Dhaka ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সীতাকুণ্ডে বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় আ’লীগ নেতা, জামাত-বিএনপি’র ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া

সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভা ও সম্মাননা অনুষ্ঠানে বিতর্কিত অতিথি হিসেবে দেখা গেছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দিন চৌধুরীকে।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে তাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম রফিকুল ইসলামের পাশে বসে থাকতে দেখা যায়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ফখরুদ্দিন চৌধুরী সীতাকুণ্ডের কুখ্যাত চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজীর আইনজীবী ছিলেন, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র জনতার ওপর হামলা ও গুলির নির্দেশদাতা হিসেবে পরিচিত। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের জামিনের বিরোধিতা করতেন।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা। উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য ইউসুফ নিজামী বলেন, “ফখরুদ্দিন চৌধুরী আমাদের বহু নেতাকর্মীর জামিনের বিরোধিতা করেছেন। তার কারণে অনেক নেতাকর্মী মাসের পর মাস কারাগারে ছিলেন। বিজয় দিবসের মতো অনুষ্ঠানে তাকে অতিথি করা অপমানজনক।”

এদিকে অনুষ্ঠানে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আবু তাহের, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য ইউসুফ নিজামীসহ বিএনপি নেতারা দর্শক সারিতে বসে থাকতে দেখা যায়। পক্ষান্তরে ফখরুদ্দিন চৌধুরী মঞ্চে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওসির পাশে বসে বক্তব্যও রাখেন।

স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত নেতারা এমন বিতর্কিত অতিথিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানোয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন।

তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলাকালীন একটি ভিডিও বক্তব্য পোস্ট করেন সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও বিএনপি নেতা আবুল মুনসুর। সেখানে তিনি বলেন, ফখরুদ্দিনকে জাতীর একজন শ্রেষ্ঠ সন্তান ও প্রবীণ ব্যক্তি হিসাবে মঞ্চে বসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এখানে কেউ কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ে মঞ্চে উঠেনি। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা উপজেলা প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বক্তব্যে কাউকে এ বিষয় বিভ্যান্ত না হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

তাছাড়া এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্বয়ং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ৩৫০ জন মুক্তিযোদ্ধার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক পরিচয় মনে রাখা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমি অনুষ্ঠানে বক্তব্য এবং বরণের বিষয়টি মুক্তিযাদ্ধার সাবেক কমান্ডার আবুল মুনসুরের ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। তাকে এ বিষয়ে বারবার সতর্ক করা হয়েছিল যাতে বিতর্কিত কোনো ব্যক্তি মঞ্চে উঠার সুযোগ না পায়। কিন্তু তিনি ফখরুদ্দিন নামের একজনকে মঞ্চে উঠানোর কারণে আমাকেও বিব্রত হতে হচ্ছে। এটি তিনি কেন করেছেন আমি তা খতিয়ে দেখবো বলে জানান তিনি।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
ট্যাগ:
লেখক তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় পোস্ট

তেলের ডিপোতে পড়ে সীতাকুণ্ডে একজনের মৃত্যু, দগ্ধ ৩

সীতাকুণ্ডে বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় আ’লীগ নেতা, জামাত-বিএনপি’র ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া

আপডেটের সময় : ০৯:২৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪

সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভা ও সম্মাননা অনুষ্ঠানে বিতর্কিত অতিথি হিসেবে দেখা গেছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দিন চৌধুরীকে।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে তাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম রফিকুল ইসলামের পাশে বসে থাকতে দেখা যায়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ফখরুদ্দিন চৌধুরী সীতাকুণ্ডের কুখ্যাত চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজীর আইনজীবী ছিলেন, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র জনতার ওপর হামলা ও গুলির নির্দেশদাতা হিসেবে পরিচিত। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের জামিনের বিরোধিতা করতেন।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা। উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য ইউসুফ নিজামী বলেন, “ফখরুদ্দিন চৌধুরী আমাদের বহু নেতাকর্মীর জামিনের বিরোধিতা করেছেন। তার কারণে অনেক নেতাকর্মী মাসের পর মাস কারাগারে ছিলেন। বিজয় দিবসের মতো অনুষ্ঠানে তাকে অতিথি করা অপমানজনক।”

এদিকে অনুষ্ঠানে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আবু তাহের, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য ইউসুফ নিজামীসহ বিএনপি নেতারা দর্শক সারিতে বসে থাকতে দেখা যায়। পক্ষান্তরে ফখরুদ্দিন চৌধুরী মঞ্চে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওসির পাশে বসে বক্তব্যও রাখেন।

স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত নেতারা এমন বিতর্কিত অতিথিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানোয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেন।

তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলাকালীন একটি ভিডিও বক্তব্য পোস্ট করেন সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও বিএনপি নেতা আবুল মুনসুর। সেখানে তিনি বলেন, ফখরুদ্দিনকে জাতীর একজন শ্রেষ্ঠ সন্তান ও প্রবীণ ব্যক্তি হিসাবে মঞ্চে বসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এখানে কেউ কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ে মঞ্চে উঠেনি। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা উপজেলা প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বক্তব্যে কাউকে এ বিষয় বিভ্যান্ত না হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

তাছাড়া এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্বয়ং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ৩৫০ জন মুক্তিযোদ্ধার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক পরিচয় মনে রাখা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমি অনুষ্ঠানে বক্তব্য এবং বরণের বিষয়টি মুক্তিযাদ্ধার সাবেক কমান্ডার আবুল মুনসুরের ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। তাকে এ বিষয়ে বারবার সতর্ক করা হয়েছিল যাতে বিতর্কিত কোনো ব্যক্তি মঞ্চে উঠার সুযোগ না পায়। কিন্তু তিনি ফখরুদ্দিন নামের একজনকে মঞ্চে উঠানোর কারণে আমাকেও বিব্রত হতে হচ্ছে। এটি তিনি কেন করেছেন আমি তা খতিয়ে দেখবো বলে জানান তিনি।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন