Dhaka ০৪:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামে নোঙর করলো বিপিএল কনসার্ট, সুরের মূর্ছনায় যেন তারুণ্যের উচ্ছ্বাস!

  • ক্রীড়া ডেস্ক ।।
  • আপডেটের সময় : ০৩:৩৩:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৭৮ টাইম ভিউ

এবারের বিপিএলের পর্দা উঠছে কাল। বিপিএলকে দর্শকদের কাছে পৌঁছে দিতে তিন ভেন্যুতে কনসার্টের আয়োজন করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ঢাকা, সিলেট ঘুরে সে কনসার্ট গতকাল নোঙর করেছিল চট্টগ্রামে। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে দর্শকদের মাতিয়েছেন শিল্পীরা। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখার পাশাপাশি কনসার্ট উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় স্টেডিয়ামকে।

চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত বসল বিপিএল কনসার্ট। মূলত বিপিএলকে ব্র্যান্ডিং করতেই এই কনসার্টের আয়োজন করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় জুলাই–আগস্ট বিপ্লবের একটি প্রামাণ্যচিত্র দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। সে প্রামাণ্যচিত্রে দেখানো হয় আন্দোলনে ছাত্র–জনতার বীরত্বগাথা। এরপর কনসার্টের প্রথম শিল্পী হিসেবে মঞ্চে আসেন মুঝা। তিনি বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় ফোক গান পরিবেশন করেন। এরপর মঞ্চে আসেন এভয়েডরাফা। প্রয়াত কিংবদন্তী শিল্পী এন্ড্রু কিশোরের বিখ্যাত গান ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে দিয়ে শুরু করেন রাফা। তার পরিবেশনাও মুগ্ধ করে দর্শকদের। এশার নামাজের বিরতির পর মঞ্চে আসেন জুলাই–আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি এবং রাসেল আহমেদ। তারা জানান ক্রিকেটের প্রতি, দেশের প্রতি তাদের অনুরাগের কথা। সে সাথে নতুন পথ চলায় তাদের সংকল্পের কথা ব্যক্ত করেন। যে লক্ষ্য নিয়ে জুলাই–আগস্ট বিপ্লব সাধিত হয়েছে সেটা ধরে রাখতে সবাইকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান এই দুই তরুণ সেনা। রাসেলের গগনবিদারী স্লোগানে শেষ হয় তাদের পর্ব।

এরপর মঞ্চে আসেন আরেক জনপ্রিয় শিল্পী ফুয়াদ এন্ড ফ্রেন্ডস। বাংলাদেশের বেশ কিছু জনপ্রিয় গান উপহার দেন তারা। তাদের পরিবেশনাও মুগ্ধ করে দর্শক শ্রোতাদের। তার আগে অবশ্য বিপিএলের থিম দেখানো হয় বড় পর্দায়। তবে কনসার্ট জমে উঠে তাসনীম আনিকার ডিসকো ড্যান্সার এবং রূপবান নাচে কোমর দোলাইয়া গানে। এই দুই গানের তালে তালে দর্শকরাও নেচে উঠে। এ যেন তারুণ্যের জোয়ার। এরপর ফুয়াদ পরিবেশন করেন তার সবচাইতে জনপ্রিয় গান নিটোল পায়ে রিনিক–ঝিনিক। ফুয়াদের পরববেশনা শেষে মঞ্চে আসেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এবং চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও সিজেকেএস সভাপতি ফরিদা খানম। তারা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। সে সাথে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে ওপেন এয়ার কনসার্টের আমন্ত্রণ জানান সিটি মেয়র। তিনি বলেন, তরুণদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে দেশ গড়ার কাজে। জেলা প্রশাসক এরকম সুন্দর আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ জানান।

এরপর মঞ্চে আসেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ এবং বিসিবির দুই পরিচালক আকরাম খান ও মনজুর আলম মঞ্জু। বিসিবি সভাপতি তার বক্তব্যে কনসার্টে অংশ নেওয়ার জন্য চট্টগ্রামের মানুষকে ধন্যবাদ জানান। তিনি সকলকে বিপিএল সফল করার অনুরোধ জানান। তিনি বিপিএলের এই নতুন যাত্রায় সবাইকে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান। শুভেচ্ছা জানান বিসিবির দুই পরিচালক আকরাম খান এবং মনজুর আলম মঞ্জুও।

শুরুর দিকে কিছুটা দর্শক খরা থাকলেও সন্ধ্যার পর বাড়তে থাকে দর্শক সংখ্যা। রাতে বেশ জমে উঠে কনসার্ট। এ প্রজন্মের তরুণদের কাছে জনপ্রিয় এক ইভেন্ট ডিজে। সঞ্জয়ের সে ডিজে বেশ উপভোগ করেন দর্শকরা। শুধু তাই নয় নাচের তালে উত্তাল হয়ে উঠে এম এ আজিজ স্টেডিয়াম। তবে অনুষ্ঠানের সবচাইতে আকর্ষণীয় ইভেন্ট ছিল লেজার শো আর আতশবাজি। প্রায় দশ মিনিটের আলোর ঝলকানিতে রঙিন হয়ে উঠে চট্টগ্রামের আকাশ। এ যেন কনসার্টের সাথে বাড়তি পাওয়া। সবশেষ শিল্পী হিসেবে মঞ্চে আসেন কিংবদন্তী সংগীত শিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদের ছেলে হাবিব ওয়াহিদ।

তার জনপ্রিয় দিন গেল তোমারও পথ চাহিয়া গানের তালে নেচেছে দর্শকরা। তোমাকে ছেড়ে আমি কি নিয়ে বাঁচব। বন্ধে মায়া লাগাইছে ফিরিতি শিখাইছের মত জনপ্রিয় গানগুলো শুনে মুগ্ধতা নিয়ে ফিরে দর্শকরা। আর এর মধ্য দিয়ে শেষ হয় তারুণ্যের উচ্ছ্বাস বিপিএল কনসার্ট।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
ট্যাগ:
লেখক তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় পোস্ট

আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ইশরাককে শপথ পড়ানো যাবে না: রিটকারীর আইনজীবী

চট্টগ্রামে নোঙর করলো বিপিএল কনসার্ট, সুরের মূর্ছনায় যেন তারুণ্যের উচ্ছ্বাস!

আপডেটের সময় : ০৩:৩৩:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

এবারের বিপিএলের পর্দা উঠছে কাল। বিপিএলকে দর্শকদের কাছে পৌঁছে দিতে তিন ভেন্যুতে কনসার্টের আয়োজন করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ঢাকা, সিলেট ঘুরে সে কনসার্ট গতকাল নোঙর করেছিল চট্টগ্রামে। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে দর্শকদের মাতিয়েছেন শিল্পীরা। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখার পাশাপাশি কনসার্ট উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় স্টেডিয়ামকে।

চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত বসল বিপিএল কনসার্ট। মূলত বিপিএলকে ব্র্যান্ডিং করতেই এই কনসার্টের আয়োজন করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় জুলাই–আগস্ট বিপ্লবের একটি প্রামাণ্যচিত্র দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। সে প্রামাণ্যচিত্রে দেখানো হয় আন্দোলনে ছাত্র–জনতার বীরত্বগাথা। এরপর কনসার্টের প্রথম শিল্পী হিসেবে মঞ্চে আসেন মুঝা। তিনি বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় ফোক গান পরিবেশন করেন। এরপর মঞ্চে আসেন এভয়েডরাফা। প্রয়াত কিংবদন্তী শিল্পী এন্ড্রু কিশোরের বিখ্যাত গান ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে দিয়ে শুরু করেন রাফা। তার পরিবেশনাও মুগ্ধ করে দর্শকদের। এশার নামাজের বিরতির পর মঞ্চে আসেন জুলাই–আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি এবং রাসেল আহমেদ। তারা জানান ক্রিকেটের প্রতি, দেশের প্রতি তাদের অনুরাগের কথা। সে সাথে নতুন পথ চলায় তাদের সংকল্পের কথা ব্যক্ত করেন। যে লক্ষ্য নিয়ে জুলাই–আগস্ট বিপ্লব সাধিত হয়েছে সেটা ধরে রাখতে সবাইকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান এই দুই তরুণ সেনা। রাসেলের গগনবিদারী স্লোগানে শেষ হয় তাদের পর্ব।

এরপর মঞ্চে আসেন আরেক জনপ্রিয় শিল্পী ফুয়াদ এন্ড ফ্রেন্ডস। বাংলাদেশের বেশ কিছু জনপ্রিয় গান উপহার দেন তারা। তাদের পরিবেশনাও মুগ্ধ করে দর্শক শ্রোতাদের। তার আগে অবশ্য বিপিএলের থিম দেখানো হয় বড় পর্দায়। তবে কনসার্ট জমে উঠে তাসনীম আনিকার ডিসকো ড্যান্সার এবং রূপবান নাচে কোমর দোলাইয়া গানে। এই দুই গানের তালে তালে দর্শকরাও নেচে উঠে। এ যেন তারুণ্যের জোয়ার। এরপর ফুয়াদ পরিবেশন করেন তার সবচাইতে জনপ্রিয় গান নিটোল পায়ে রিনিক–ঝিনিক। ফুয়াদের পরববেশনা শেষে মঞ্চে আসেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এবং চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও সিজেকেএস সভাপতি ফরিদা খানম। তারা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। সে সাথে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে ওপেন এয়ার কনসার্টের আমন্ত্রণ জানান সিটি মেয়র। তিনি বলেন, তরুণদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে দেশ গড়ার কাজে। জেলা প্রশাসক এরকম সুন্দর আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ জানান।

এরপর মঞ্চে আসেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ এবং বিসিবির দুই পরিচালক আকরাম খান ও মনজুর আলম মঞ্জু। বিসিবি সভাপতি তার বক্তব্যে কনসার্টে অংশ নেওয়ার জন্য চট্টগ্রামের মানুষকে ধন্যবাদ জানান। তিনি সকলকে বিপিএল সফল করার অনুরোধ জানান। তিনি বিপিএলের এই নতুন যাত্রায় সবাইকে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান। শুভেচ্ছা জানান বিসিবির দুই পরিচালক আকরাম খান এবং মনজুর আলম মঞ্জুও।

শুরুর দিকে কিছুটা দর্শক খরা থাকলেও সন্ধ্যার পর বাড়তে থাকে দর্শক সংখ্যা। রাতে বেশ জমে উঠে কনসার্ট। এ প্রজন্মের তরুণদের কাছে জনপ্রিয় এক ইভেন্ট ডিজে। সঞ্জয়ের সে ডিজে বেশ উপভোগ করেন দর্শকরা। শুধু তাই নয় নাচের তালে উত্তাল হয়ে উঠে এম এ আজিজ স্টেডিয়াম। তবে অনুষ্ঠানের সবচাইতে আকর্ষণীয় ইভেন্ট ছিল লেজার শো আর আতশবাজি। প্রায় দশ মিনিটের আলোর ঝলকানিতে রঙিন হয়ে উঠে চট্টগ্রামের আকাশ। এ যেন কনসার্টের সাথে বাড়তি পাওয়া। সবশেষ শিল্পী হিসেবে মঞ্চে আসেন কিংবদন্তী সংগীত শিল্পী ফেরদৌস ওয়াহিদের ছেলে হাবিব ওয়াহিদ।

তার জনপ্রিয় দিন গেল তোমারও পথ চাহিয়া গানের তালে নেচেছে দর্শকরা। তোমাকে ছেড়ে আমি কি নিয়ে বাঁচব। বন্ধে মায়া লাগাইছে ফিরিতি শিখাইছের মত জনপ্রিয় গানগুলো শুনে মুগ্ধতা নিয়ে ফিরে দর্শকরা। আর এর মধ্য দিয়ে শেষ হয় তারুণ্যের উচ্ছ্বাস বিপিএল কনসার্ট।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন