ফেরি ‘কপোতাক্ষ’’ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে প্রথমবারের মতো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সন্দ্বীপে গিয়ে স্বাক্ষী হয়ে থাকলো। বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুরে এ রুটে পরীক্ষামূলকভাবে ফেরি চালু করা হয়। আগামী ২৪ মার্চ এ রুটে ফেরি চলাচল আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি উপদেষ্টা সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপের ঘাট নির্মাণের কাজ পরিদর্শন করেন এবং ফেরির যাত্রীদের সরাসরি ঢাকা যাওয়ার জন্য বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালুর প্রক্রিয়া শুরু করেন তিনি। পরবর্তিতে ফেরী ঘাটের কাজ পরিদর্শনে এসে বিআইডব্লিউটিএর চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান জানান, পরীক্ষামূলক ফেরি চলাচল ১৯ মার্চ শুরু হবে এবং সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী বুধবার সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া থেকে সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটের উদ্দেশ্যে দুপুর ২টার দিকে পরীক্ষামূলকভাবে ফেরি চলাচল শুরু করে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিআইডব্লিউটিএ’র চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান। তিনি ২১ সদস্যের একটি দল নিয়ে বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাট থেকে প্রথমবার ‘কপোতাক্ষ’ নামক ফেরি নিয়ে সন্দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। একটি গাড়ি নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ফেরি ‘কপোতাক্ষে’ চড়ে সন্দ্বীপে যান । সমুদ্র পাড়ি দিতে ফেরিটি ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট সময় নেয় ।
এ প্রসঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ এর উপ-পরিচালক (চট্টগ্রাম) মো. কামরুজ্জামান বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের নির্দেশনায় দ্রুততার সঙ্গে ফেরি সার্ভিস চালুর যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ লক্ষে ফেরিঘাট নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলে। সন্দ্বীপ থেকে যাত্রীরা ফেরিতে সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ঘাট হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করতে পারবেন ।
তিনি বলেন, ১৯ মার্চ পরীক্ষামূলক ফেরি চলাচল শুরু হলো এবং আমরা আশা করছি আগামী ২৪ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরি চলাচল উদ্বোধন করা হবে।
দীর্ঘদিন পর নিজেদের স্বপ্ন পূরণের খুব কাছে এসে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন সন্দ্বীপের মানুষ। পরীক্ষামূলক যাত্রায় ফেরির এক যাত্রী মোহান্বনদ হাসান মাসুমের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, সন্দ্বীপ নৌপথে গুপ্তছড়া ঘাট ফেরি চালু করা ছিল আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। যাক অবশেষে আমাদেরে সেই দাবী পূরণ হয়েছে। আমরা আজ অনেক খুশি । আমরা সন্দ্বীপবাসী কৃতজ্ঞ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের প্রতি । তিনি সন্দ্বীপবাসীর দুঃখ-দুর্দশার কথা শুনে ফেরি চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করে সন্দ্বীপের লাখ লাখ মানুষের দুঃখ গোছালেন ।
পরীক্ষামূলক যাত্রায় ফেরি ইনচার্জ মাস্টার মো. শামসুল আলম সাইফুল বলেন, ফেরি না থাকায় সন্দ্বীপের মানুষের করুণ চিত্র আমি কাছ থেকেই দেখেছি। সাগরে যখন ভাটা পড়ে ঠিক তখন স্পিডবোট ঘাটের কাছে যেতে পারে না। কাঁদা মাটি মারিয়ে পানিতে নেমে ভিজে আসতে হতো।
সন্দ্বীপের মানুষের জন্য আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। উপদেষ্টা, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়- যার আন্তরিক প্রচেষ্টায় সন্দ্বীপের মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। তার প্রতি এ অঞ্চলের মানুষের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
আপাতত একমাত্র ফেরি ‘কপোতাক্ষ’ চলাচল করলেও এই রুটে চলাচলের জন্য আরও একটি ফেরি নির্মাণাধীন রয়েছে।