হজের উদ্দেশে যাত্রাকালে বিমানে ও বিমানবন্দরে কীভাবে নামাজ পড়তে হবে, অনেকেই জানেন না। বিমানবন্দর এলাকায় যারা মুকিম, তারা বিমানবন্দরে নামাজে কসর করবেন না। অর্থাৎ জোহর, আসর ও এশার নামাজ পূর্ণ চার রাকাত করে পড়বেন।
একইভাবে বিমান ঢাকা বিমানবন্দরে দাঁড়ানো অবস্থায় বিমানের ভেতর নামাজ পড়লেও কসর করবেন না, বরং পূর্ণ নামাজই আদায় করবেন। হ্যাঁ, বিমান আকাশে উড়ে গেলে অবশ্যই কসর করবেন।
পক্ষান্তরে যারা ঢাকা শহরে মুসাফির, তারা ঢাকা বিমানবন্দরেই কসরের মাসআলা অনুযায়ী নামাজ আদায় করবেন। অর্থাৎ জোহর, আসর ও এশার ফরজ দুই রাকাত করে পড়বেন, অবশ্য মুকিম ইমামের পেছনে পড়লে তার অনুসরণে চার রাকাতই পড়তে হবে। আর সুন্নত নামাজগুলো নফলের পর্যায়ে চলে আসবে। তবু কেউ সুন্নত পড়লে চার রাকাতের সুন্নত চার রাকাতই পড়তে হবে। এশার পর বিতর বাদ দেওয়া যাবে না, বিতর তিন রাকাতই পড়তে হবে।
অন্যান্য শহরের এয়ারপোর্ট ও স্টেশনের বিধানও একই রূপ যে, এয়ারপোর্ট বা স্টেশন যদি শহরের ভেতরে বা শহরের সঙ্গেই হয়, তবে সে স্থানের মুকিমগণ সফর শুরু করার সময় সেখানে কসর না করে পূর্ণ নামাজ আদায় করবেন। সফর থেকে ফিরে এসেও ঢাকা শহরের বাসিন্দারা ঢাকা এয়ারপোর্টে পূর্ণ নামাজ আদায় করবেন, আর অন্যান্য শহর বা গ্রামের অধিবাসীরা ঢাকা শহরে কমপক্ষে ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত না করলে ঢাকা এয়ারপোর্টে এসে কসর করবেন। তেমনিভাবে তারা অন্য কোথাও ১৫ দিন অবস্থানের নিয়ত না করলে নিজ নিজ শহর বা গ্রামে পৌঁছার পর্ব পর্যন্ত কসর করবেন। নিজ শহর বা গ্রামে পৌঁছেই তারা পূর্ণ নামাজ আদায় করবেন।
বিমানে যেহেতু নামাজ আদায় করার সুযোগ রয়েছে, তাই নামাজের সময় হলে ওজু করে অথবা ওজুর পানি না থাকলে মাটি বা পাথরে তায়াম্মুম করে কেবলার দিকে ফিরে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে নেবেন। কেবলার দিকে ফেরা ব্যতীত ও বিনা ওজরে সিটে বসে ফরজ নামাজ আদায় করা জায়েজ নেই। হ্যাঁ, যদি দাঁড়িয়ে পড়া সম্ভব না হয় অথবা দাঁড়িয়ে পড়ার অনুমতি না দেয়, তবে সিটে বসে পড়া যাবে। যদি কেউ কেবলার দিকে ফেরা ব্যতীত অথবা বিনা ওজরে বসে ফরজ নামাজ পড়ে ফেলে, তবে সময়ের ভেতর তা পুনরায় পড়া আর সময় পেরিয়ে গেলে তার কাজা করে নেওয়া ওয়াজিব।
উল্লেখ্য, মাটি ও পাথরজাতীয় জিনিস ব্যতীত অন্য কিছুতে বা প্লেনের সিটে তায়াম্মুম করলে তা সহিহ হবে না। যদি নামাজের সময়ের ভেতর ওজু করা সম্ভব না হয় এবং মাটি বা পাথর না পাওয়ার কারণে তায়াম্মুমও করা না যায়, তবে এ অবস্থায় নামাজ পড়বে না, পরে ওজু বা তায়াম্মুম করে কাজা করে নেবে। অবশ্য এ অবস্থায় নামাজির অনুকরণ করা যাবে, অর্থাৎ নামাজের নিয়ত না করে এবং কিরাতও না পড়ে নামাজির মতো শুধু রুকু সাদা ইত্যাদি করবে; অতঃপর পানি বা মাটির ব্যবস্থা হলে ওজু বা তায়াম্মুম করে নামাজ কাজা করে নিতে হবে। (ফাতাওয়া শামি : ২/২৫২-৫৩; মিরকাত : ১/৩৩৪)
খালেদ / পোস্টকার্ড ;