সীতাকুণ্ডের পাহাড়ি এলাকায় তিন দিন ধরে টানা বর্ষণে ছোট ছোট পাহাড় ধসের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। ভারী বর্ষণ আরো দুইদিন অব্যাহত থাকলে সীতাকুণ্ডে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটতে পারে। এ আশঙ্কায় সীতাকুণ্ড পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য বার বার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
তাছাড়া নাগরিকদের জানমাল রক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জঙ্গল সলিমপুরে অবস্থিত এস এম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও এস এম পাইলট প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাহাড় ধস, আশ্রয়ন কেন্দ্রে অবস্থান, খাবার পানিসহ যেকোনো সংকটে উপজেলা প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়।
সীতাকুণ্ড পাহাড়ের ছোট ছোট টিলায় ও ঢালুতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাস করে। টানা বর্ষণে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোর মাটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। দিনরাত থেমে থেমে চলা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতে দুর্বল হয়ে পড়া পাহাড়গুলোতে বড় ধরনের যে কোন ধসের আশঙ্কা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, জঙ্গল সলিমপুর, সোনাইছড়ি, কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, বারৈয়াঢালা, লতিফপুর, ছোট দারোগারহাট ও বাড়বকুণ্ড আশ্রয়ন প্রকল্প,সীতাকুণ্ড সদর এলাকায় পাহাড়ের টিলায় ও ঢালুতে বসতি স্থাপন করে বসবাস করছে লোকজন। এদের অধিকাংশই দিনমজুর, রিক্সাচালক, স্থানীয় জুটমিল-টেক্সটাইল মিলগুলোতে চাকরি এবং ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবনযাপন করেন। একইভাবে সীতাকুণ্ড পার্বত্য এলাকায় প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক আদিবাসী পরিবার বসবাস করে। প্রতিনিয়ত তারা মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাস করে আসছে।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বেশী। এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। কিন্তু কেউ বসতঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে চাইছে না।
ইউএনও ইউএনও মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন, অতি ভারী বর্ষণ হচ্ছে সীতাকুণ্ডে। যেকোনো মুহূর্তে পাহাড়ধসের আশঙ্কা আছে। এ কারণে পাহাড়ের চূড়ায় থাকা অতি ঝুঁকিপূর্ণ বসতির বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয় সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে । এ রকম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় উপজেলার সলিমপুরের জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় অন্তত ১০০ পরিবার আছে। এই পরিবারগুলোর মধ্যে অন্তত ২০টি পরিবার নিরাপদ আশ্রয় চলে গেছে। তবে বাকি পরিবারগুলো এখনো নামেনি। এলাকা থকে সরে যেতে তাদের জানানো হচ্ছে। কমিটি করে দেয়া হয়েছে। বাড়িঘর ছেড়ে আসা লোকজন সমতলে থাকা এসএম পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে অবস্থান করবেন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য যে , ২০১৭ সালের ২১ জুলাই সীতাকুণ্ডে ভারি বৃষ্টির পর পাহাড় ধসে তিন শিশুসহ অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয় । সেদিন স্থানীয় অটো রিকশা চালক রফিকুল ইসলামের স্ত্রী বিবি ফাতেমা ও তার দশ বছর বয়সী ছেলে মো. ইউনূস; রফিকের বোন রাবেয়া এবং তার দুই মেয়ে সাত বছর বয়সী সামিয়া ও দুই বছর বয়সী লামিয়া মারা যায় ।
খালেদ / পোস্টকার্ড ;