Dhaka ০৮:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিবন্ধনকৃত অনলাইন পোর্টাল পর্যালোচনাসহ ৭ সুপারিশ

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের এক দশকে অনলাইন সংবাদ পোর্টালগুলোর নিবন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ও সুনির্দিষ্ট নীতি না মেনে স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতায় নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে । সে কারণে অনলাইন পোর্টালগুলোর নিবন্ধন পর্যালোচনাসহ সাতটি সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন।

শনিবার দুপুর ১২টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদের নেতৃত্বে অন্য সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেন।

এতে বলা হয়েছে, লাগামছাড়া অনলাইনের বিস্তৃতি যেমন অনেক ক্ষেত্রেই হলুদ সাংবাদিকতা, অনৈতিক ব্ল্যাকমেইলিং, নাগরিক হয়রানি ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ন করছে, তেমনিভাবে সৎ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য অস্বাভাবিক প্রতিকূলতা তৈরি করছে। এর কারণ হিসেবে বিগত সরকারের অনলাইন নীতিমালা এক্ষেত্রে কার্যকর শৃক্সখলা প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতার কথা বলা হয়েছে। এজন্য নীতিমালা পর্যালোচনা করে তা বাস্তবায়ন ও কার্যোপযোগী করার সুপারিশ করা হয়েছে।

কমিশন বলছে, বিগত সরকারের অনলাইন নীতিমালার শর্তাবলি ঠিক করার দায়িত্ব প্রস্তাবিত সম্প্রচার কমিশনের ওপর অর্পিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সম্প্রচার কমিশন গঠন না করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় তাদের মর্জি অনুযায়ী নিবন্ধন দিয়েছে, যাতে রাজনৈতিক বিবেচনাই প্রাধান্য পেয়েছে।

সুপারিশগুলো হলো :

১. অনলাইন পোর্টাল নিবন্ধনের নীতিমালা হালনাগাদ করা এবং এর আলোকে নিবন্ধন প্রদানের দায়িত্ব ও ক্ষমতা যেহেতু বিগত সরকারের প্রস্তাবিত সম্প্রচার কমিশনের ওপর ন্যস্ত ছিল, সেহেতু তা গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশনের ওপর অর্পণ করা সমীচীন।

২. গত দশকে যেসব অনলাইনের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে, তা যেহেতু কোনো স্বচ্ছ ও সুনির্দিষ্ট নীতির অধীনে হয়নি বরং সরকারের স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়েছে, সেহেতু সেগুলো পর্যালোচনা প্রয়োজন। এ পর্যালোচনার দায়িত্ব স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা সমীচীন।

৩. অনলাইন পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য একাধিক নিরাপত্তা সংস্থার যে তদন্ত ব্যবস্থা রয়েছে, তার অবসান প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সংবাদপত্রের ডিক্লারেশনের জন্য বিদ্যমান পুলিশের তদন্ত ব্যবস্থাই যথেষ্ট গণ্য করা যায়।

৪. অনলাইন পোর্টালগুলো নিবন্ধন পাওয়ার পর তার বার্ষিক নবায়ন পদ্ধতি বাতিল করা হোক।

৫. অনলাইন নীতিমালায় আইপিটিভি ও অনলাইন পোর্টালে সংবাদ বুলেটিন সম্প্রচার করা যাবে না–এমন নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা উচিত।

৬. অনলাইন পোর্টালে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার আলোকে সরকারি বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৭. অনলাইন পোর্টালের জন্য ট্রেড লাইসেন্সের ফি সাধারণ ট্রেড লাইসেন্সের ফি’র কয়েক গুণ। এটি সংবাদমাধ্যমকে নিরুৎসাহিত করার নীতি। এর অবসান হওয়া উচিত।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
লেখক তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় পোস্ট

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কামারদের কাটছে নির্ঘুম রাত

নিবন্ধনকৃত অনলাইন পোর্টাল পর্যালোচনাসহ ৭ সুপারিশ

আপডেটের সময় : ০৪:০৭:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের এক দশকে অনলাইন সংবাদ পোর্টালগুলোর নিবন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ও সুনির্দিষ্ট নীতি না মেনে স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতায় নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে । সে কারণে অনলাইন পোর্টালগুলোর নিবন্ধন পর্যালোচনাসহ সাতটি সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন।

শনিবার দুপুর ১২টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদের নেতৃত্বে অন্য সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেন।

এতে বলা হয়েছে, লাগামছাড়া অনলাইনের বিস্তৃতি যেমন অনেক ক্ষেত্রেই হলুদ সাংবাদিকতা, অনৈতিক ব্ল্যাকমেইলিং, নাগরিক হয়রানি ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ন করছে, তেমনিভাবে সৎ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য অস্বাভাবিক প্রতিকূলতা তৈরি করছে। এর কারণ হিসেবে বিগত সরকারের অনলাইন নীতিমালা এক্ষেত্রে কার্যকর শৃক্সখলা প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতার কথা বলা হয়েছে। এজন্য নীতিমালা পর্যালোচনা করে তা বাস্তবায়ন ও কার্যোপযোগী করার সুপারিশ করা হয়েছে।

কমিশন বলছে, বিগত সরকারের অনলাইন নীতিমালার শর্তাবলি ঠিক করার দায়িত্ব প্রস্তাবিত সম্প্রচার কমিশনের ওপর অর্পিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সম্প্রচার কমিশন গঠন না করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় তাদের মর্জি অনুযায়ী নিবন্ধন দিয়েছে, যাতে রাজনৈতিক বিবেচনাই প্রাধান্য পেয়েছে।

সুপারিশগুলো হলো :

১. অনলাইন পোর্টাল নিবন্ধনের নীতিমালা হালনাগাদ করা এবং এর আলোকে নিবন্ধন প্রদানের দায়িত্ব ও ক্ষমতা যেহেতু বিগত সরকারের প্রস্তাবিত সম্প্রচার কমিশনের ওপর ন্যস্ত ছিল, সেহেতু তা গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশনের ওপর অর্পণ করা সমীচীন।

২. গত দশকে যেসব অনলাইনের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে, তা যেহেতু কোনো স্বচ্ছ ও সুনির্দিষ্ট নীতির অধীনে হয়নি বরং সরকারের স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়েছে, সেহেতু সেগুলো পর্যালোচনা প্রয়োজন। এ পর্যালোচনার দায়িত্ব স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা সমীচীন।

৩. অনলাইন পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য একাধিক নিরাপত্তা সংস্থার যে তদন্ত ব্যবস্থা রয়েছে, তার অবসান প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সংবাদপত্রের ডিক্লারেশনের জন্য বিদ্যমান পুলিশের তদন্ত ব্যবস্থাই যথেষ্ট গণ্য করা যায়।

৪. অনলাইন পোর্টালগুলো নিবন্ধন পাওয়ার পর তার বার্ষিক নবায়ন পদ্ধতি বাতিল করা হোক।

৫. অনলাইন নীতিমালায় আইপিটিভি ও অনলাইন পোর্টালে সংবাদ বুলেটিন সম্প্রচার করা যাবে না–এমন নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা উচিত।

৬. অনলাইন পোর্টালে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার আলোকে সরকারি বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করতে হবে।

৭. অনলাইন পোর্টালের জন্য ট্রেড লাইসেন্সের ফি সাধারণ ট্রেড লাইসেন্সের ফি’র কয়েক গুণ। এটি সংবাদমাধ্যমকে নিরুৎসাহিত করার নীতি। এর অবসান হওয়া উচিত।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন