাইক একটি, গণ্ডামারা কাটাখালী বাজারের পূর্ব পাশে ইন্টেরিয়র ডাইক একটি, বাহারছড়ার বাঁশখালা ইন্টেরিয়র পাইকের একটি স্পট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বাঁশখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অনুপম পাল বলেন,অতিরিক্ত বর্ষণের কারণে পানির চাপ বাড়ায় বাঁশখালীর জলকদর খালের দুই পাড়ে ৩৪ স্পটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁশখালীতে সমুদ্র উপকূলে কোন জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। সবমিলিয়ে ৯ দশমিক ১২০ কিলোমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে এসব জায়গা সংস্কার করা হবে।

সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রশান্ত তালুকদার বলেন, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই মিলিয়ে ২৬টি স্পর্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ের ২৬টি স্পটে ২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে বাঁশবাড়িয়া, আকিলপুর ও ঘোড়ামরায় প্রায় ১ দশমিক ৫০ কিলোমিটার, মিরসরাইয়ের করেরহাট, ধুম ও ইছাখালীতে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আনোয়ারায় শুধু একটি স্পট ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তা তড়িঘড়ি করে সংস্কার করা হয়।

সীতাকুণ্ডে সমুদ্র উপকূলে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মিরসরাইয়ে ফেনী নদীর পানির চাপে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত স্পটের তালিকা প্রস্তুত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। জরুরি ভিত্তিতে এসব ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সংস্কার করা হবে।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে গত তিনদিন ধরে অধিক বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বেশি বৃষ্টিপাত হয়। এতে সাগর, নদী ও খালে পানির উচ্চতা বেড়ে যায়। এতে বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাস হয়। উপকূলে অতিরিক্ত পানির তোড়ে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকার লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। লোকালয়ে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করায় ফসলি জমি, লবণ মাঠ, বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বাঁশখালীর ছনুয়া এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দীন বলেন, অতিরিক্ত জলোচ্ছ্বাসে লবণ পানি প্রবেশ করে লবন মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিতে অনেকের বসতঘর ডুবে গেছে। পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষতের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
লেখক তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় পোস্ট

মিরসরাইয়ে অর্থাভাবে সানজিদার লেখাপড়া বন্ধ, দৃষ্টি প্রতিবন্ধি দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ!

টানা বর্ষণে উপকূলের ৬১ স্পট ক্ষতিগ্রস্ত, ভেঙ্গে গেছে বাঁশখালী, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ের ১১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ

আপডেটের সময় : ০৭:২৬:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

টানা তিন দিনের বর্ষণে উপকূলীয় এলাকার ৬১টি স্পট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ।

বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলের জলোচ্ছ্বাস নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড তাৎক্ষণিক এমন তথ্য দিলেও বেড়িবাঁধের আরও বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলীয় বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলীরা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী স্বপন কুমার বড়ুয়া বলেন, অতিরিক্ত পানির চাপে বাঁশখালী ও সীতাকুণ্ডের কিছু এলাকায় বাঁধের ক্ষতি হয়েছে। আনোয়ারায় একটি অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করেছে। বৃষ্টিপাত কমলে তালিকা প্রস্তুত করে জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সংস্কার করা হবে। কিছু কিছু এলাকায় বাঁধের উচ্চতা কম থাকায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে।

পাউবো জানায়, বাঁশখালীর ৩৪টি স্পটে ৯ দশমিক ১২০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে জলকদর খালে শেখেরখীল বাজারের উত্তর পাশে চারটি, সরকার বাজারের দক্ষিণ পাশে চারটি, সরকার বাজারের উত্তর পাশে দুটি, বাংলা বাজারের উত্তর পাশে দুটি, চাম্বল গোদার পাড়ের একটি স্পটে বাঁধে ভাঙন হয়েছে। ছনুয়া আনন্দ বাজারে রাজাখালী খালের ইন্টেরিয়র ডাইকের দুটি, ছনুয়া মধুখালীর ইন্টেরিয়র ডাইকের দুটি, ছনুয়া জলকদর খালের রেজাউল করিম ডকের ইন্টেরিয়র ডাইকের একটি, ছনুয়া ৭নং ওয়ার্ডে ছনুয়া খালে ইন্টেরিয়র ডাইকের একটি, ছনুয়া হাবাখালীর ছনুয়া খালের ইন্টেরিয়র ডাইকের দুটি, বাহারছড়া জলকদর খালের সোনাইছড়ি ব্রিজের পাশে ইন্টেরিয়র ডাইকের একটি স্পর্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাথরিয়ার জলকদর খালের বরইতলী কূপে দুটি স্পটে বাঁধ ভেঙেছে। জলকদর খালে সরল বাজারের পশ্চিম পাশে একটি স্পটে বাঁধের মাটি ক্ষয়, শীলকূপ জালিয়াখালী বাজারে ইন্টেরিয়র ডাইকের একটি স্পট, পশ্চিম মনকিচর নয়া ঘোনার ইন্টেরিয়র ডাইকের দুটি, মনকিচর দক্ষিণ পাড়ায় ইন্টেরিয়র ডাইক একটি, গণ্ডামারায় হামিদ টেকে ইন্টেরিয়র ডাইক একটি, গণ্ডামারা কাটাখালী বাজারের পূর্ব পাশে ইন্টেরিয়র ডাইক একটি, বাহারছড়ার বাঁশখালা ইন্টেরিয়র পাইকের একটি স্পট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বাঁশখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অনুপম পাল বলেন,অতিরিক্ত বর্ষণের কারণে পানির চাপ বাড়ায় বাঁশখালীর জলকদর খালের দুই পাড়ে ৩৪ স্পটে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁশখালীতে সমুদ্র উপকূলে কোন জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। সবমিলিয়ে ৯ দশমিক ১২০ কিলোমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে এসব জায়গা সংস্কার করা হবে।

সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রশান্ত তালুকদার বলেন, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই মিলিয়ে ২৬টি স্পর্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।সীতাকুণ্ড ও মিরসরাইয়ের ২৬টি স্পটে ২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে বাঁশবাড়িয়া, আকিলপুর ও ঘোড়ামরায় প্রায় ১ দশমিক ৫০ কিলোমিটার, মিরসরাইয়ের করেরহাট, ধুম ও ইছাখালীতে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আনোয়ারায় শুধু একটি স্পট ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তা তড়িঘড়ি করে সংস্কার করা হয়।

সীতাকুণ্ডে সমুদ্র উপকূলে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মিরসরাইয়ে ফেনী নদীর পানির চাপে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত স্পটের তালিকা প্রস্তুত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। জরুরি ভিত্তিতে এসব ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সংস্কার করা হবে।

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে গত তিনদিন ধরে অধিক বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বেশি বৃষ্টিপাত হয়। এতে সাগর, নদী ও খালে পানির উচ্চতা বেড়ে যায়। এতে বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাস হয়। উপকূলে অতিরিক্ত পানির তোড়ে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকার লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। লোকালয়ে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করায় ফসলি জমি, লবণ মাঠ, বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বাঁশখালীর ছনুয়া এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দীন বলেন, অতিরিক্ত জলোচ্ছ্বাসে লবণ পানি প্রবেশ করে লবন মাঠ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিতে অনেকের বসতঘর ডুবে গেছে। পানি নেমে যাওয়ার পর ক্ষতের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন