Dhaka ০৬:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া-গুপ্তছড়া ফেরিঘাট লণ্ডভণ্ড

সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া-গুপ্তছড়া ফেরিঘাট লণ্ডভণ্ড

নির্মাণের মাত্র কয়েক মাসেই বর্ষার শুরুতে নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট উত্তাল জোয়ারের আঘাতে ভেঙে গেছে সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়ায় নবনির্মিত ফেরিঘাট সড়ক। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন ঘাটের যাত্রী, স্থানীয় মানুষ ও দর্শনার্থীরা। নির্মাণের মাত্র কয়েক মাস না যেতেই বর্ষার শুরুতেই সড়কটি বেহাল হয়ে পড়ায় যাত্রীরা পড়েছেন দুর্ভোগে ।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া সাগর উপকূলে চলতি বছরেই ২০০ কোটি টাকায় নির্মাণ করা হয় সীতাকুণ্ড-সন্দ্বীপ ( বাঁশবাড়িয়া-গুপ্তছড়া) ফেরি ঘাট। সন্দ্বীপ উপজেলা প্রায় ৪ লাখ মানুষের বহু কাঙ্ক্ষিত ফেরিঘাট গত ২৪ মার্চ উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. শাখাওয়াত হোসেন। এতে একদিকে দ্বীপ উপজেলাটির মানুষ পেয়েছিলো ফেরি সার্ভিস আর অন্যদিকে ফেরি চলাচলের জন্য তৈরি মনোরম ঘাটটি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে থাকায় প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থীর আগমনে এলাকার অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়তে থাকে। এমনি অবস্থায় ঘাটটি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যখন দিন দিন প্রত্যাশা বাড়ছিলো ঠিক তেমনি সময়ে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে  সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে একদিনেই ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল ঘাটটি।

মাত্র একদিনেই যেন বদলে গেছে এই ঘাটটির চিত্র। বাঁশবাড়িয়ায় বেড়িবাঁধ থেকে ফেরি দাঁড়ানোর ঘাট পর্যন্ত উভয় দিকে ব্লক দিয়ে তৈরি ৮০০ মিটার সড়কের বেশিরভাগ অংশের ইট উঠে গেছে। পানিতে ধুয়ে গেছে সড়কে ব্যবহার করা বালি, মাটিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। ১নং ফেরি ঘাটের ঠিক পর থেকে দক্ষিণ অংশে লম্বাকৃতিতে ধস নেমে প্রবল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এছাড়া ২নং ঘাটের ঠিক মুখ থেকে সড়কের মাঝামাঝি ফেটে দেবে গিয়ে দক্ষিণ অংশ ভেঙে পড়েছে সমুদ্রে। এরপরের ব্লকের নিচ থেকে মাটি সম্পূর্ণরূপে সরে গিয়ে ম্যানহোল আকৃতিক বিশাল ফাঁকা গর্তে রূপ নিয়েছে। বিকালের জোয়ারের সময় প্রবল ঢেউ সেখানে বারবার আঘাত করতে থাকায় প্রতিমুহূর্তে গর্ত এবং ফাটল আরো বড় হচ্ছিল। এ কারণে পুরো সড়কটির মাঝামাঝি বড় ধরনের ধসের শংকা দেখা দিচ্ছিল। পরিদর্শনকালে এসব বিষয়ে হতাশা দেখা গেছে সন্দ্বীপের যাত্রী ও এই ঘাটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যদর্শনে আসা মানুষদের মাঝে।

এদিন বিকালে সন্দ্বীপ পৌরসভা এলাকা থেকে স্পিড বোডে ঝুঁকি নিয়ে আসা যাত্রী শহিদুল আলম বলেন, এখন আবারও  দুর্ভোগেই আছি আমরা। ফেরি তো বর্ষার আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। এখন নিম্নচাপের কারণে স্পিড বোডও পাচ্ছিলাম না। ঝুঁকি নিয়ে আমাদেরকে আসতে হয়েছে। এসে দেখছি নতুন তৈরি সড়কটি ভেঙে গেছে।

তিনি বলেন, ফেরি সার্ভিসটি অনেক দ্রুত কাজ করে চালু করা হয় সরকারের আগ্রহের কারণে। কিন্তু এই দ্রুত করতে গিয়ে কাজ ঠিকভাবে করা গেছে কিনা তা নিয়ে আগে থেকেই  আলোচনা ছিলো। এখন বর্ষা না আসতেই নিম্নচাপের জোয়ারে সড়কটি একেবারে অকেজো হয়ে গেছে।

বিষয়টা নিয়ে কথা হয়  বিআইডব্লিটিএর উপ- পরিচালক মো. কামরুজ্জামানের সাথে । তিনি বলেন, ফেরি চালু হলেও আসলে আমাদের নির্মাণকাজ এখনো সম্পূর্ণ শেষ হয়নি। এরই মধ্যে সমুদ্রে নিম্নচাপের কারণে সাগরের যে আঘাত তাতে ফেরিঘাটটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি প্রকৌশলীরা দেখছেন বলে জানান তিনি ।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
লেখক তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় পোস্ট

সীতাকুণ্ড পাহাড়ে দুর্বৃত্তের মন্দির ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া-গুপ্তছড়া ফেরিঘাট লণ্ডভণ্ড

আপডেটের সময় : ০৫:৫৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫

নির্মাণের মাত্র কয়েক মাসেই বর্ষার শুরুতে নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট উত্তাল জোয়ারের আঘাতে ভেঙে গেছে সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়ায় নবনির্মিত ফেরিঘাট সড়ক। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন ঘাটের যাত্রী, স্থানীয় মানুষ ও দর্শনার্থীরা। নির্মাণের মাত্র কয়েক মাস না যেতেই বর্ষার শুরুতেই সড়কটি বেহাল হয়ে পড়ায় যাত্রীরা পড়েছেন দুর্ভোগে ।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া সাগর উপকূলে চলতি বছরেই ২০০ কোটি টাকায় নির্মাণ করা হয় সীতাকুণ্ড-সন্দ্বীপ ( বাঁশবাড়িয়া-গুপ্তছড়া) ফেরি ঘাট। সন্দ্বীপ উপজেলা প্রায় ৪ লাখ মানুষের বহু কাঙ্ক্ষিত ফেরিঘাট গত ২৪ মার্চ উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. শাখাওয়াত হোসেন। এতে একদিকে দ্বীপ উপজেলাটির মানুষ পেয়েছিলো ফেরি সার্ভিস আর অন্যদিকে ফেরি চলাচলের জন্য তৈরি মনোরম ঘাটটি পর্যটকদের আকর্ষণ করতে থাকায় প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থীর আগমনে এলাকার অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়তে থাকে। এমনি অবস্থায় ঘাটটি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে যখন দিন দিন প্রত্যাশা বাড়ছিলো ঠিক তেমনি সময়ে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে  সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে একদিনেই ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল ঘাটটি।

মাত্র একদিনেই যেন বদলে গেছে এই ঘাটটির চিত্র। বাঁশবাড়িয়ায় বেড়িবাঁধ থেকে ফেরি দাঁড়ানোর ঘাট পর্যন্ত উভয় দিকে ব্লক দিয়ে তৈরি ৮০০ মিটার সড়কের বেশিরভাগ অংশের ইট উঠে গেছে। পানিতে ধুয়ে গেছে সড়কে ব্যবহার করা বালি, মাটিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। ১নং ফেরি ঘাটের ঠিক পর থেকে দক্ষিণ অংশে লম্বাকৃতিতে ধস নেমে প্রবল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এছাড়া ২নং ঘাটের ঠিক মুখ থেকে সড়কের মাঝামাঝি ফেটে দেবে গিয়ে দক্ষিণ অংশ ভেঙে পড়েছে সমুদ্রে। এরপরের ব্লকের নিচ থেকে মাটি সম্পূর্ণরূপে সরে গিয়ে ম্যানহোল আকৃতিক বিশাল ফাঁকা গর্তে রূপ নিয়েছে। বিকালের জোয়ারের সময় প্রবল ঢেউ সেখানে বারবার আঘাত করতে থাকায় প্রতিমুহূর্তে গর্ত এবং ফাটল আরো বড় হচ্ছিল। এ কারণে পুরো সড়কটির মাঝামাঝি বড় ধরনের ধসের শংকা দেখা দিচ্ছিল। পরিদর্শনকালে এসব বিষয়ে হতাশা দেখা গেছে সন্দ্বীপের যাত্রী ও এই ঘাটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যদর্শনে আসা মানুষদের মাঝে।

এদিন বিকালে সন্দ্বীপ পৌরসভা এলাকা থেকে স্পিড বোডে ঝুঁকি নিয়ে আসা যাত্রী শহিদুল আলম বলেন, এখন আবারও  দুর্ভোগেই আছি আমরা। ফেরি তো বর্ষার আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। এখন নিম্নচাপের কারণে স্পিড বোডও পাচ্ছিলাম না। ঝুঁকি নিয়ে আমাদেরকে আসতে হয়েছে। এসে দেখছি নতুন তৈরি সড়কটি ভেঙে গেছে।

তিনি বলেন, ফেরি সার্ভিসটি অনেক দ্রুত কাজ করে চালু করা হয় সরকারের আগ্রহের কারণে। কিন্তু এই দ্রুত করতে গিয়ে কাজ ঠিকভাবে করা গেছে কিনা তা নিয়ে আগে থেকেই  আলোচনা ছিলো। এখন বর্ষা না আসতেই নিম্নচাপের জোয়ারে সড়কটি একেবারে অকেজো হয়ে গেছে।

বিষয়টা নিয়ে কথা হয়  বিআইডব্লিটিএর উপ- পরিচালক মো. কামরুজ্জামানের সাথে । তিনি বলেন, ফেরি চালু হলেও আসলে আমাদের নির্মাণকাজ এখনো সম্পূর্ণ শেষ হয়নি। এরই মধ্যে সমুদ্রে নিম্নচাপের কারণে সাগরের যে আঘাত তাতে ফেরিঘাটটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি প্রকৌশলীরা দেখছেন বলে জানান তিনি ।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন