Dhaka ০২:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যথাযোগ্য মর্যাদায় সীতাকুণ্ড হযরত ইমামে আজম (রা.) জামে মসজিদে পবিত্র শবে মিরাজ পালন

পবিত্র লাইলাতুল মিরাজ উপলক্ষ্যে হযরত ইমামে আজম রা. জামে মসজিদ ফকিরহাট, সীতাকুন্ড , চট্টগ্রামে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের ইবাদত-বন্দেগির মুহুর্ত

পবিত্র লাইলাতুল মিরাজ বা শবে মিরাজ যথাযোগ্য মর্যাদায় সীতাকুণ্ড সলিমপুর ফকিরহাটের পশ্চিম পাড়াস্থ হযরত ইমামে আজম (রা.) জামে মসজিদে গতকাল সোমবার পালিত হয়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে এ রাত কাটিয়ে দেন। তাছাড়া বাদ এশা হযরত ইমামে আজম (রা.) জামে মসজিদে আলোচনা সভা, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় পবিত্র লাইলাতুল মিরাজ এর উপর আলোচনায় অংশ নেন ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক আবু মুহাম্মদ মুশফিক ইলাহী । এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন হাফেজ মাওলানা মামুনুর রশিদ ।

এ সময় দীর্ঘ আলোচনায় আবু মুহাম্মদ মুশফিক ইলাহী বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টিকারী যুগান্তময়ী ঘটনা ‘মিরাজ’। এর আভিধানিক অর্থ সিঁড়ি, সোপান, ঊর্ধ্বগমন, বাহন, আরোহণ, উত্থান প্রভৃতি। অন্য অর্থে ঊর্ধ্বলোকে আরোহণ বা মহামিলন, যা রাসুলুল্লাহ (দ.)-এর বিশেষ মুজিজা এবং আল্লাহর কুদরতের মহানিদর্শন। নবীকুলের মধ্যে একমাত্র হজরত মুহাম্মদ (দ.)-কে এই অনন্য মর্যাদা প্রদান করে সম্মানিত করা হয়।

যাতে তিনি মহান সৃষ্টিকর্তার ঊর্ধ্বজগতের নিদর্শনাবলি পরিদর্শন ও তাঁর নিয়ামতরাজি স্বচক্ষে অবলোকন করে উম্মতকে তা সবিস্তারে বর্ণনা করতে পারেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, ‘পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে রজনীযোগে ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায়, যার পরিবেশ আমি বরকতময় করেছিলাম, তাঁকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য, নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ১)

সহিহ হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, রাসুলুল্লাহ (দ.)-এর ৫০ বছর বয়সে নবুয়তের দশম বর্ষে রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রজনীতে মিরাজের বিস্ময়কর ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। ওই রাতে তিনি কাবা শরিফের চত্বরে (হাতিমে) অথবা কারও মতে, উম্মে হানির গৃহে শায়িত ও নিদ্রিত ছিলেন।

এমন সময় ফেরেশতা জিব্রাইল (আ.) সেখানে এসে তাঁকে ঘুম থেকে জাগালেন, অজু করালেন, সিনা চাক করলেন এবং ‘বোরাকে’ চড়িয়ে মুহূর্তের মধ্যে বায়তুল মোকাদ্দাস পৌঁছালেন। সেখানে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (দ.) ‘ইমামুল মুরসালিন’ হিসেবে সব নবী-রাসুলের ইমামতিতে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করলেন।

এরপর তিনি আবার বোরাকে চড়ে সপ্তাকাশ পরিভ্রমণ করলেন এবং সেখান থেকে সপ্তম আকাশের ওপর ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ নামক স্থানে পৌঁছালেন, যেখানে ফেরেশতা জিব্রাইল (আ.) থেমে গেলেন এবং নবী করিম (দ.) একাকী ‘রফরফে’ চড়ে ‘বায়তুল মামুরে’ উপনীত হলেন।

এরপর নবী করিম (সা.) রফরফে চড়ে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হন। তিনি আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করলেন। সেখানে তিনি প্রভুর সঙ্গে একান্ত আলাপে মিলিত হন। আশেক ও মাশুকের মধ্যে সংলাপ ও কথোপকথন হলো। আল্লাহ তাআলা তাঁকে সমগ্র সৃষ্টিজগতের বিশেষ রহস্য বুঝিয়ে দিলেন এবং জান্নাত-জাহান্নাম পরিদর্শন করালেন, যাতে এ সম্বন্ধে কথা বলতে তাঁর মনে কোনো সন্দেহের উদ্রেক না হয়। সবশেষে তিনি সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের বিধান নিয়ে আবার ঐশীবাহনে আরোহণ করে মুহূর্তের মধ্যে ধরণির বুকে ফিরে এলেন।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
ট্যাগ:
লেখক তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় পোস্ট

সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের পরিচয় প্রকাশ

যথাযোগ্য মর্যাদায় সীতাকুণ্ড হযরত ইমামে আজম (রা.) জামে মসজিদে পবিত্র শবে মিরাজ পালন

আপডেটের সময় : ১০:৩৮:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

পবিত্র লাইলাতুল মিরাজ বা শবে মিরাজ যথাযোগ্য মর্যাদায় সীতাকুণ্ড সলিমপুর ফকিরহাটের পশ্চিম পাড়াস্থ হযরত ইমামে আজম (রা.) জামে মসজিদে গতকাল সোমবার পালিত হয়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে এ রাত কাটিয়ে দেন। তাছাড়া বাদ এশা হযরত ইমামে আজম (রা.) জামে মসজিদে আলোচনা সভা, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় পবিত্র লাইলাতুল মিরাজ এর উপর আলোচনায় অংশ নেন ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক আবু মুহাম্মদ মুশফিক ইলাহী । এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন হাফেজ মাওলানা মামুনুর রশিদ ।

এ সময় দীর্ঘ আলোচনায় আবু মুহাম্মদ মুশফিক ইলাহী বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টিকারী যুগান্তময়ী ঘটনা ‘মিরাজ’। এর আভিধানিক অর্থ সিঁড়ি, সোপান, ঊর্ধ্বগমন, বাহন, আরোহণ, উত্থান প্রভৃতি। অন্য অর্থে ঊর্ধ্বলোকে আরোহণ বা মহামিলন, যা রাসুলুল্লাহ (দ.)-এর বিশেষ মুজিজা এবং আল্লাহর কুদরতের মহানিদর্শন। নবীকুলের মধ্যে একমাত্র হজরত মুহাম্মদ (দ.)-কে এই অনন্য মর্যাদা প্রদান করে সম্মানিত করা হয়।

যাতে তিনি মহান সৃষ্টিকর্তার ঊর্ধ্বজগতের নিদর্শনাবলি পরিদর্শন ও তাঁর নিয়ামতরাজি স্বচক্ষে অবলোকন করে উম্মতকে তা সবিস্তারে বর্ণনা করতে পারেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, ‘পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে রজনীযোগে ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায়, যার পরিবেশ আমি বরকতময় করেছিলাম, তাঁকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য, নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ১)

সহিহ হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, রাসুলুল্লাহ (দ.)-এর ৫০ বছর বয়সে নবুয়তের দশম বর্ষে রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রজনীতে মিরাজের বিস্ময়কর ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। ওই রাতে তিনি কাবা শরিফের চত্বরে (হাতিমে) অথবা কারও মতে, উম্মে হানির গৃহে শায়িত ও নিদ্রিত ছিলেন।

এমন সময় ফেরেশতা জিব্রাইল (আ.) সেখানে এসে তাঁকে ঘুম থেকে জাগালেন, অজু করালেন, সিনা চাক করলেন এবং ‘বোরাকে’ চড়িয়ে মুহূর্তের মধ্যে বায়তুল মোকাদ্দাস পৌঁছালেন। সেখানে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (দ.) ‘ইমামুল মুরসালিন’ হিসেবে সব নবী-রাসুলের ইমামতিতে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করলেন।

এরপর তিনি আবার বোরাকে চড়ে সপ্তাকাশ পরিভ্রমণ করলেন এবং সেখান থেকে সপ্তম আকাশের ওপর ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ নামক স্থানে পৌঁছালেন, যেখানে ফেরেশতা জিব্রাইল (আ.) থেমে গেলেন এবং নবী করিম (দ.) একাকী ‘রফরফে’ চড়ে ‘বায়তুল মামুরে’ উপনীত হলেন।

এরপর নবী করিম (সা.) রফরফে চড়ে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হন। তিনি আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করলেন। সেখানে তিনি প্রভুর সঙ্গে একান্ত আলাপে মিলিত হন। আশেক ও মাশুকের মধ্যে সংলাপ ও কথোপকথন হলো। আল্লাহ তাআলা তাঁকে সমগ্র সৃষ্টিজগতের বিশেষ রহস্য বুঝিয়ে দিলেন এবং জান্নাত-জাহান্নাম পরিদর্শন করালেন, যাতে এ সম্বন্ধে কথা বলতে তাঁর মনে কোনো সন্দেহের উদ্রেক না হয়। সবশেষে তিনি সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের বিধান নিয়ে আবার ঐশীবাহনে আরোহণ করে মুহূর্তের মধ্যে ধরণির বুকে ফিরে এলেন।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন