Dhaka ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তাশাহুদ কী ও কখন পাঠ করতে হয়, গুরুত্ব ও ফজিলত

রমজানের শেষ দশ দিন কাটুক ইবাদতে

তাশাহুদ এক মহামূল্যবান দোয়া। এটি যেকোনো সময় দোয়া হিসেবে পড়া যায়। এটি সেই পবিত্র ঘোষণা, যেখানে মুসলমান তার বিশ্বাসের সারমর্ম প্রকাশ করে। এই দোয়াটি নামাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নামাজের বৈঠকে পড়া ওয়াজিব বা আবশ্যক। এর গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক।

কখন পড়তে হয় তাশাহুদ
তাশাহুদ মূলত যেকোনো নামাজের দ্বিতীয় ও শেষ রাকাতে বসে পড়তে হয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন তাশাহুদে বসতেন, তখন তাঁর বাম পা বিছিয়ে রাখতেন এবং ডান পা খাড়া রাখতেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ৪৯৮)। এই বসার পদ্ধতি ‘তাওয়াররুক’ নামে পরিচিত। তাশাহুদ পাঠকালে ডান হাতের তর্জনী আঙুল উত্তোলন করে একত্ববাদের ইশারা করা সুন্নত।

তাশাহুদের গুরুত্ব ও মর্যাদা
ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমার হাত তাঁর দুই হাতের মাঝে রেখে আমাকে তাশাহুদ শেখালেন, যেভাবে তিনি কোরআনের সুরা শেখাতেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৮৩১)

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ তাশাহুদে বসে, তখন সে যেন বলে ‘আত্তাহিইয়াতু লিল্লাহি…।’ (মুসলিম, হাদিস: ৪০২)
এই মহামূল্যবান দোয়ার প্রতিটি শব্দে আল্লাহর প্রতি সম্মান, ভালোবাসা ও বিনয়ের প্রকাশ রয়েছে। ইমাম নববি (রহ.) বলেন, তাশাহুদে মানুষ আল্লাহর সামনে সর্বোচ্চ বিনয়ের সঙ্গে উপস্থিত হয়, যেখানে সে তার সকল সম্মান, রাজত্ব ও পবিত্রতা একমাত্র আল্লাহর জন্য নিবেদন করে।

তাশাহুদের তাৎপর্য
তাশাহুদের মাধ্যমে মুসলমান বান্দা আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ও একত্ববাদের পূর্ণ স্বীকৃতি দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর রিসালাতের ওপর অটল বিশ্বাস ব্যক্ত করে ও তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। সমগ্র মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে। আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) তাশাহুদ এমন গুরুত্বের সঙ্গে শেখাতেন যেমনভাবে কোরআন শেখাতেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৮৩৫)

তাশাহুদের বাংলা উচ্চারণ
আততাহিইয়াতু লিল্লাহি, ওয়াস সালা ওয়াতু, ওয়াত তাইয়িবাতু, আস সালামু আলাইকা, আই ইউহান নাবিইয়ু, ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন। আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

তাশাহুদের বাংলা অর্থ
শ্রদ্ধা আল্লাহর জন্য, পবিত্রতা আল্লাহর জন্য, ভালো কাজ ও নামাজ (সব কিছু) আল্লাহর জন্য। হে নবি, আপনার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও বরকত বর্ষিত হোক। শান্তি আমাদের ওপর এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ বা উপাস্য নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল।

তাছাড়া তাশাহুদ অর্থ সাক্ষ্য দেওয়া। আততাহিয়াতু নামেই এটি পরিচিত। নামাজে এই বিশেষ দোয়াটির মাধ্যমে একজন বান্দা তার প্রভুর কাছে সমর্পিত হয়ে পরম শ্রদ্ধা ও ভক্তি নিবেদন করেন। এই দোয়ার মাধ্যমে নামাজি আল্লাহর প্রশংসা করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করেন। মুসলিম উম্মাহর মঙ্গল কামনা করেন।

তাশাহুদের ইতিহাস
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে জানা যায়, সাহাবিরা প্রথম দিকে নামাজে জিবরাইল (আ.) ও মিকাইল (আ.)-সহ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে সালাম পেশ করতেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের শিক্ষা দিয়ে বললেন, ‘আল্লাহতায়ালা নিজেই তো সালাম। তাই যখন তোমরা কেউ নামাজ আদায় করবে, তখন সে যেন তাশাহুদ পাঠ করে। কেননা, যখন তোমরা এই দোয়া পড়বে, তখন তা আসমান ও জমিনে অবস্থানকারী আল্লাহর সব নেক বান্দার কাছে পৌঁছে যাবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৪০২; মুসলিম, হাদিস: ৬২৬৫)

নামাজে কখন তাশাহুদ পড়তে হয়
প্রতি দুই রাকাত শেষে বৈঠকে বসে আততাহিয়াতু পাঠ করা ওয়াজিব বা আবশ্যক। এই মহামূল্যবান দোয়াটি পাঠকালে প্রতিটি শব্দ ও বাক্যের গভীর অর্থ হৃদয়ে ধারণ করার চেষ্টা করা উচিত। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, ‘যখন তোমরা দুই রাকাতের পর বসবে, তখন ‘আততাহিয়াতু’ পাঠ করো। এরপর তোমাদের যার যে দোয়া পছন্দ, তা দিয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করো।’ (নাসায়ি, হাদিস: ১১১৪)

তাশাহুদ শিখিয়েছেন নবিজি (সা.)
নবিজি (সা.) কতটা যত্ন নিয়ে তাশাহুদ শিক্ষা দিয়েছেন, তা আমরা জানতে পারি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর বর্ণনা থেকে। তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমার হাত তাঁর দুই হাতের মাঝে রেখে আমাকে তাশাহুদ শিখিয়েছেন, ঠিক যেভাবে তিনি কোরআনের সুরা শেখাতেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৫৯১০)

তাশাহুদ শুধু একটি দোয়া নয়, এটি আল্লাহর সঙ্গে বান্দার একটি অনন্য সংলাপ। এর মধ্য দিয়ে আমরা সাক্ষ্য দিই- সকল সম্মান, ইবাদত ও পবিত্রতা একমাত্র আল্লাহর জন্য। আমরা স্বীকার করি যে, মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল। আর এই স্বীকৃতির মধ্য দিয়েই আমরা সমগ্র মুসলিম উম্মাহর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করি।

তাশাহুদ

التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

তাশাহুদের বাংলা উচ্চারণ
আততা হিইয়াতু লিল্লাহি, ওয়াস সালা ওয়াতু, ওয়াত তাইয়িবাতু, আস সালামু আলাইকা, আই ইউহান নাবিইয়ু, ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন। আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

তাশাহুদের বাংলা অর্থ
শ্রদ্ধা আল্লাহর জন্য, পবিত্রতা আল্লাহর জন্য, ভালো কাজ ও নামাজ (সব কিছু) আল্লাহর জন্য। হে নবি, আপনার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও বরকত বর্ষিত হোক। শান্তি আমাদের ওপর এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ বা উপাস্য নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
ট্যাগ:
লেখক তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় পোস্ট

তেলের ডিপোতে পড়ে সীতাকুণ্ডে একজনের মৃত্যু, দগ্ধ ৩

তাশাহুদ কী ও কখন পাঠ করতে হয়, গুরুত্ব ও ফজিলত

আপডেটের সময় : ১০:৫৪:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

তাশাহুদ এক মহামূল্যবান দোয়া। এটি যেকোনো সময় দোয়া হিসেবে পড়া যায়। এটি সেই পবিত্র ঘোষণা, যেখানে মুসলমান তার বিশ্বাসের সারমর্ম প্রকাশ করে। এই দোয়াটি নামাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নামাজের বৈঠকে পড়া ওয়াজিব বা আবশ্যক। এর গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক।

কখন পড়তে হয় তাশাহুদ
তাশাহুদ মূলত যেকোনো নামাজের দ্বিতীয় ও শেষ রাকাতে বসে পড়তে হয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন তাশাহুদে বসতেন, তখন তাঁর বাম পা বিছিয়ে রাখতেন এবং ডান পা খাড়া রাখতেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ৪৯৮)। এই বসার পদ্ধতি ‘তাওয়াররুক’ নামে পরিচিত। তাশাহুদ পাঠকালে ডান হাতের তর্জনী আঙুল উত্তোলন করে একত্ববাদের ইশারা করা সুন্নত।

তাশাহুদের গুরুত্ব ও মর্যাদা
ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমার হাত তাঁর দুই হাতের মাঝে রেখে আমাকে তাশাহুদ শেখালেন, যেভাবে তিনি কোরআনের সুরা শেখাতেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৮৩১)

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ তাশাহুদে বসে, তখন সে যেন বলে ‘আত্তাহিইয়াতু লিল্লাহি…।’ (মুসলিম, হাদিস: ৪০২)
এই মহামূল্যবান দোয়ার প্রতিটি শব্দে আল্লাহর প্রতি সম্মান, ভালোবাসা ও বিনয়ের প্রকাশ রয়েছে। ইমাম নববি (রহ.) বলেন, তাশাহুদে মানুষ আল্লাহর সামনে সর্বোচ্চ বিনয়ের সঙ্গে উপস্থিত হয়, যেখানে সে তার সকল সম্মান, রাজত্ব ও পবিত্রতা একমাত্র আল্লাহর জন্য নিবেদন করে।

তাশাহুদের তাৎপর্য
তাশাহুদের মাধ্যমে মুসলমান বান্দা আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ও একত্ববাদের পূর্ণ স্বীকৃতি দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর রিসালাতের ওপর অটল বিশ্বাস ব্যক্ত করে ও তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। সমগ্র মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে। আবদুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) তাশাহুদ এমন গুরুত্বের সঙ্গে শেখাতেন যেমনভাবে কোরআন শেখাতেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৮৩৫)

তাশাহুদের বাংলা উচ্চারণ
আততাহিইয়াতু লিল্লাহি, ওয়াস সালা ওয়াতু, ওয়াত তাইয়িবাতু, আস সালামু আলাইকা, আই ইউহান নাবিইয়ু, ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন। আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

তাশাহুদের বাংলা অর্থ
শ্রদ্ধা আল্লাহর জন্য, পবিত্রতা আল্লাহর জন্য, ভালো কাজ ও নামাজ (সব কিছু) আল্লাহর জন্য। হে নবি, আপনার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও বরকত বর্ষিত হোক। শান্তি আমাদের ওপর এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ বা উপাস্য নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল।

তাছাড়া তাশাহুদ অর্থ সাক্ষ্য দেওয়া। আততাহিয়াতু নামেই এটি পরিচিত। নামাজে এই বিশেষ দোয়াটির মাধ্যমে একজন বান্দা তার প্রভুর কাছে সমর্পিত হয়ে পরম শ্রদ্ধা ও ভক্তি নিবেদন করেন। এই দোয়ার মাধ্যমে নামাজি আল্লাহর প্রশংসা করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করেন। মুসলিম উম্মাহর মঙ্গল কামনা করেন।

তাশাহুদের ইতিহাস
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে জানা যায়, সাহাবিরা প্রথম দিকে নামাজে জিবরাইল (আ.) ও মিকাইল (আ.)-সহ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে সালাম পেশ করতেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের শিক্ষা দিয়ে বললেন, ‘আল্লাহতায়ালা নিজেই তো সালাম। তাই যখন তোমরা কেউ নামাজ আদায় করবে, তখন সে যেন তাশাহুদ পাঠ করে। কেননা, যখন তোমরা এই দোয়া পড়বে, তখন তা আসমান ও জমিনে অবস্থানকারী আল্লাহর সব নেক বান্দার কাছে পৌঁছে যাবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৪০২; মুসলিম, হাদিস: ৬২৬৫)

নামাজে কখন তাশাহুদ পড়তে হয়
প্রতি দুই রাকাত শেষে বৈঠকে বসে আততাহিয়াতু পাঠ করা ওয়াজিব বা আবশ্যক। এই মহামূল্যবান দোয়াটি পাঠকালে প্রতিটি শব্দ ও বাক্যের গভীর অর্থ হৃদয়ে ধারণ করার চেষ্টা করা উচিত। সামুরা ইবনে জুনদুব (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, ‘যখন তোমরা দুই রাকাতের পর বসবে, তখন ‘আততাহিয়াতু’ পাঠ করো। এরপর তোমাদের যার যে দোয়া পছন্দ, তা দিয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করো।’ (নাসায়ি, হাদিস: ১১১৪)

তাশাহুদ শিখিয়েছেন নবিজি (সা.)
নবিজি (সা.) কতটা যত্ন নিয়ে তাশাহুদ শিক্ষা দিয়েছেন, তা আমরা জানতে পারি আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর বর্ণনা থেকে। তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমার হাত তাঁর দুই হাতের মাঝে রেখে আমাকে তাশাহুদ শিখিয়েছেন, ঠিক যেভাবে তিনি কোরআনের সুরা শেখাতেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৫৯১০)

তাশাহুদ শুধু একটি দোয়া নয়, এটি আল্লাহর সঙ্গে বান্দার একটি অনন্য সংলাপ। এর মধ্য দিয়ে আমরা সাক্ষ্য দিই- সকল সম্মান, ইবাদত ও পবিত্রতা একমাত্র আল্লাহর জন্য। আমরা স্বীকার করি যে, মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল। আর এই স্বীকৃতির মধ্য দিয়েই আমরা সমগ্র মুসলিম উম্মাহর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করি।

তাশাহুদ

التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

তাশাহুদের বাংলা উচ্চারণ
আততা হিইয়াতু লিল্লাহি, ওয়াস সালা ওয়াতু, ওয়াত তাইয়িবাতু, আস সালামু আলাইকা, আই ইউহান নাবিইয়ু, ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন। আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

তাশাহুদের বাংলা অর্থ
শ্রদ্ধা আল্লাহর জন্য, পবিত্রতা আল্লাহর জন্য, ভালো কাজ ও নামাজ (সব কিছু) আল্লাহর জন্য। হে নবি, আপনার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও বরকত বর্ষিত হোক। শান্তি আমাদের ওপর এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ বা উপাস্য নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন