Dhaka ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সরবরাহ বন্ধ!

সয়াবিন তেল নিয়ে কারসাজি করে কৃত্রিম সংকটের দায়ে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীকে জরিমানা

বৃহত্তম পাইকারি ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জের কয়েকটি দোকানে গোপনে লোক পাঠায় ভোক্তা অধিদপ্তর। সয়াবিন তেল আছে কিনা—প্রশ্ন করতেই জবাব আসে, ‘নেই’। পরে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা যেতেই ফাঁস হয় গোমর। কার্টনে কার্টনে তেল থাকা সত্ত্বেও কৃত্রিম সংকট তৈরি করছিলেন অসাধু কিছু ব্যবসায়ী। হাতেনাতে প্রমাণ পেয়ে দুই পরিবেশক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

তবে পরিবেশকদের দাবি, দোকানে যেসব তেলের বোতল অধিদপ্তর পেয়েছে সেগুলো আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। বিক্রিত পণ্য স্টকে দেখান না তারা। তবু তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চালানো এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক ফয়েজ উল্লাহ।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য ছিল, বোতলজাত তেল বাজারে পাওয়া যাচ্ছিল না। কোম্পানিগুলো তেল সরবরাহ করছে ডিলারের কাছে। কিন্তু ডিলাররা যথাযথভাবে দোকানগুলোতে তেল সরবরাহ করছে না। থাকার পরেও তারা বলছে তেল নেই। আমরা দুটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রথমে মেসার্স আল আমিন স্টোর নামে একটি প্রতিষ্ঠানে আমরা আমাদের একজনকে তেল আছে কিনা খোঁজ নিতে পাঠাই। তারা তখন বলেছে তেল নেই। পরে ওই প্রতিষ্ঠানে আমরা গিয়ে তেল পেয়েছি। তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’

কারচুপির প্রমাণ পেয়েছেন জানিয়ে ফয়েজ উল্ল্যাহ বলেন, ‘সাতকানিয়া স্টোর নামে পুষ্টি তেলের এক ডিলারের কাছে গিয়ে আমরা জিজ্ঞেসে করেছি তেল আছে কিনা। তারা আমাদের জানায় যে, তাদের কাছে কাছে তেল নেই। কোম্পানির কাছ থেকে জানতে পেরেছি, ১৩শ’ কার্টুন, যা প্রায় ২৪ হাজার লিটার তেল উনাদের সরবরাহ করেছে। পরে তিনি স্বীকার করেন তাকে ৬শ’ কার্টুন তেল সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনি ৪০ কার্টুন তেল সরবরাহের হিসেব আমাদের দিতে পেরেছেন। বাকিগুলোর হিসেব দিতে পারেননি। তার মানে তিনি এখানে কারচুপি করেছেন। তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাতকানিয়া স্টোরের মালিক মো. আবছার বলেন, ‘আমি তো তেল বেশি দামে বিক্রি করিনি। উনারা কাগজপত্রে অনিয়ম পেয়েছে। তাই জরিমানা করেছে। কোম্পানির কাছে চাওয়া ১৩শ’ কার্টন তেল থেকে আমি পেয়েছি ৬শ’ কার্টন। বাকিগুলো আসবে আরও পরে। যেগুলো পেয়েছি সেগুলো বাজারে সরবরাহ করে দিয়েছি। কিন্তু ডকুমেন্ট পাইনি এখনও। এখানে কোনো অনিয়ম আমি করিনি। স্যাররা তো ডকুমেন্ট আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবেন না।’

বাজারে তেলের সংকট কেন—জানতে চাইলে আল আমিন স্টোরের মালিক মো. শাহজালাল বলেন, এগুলো তো কোম্পানি বলতে পারবে। আমার কাছে আসলে আমি বিক্রি করি। না আসলে বিক্রি বন্ধ রাখি। চার-পাঁচদিন হচ্ছে কোম্পানি মাল দিচ্ছে না। তাই আমার বিক্রিও বন্ধ। ওরা বলছে ওদের পাইপলাইনে এখন তেল আসছে। সেগুলো প্রসেসিং হবে, সময় লাগবে। আগামী ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারির দিকে তারা আমাদের মাল দেবে বলে জানিয়েছে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
ট্যাগ:
লেখক তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় পোস্ট

তেলের ডিপোতে পড়ে সীতাকুণ্ডে একজনের মৃত্যু, দগ্ধ ৩

সরবরাহ বন্ধ!

সয়াবিন তেল নিয়ে কারসাজি করে কৃত্রিম সংকটের দায়ে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীকে জরিমানা

আপডেটের সময় : ০৭:৫৮:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বৃহত্তম পাইকারি ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জের কয়েকটি দোকানে গোপনে লোক পাঠায় ভোক্তা অধিদপ্তর। সয়াবিন তেল আছে কিনা—প্রশ্ন করতেই জবাব আসে, ‘নেই’। পরে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা যেতেই ফাঁস হয় গোমর। কার্টনে কার্টনে তেল থাকা সত্ত্বেও কৃত্রিম সংকট তৈরি করছিলেন অসাধু কিছু ব্যবসায়ী। হাতেনাতে প্রমাণ পেয়ে দুই পরিবেশক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

তবে পরিবেশকদের দাবি, দোকানে যেসব তেলের বোতল অধিদপ্তর পেয়েছে সেগুলো আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। বিক্রিত পণ্য স্টকে দেখান না তারা। তবু তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চালানো এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক ফয়েজ উল্লাহ।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য ছিল, বোতলজাত তেল বাজারে পাওয়া যাচ্ছিল না। কোম্পানিগুলো তেল সরবরাহ করছে ডিলারের কাছে। কিন্তু ডিলাররা যথাযথভাবে দোকানগুলোতে তেল সরবরাহ করছে না। থাকার পরেও তারা বলছে তেল নেই। আমরা দুটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রথমে মেসার্স আল আমিন স্টোর নামে একটি প্রতিষ্ঠানে আমরা আমাদের একজনকে তেল আছে কিনা খোঁজ নিতে পাঠাই। তারা তখন বলেছে তেল নেই। পরে ওই প্রতিষ্ঠানে আমরা গিয়ে তেল পেয়েছি। তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’

কারচুপির প্রমাণ পেয়েছেন জানিয়ে ফয়েজ উল্ল্যাহ বলেন, ‘সাতকানিয়া স্টোর নামে পুষ্টি তেলের এক ডিলারের কাছে গিয়ে আমরা জিজ্ঞেসে করেছি তেল আছে কিনা। তারা আমাদের জানায় যে, তাদের কাছে কাছে তেল নেই। কোম্পানির কাছ থেকে জানতে পেরেছি, ১৩শ’ কার্টুন, যা প্রায় ২৪ হাজার লিটার তেল উনাদের সরবরাহ করেছে। পরে তিনি স্বীকার করেন তাকে ৬শ’ কার্টুন তেল সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনি ৪০ কার্টুন তেল সরবরাহের হিসেব আমাদের দিতে পেরেছেন। বাকিগুলোর হিসেব দিতে পারেননি। তার মানে তিনি এখানে কারচুপি করেছেন। তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাতকানিয়া স্টোরের মালিক মো. আবছার বলেন, ‘আমি তো তেল বেশি দামে বিক্রি করিনি। উনারা কাগজপত্রে অনিয়ম পেয়েছে। তাই জরিমানা করেছে। কোম্পানির কাছে চাওয়া ১৩শ’ কার্টন তেল থেকে আমি পেয়েছি ৬শ’ কার্টন। বাকিগুলো আসবে আরও পরে। যেগুলো পেয়েছি সেগুলো বাজারে সরবরাহ করে দিয়েছি। কিন্তু ডকুমেন্ট পাইনি এখনও। এখানে কোনো অনিয়ম আমি করিনি। স্যাররা তো ডকুমেন্ট আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারবেন না।’

বাজারে তেলের সংকট কেন—জানতে চাইলে আল আমিন স্টোরের মালিক মো. শাহজালাল বলেন, এগুলো তো কোম্পানি বলতে পারবে। আমার কাছে আসলে আমি বিক্রি করি। না আসলে বিক্রি বন্ধ রাখি। চার-পাঁচদিন হচ্ছে কোম্পানি মাল দিচ্ছে না। তাই আমার বিক্রিও বন্ধ। ওরা বলছে ওদের পাইপলাইনে এখন তেল আসছে। সেগুলো প্রসেসিং হবে, সময় লাগবে। আগামী ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারির দিকে তারা আমাদের মাল দেবে বলে জানিয়েছে।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন