Dhaka ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সীতাকুণ্ড মুক্তির স্বাদ পায় ১২ ডিসেম্বর

১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর রাতে সীতাকুণ্ড সদর হানাদার মুক্ত হয় । তবে ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়বকুণ্ড থেকে ফৌজদার হাট এলাকায় খণ্ড খণ্ড যুদ্ধ চলে। সীতাকুণ্ডের কুমিরায় যুদ্ধের সূচনালগ্নে সংঘটিত যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা প্রাথমিকভাবে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে। এই যুদ্ধে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইপিআরের শখানেক সৈন্যের আক্রমণে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি কোম্পানি প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ১২ ডিসেম্বর সীতাকুণ্ড সদরে সম্মুখযুদ্ধ হয়। রাতে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী সীতাকুণ্ড থানা ও উপজেলা সদর হানাদারমুক্ত করে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা গুলো তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং রাতেই বাংলাদেশ ও মিত্রবাহিনী কুমিরায় পাকিস্তানের ডিফেন্স এর সীমানায় পৌঁছে যায়। কুমিরায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি গভীর খালের ওপরে থাকা ব্রিজ উড়িয়ে দিয়ে পাকিস্তানিরা ব্রিজের দক্ষিণে রাস্তার দুপাশে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করেছিল।

১৪ ডিসেম্বর গভীর রাত পর্যন্ত এখানে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যৌথ বাহিনীর তুমুল লড়াই চলে। ভোর ৩টায় যৌথ বাহিনী কুমিরা মুক্ত করতে সক্ষম হয়।

১৫ ডিসেম্বর কুমিরার দক্ষিণে পাকিস্তানিদের কতগুলো অস্থায়ী ডিফেন্স ভেঙে যৌথবাহিনী ভাটিয়ারিতে পৌঁছে যায়। সেখান থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী প্রবল প্রতিরক্ষা অবস্থান তৈরি করেছিল। এখানে ১৬ ডিসেম্বর প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত যুদ্ধ হয়। একপর্যায়ে পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটতে থাকে।পালানোর সময় ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভাটিয়ারী অংশে তারা একটি সেতু ধ্বংস করে দিয়ে যায়। যে কারণে চট্টগ্রামের পথে আগুয়ান মুক্তিযোদ্ধা-স্বেচ্ছাসেবক ভারতীয় বাহিনীর অগ্রযাত্রা বিলম্বিত হয়। যদিও ১৬ ডিসেম্বর সারা রাতে সেতুর পাশে খালের মধ্যে একটি বিকল্প সড়ক তৈরি করা হয়। এরপর বাংলাদেশ বাহিনী দ্রুত বিনা বাধায় চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশ করে।

উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধে সীতাকুণ্ড এলাকার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল অপ্রত্যাশিত। তারা মুক্তিযুদ্ধে ব্যপক ভুমিকা রেখেছেন । যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ২৫ শে মার্চ ১৯৭১ ইং কালো রাতে হানাদার বাহিনীর জঘন্যতম হামলা হতে বেঁচে যাওয়া বাঙ্গালী সৈনিক ও ই,পি, আর জোয়ানেরা পরবর্তীতে ২৬ শে মার্চ ১৯৭১ সকাল বেলা থেকে সীতাকুন্ড থানা এলাকার দক্ষিণে ওভার ব্রিজ হইতে উত্তর দিকে কুমিরা এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়ে জনতার সহযোগীতায় পাক হানাদার বাহিনীর গতিরোধ করার লক্ষ্যে প্রতিরোধ বুহ্য গড়ে তোলেন।

অপর দিকে নিরস্ত্র জনতা ও সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন বাজারে সমুহে মহা সড়ক অবরোধ করার জন্য গাছ কেটে বা কেউ কেউ নিজ দোকানঘর ভেঙ্গে মহাসড়কের উপর বসিয়ে দিয়ে বেরিকেড সৃষ্টি করে। ২৬ শে মার্চ সকালে স্থানীয়দের সাথে প্রগতি ইন্ডাষ্ট্রিজে কর্মরত অবাঙ্গালী কর্মচারীদের উপর হামলা হয়। এসময় দুইজন অবাঙ্গালী নিহত হয় এবং ফকির হাটের নুরুল আলম ও হাতিলোটার আবদুল হক শাহাদাত বরণ করেন।

২৭ শে মার্চ সকাল ১১ টার দিকে বাড়বকুন্ড বাজারে পাক হানাদার বাহিনীর কম্ভয়ের উপর সরাসরি আক্রমণ করতে গিয়ে ছাদেকুল্লাহর ছেলে বাদশা মিয়া শাহাদাত বরণ করেন। সেদিন রাত ১০ টা থেকে ভোর ৪ টা পর্যন্ত কুমিরা নামক স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিপাগল প্রতিরোধ যোদ্ধাদের তুমুল যুদ্ধ হয়। এতে হানাদার বাহিনীর দুইজন অফিসারসহ বেশকিছু সৈনিক নিহত ও অনেকে আহত হয়।

উক্ত প্রতিরোধ যুদ্ধে পরবর্তী ২৮ শে মার্চ পর্যন্ত কালু শাহ মাজার থেকে কুমিরা পর্যন্ত স্থানে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিরোধ যুদ্ধে ভাটিয়ারী এলাকার মুনাফ দারোয়ান, মাহবুবুল আলম, আমির হোসেন মিস্ত্রী ও তার কন্যা, দায়রা বাড়ীর ছালে আহাম্মদ সহ নায়েক রুহুল আমিন, নায়েক আবুল খায়ের, নায়েক আবদুল ওদুদ সহ অনেক নাম নাজানা বীর প্রতিরোধ যোদ্ধা শাহাদাত বরণ বরণ করেন। কালু শাহ মাজারের পূর্ব পার্শ্বে, বর্তমান সাংগু রাস্তার পূর্ব পার্শ্বে ভাটিয়ারী শহিদ মিনারের পাশে, কদম রসুল সিটি সি. এন.জি. ষ্টেশনের পাশে হাফিজ জুট মিল ও পাক্কা মসজিদ সংলগ্ন স্থানে বার আউলিয়া মাজারের উত্তর পার্শ্বে ঐ সকল শহিদদের সমাধির চিহ্ন বিদ্যমান আছে।

৪ ঠা এপ্রিল সীতাকুন্ড মহন্তর হাটে হানাদার বাহিনীর ২টি জঙ্গি বিমান হইতে নিরস্ত্র জনতার উপর মেশিন গান দিয়ে আক্রমন চালায়, এতে শত শত সাধারণ জনতা হতাহত হয়। ৫ই এপ্রিল হইতে ১০ই এপ্রিল পর্যন্ত সীতাকুণ্ড অঞ্চল হানাদার মুক্ত থাকে।

১১ই এপ্রিল মুক্তি সেনাদের ডিফেন্সের উপর হানাদার বাহিনী ট্যাং সাজোয়াজান, গানবোট ও বিমান ব্যবহার করে মুক্তি সেনাদের উপর প্রচন্ড আঘাত হানে। এ সময় কিছু মুক্তিসেনা হানাদারদের হাতে বন্দি হয়। যাহাদের হদিস অদ্যবধি পর্যন্ত পাওয়া যায় নাই। অবশিষ্ট মুক্তিসেনারা পশ্চাদপসারণ করে মিরশ্বরায়ের দিকে চলে যায়। তৎসময়ে মুক্তিসেনাদের নেতৃত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন সুবেদ আলী ভূঁইয়া, ক্যাপ্টেন মতিন সহ অপরাপর সেনা কর্মকর্তাগণ।

২০ শে মে হইতে ১০ ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পুরো সীতাকুন্ড অঞ্চলে গেরিলা তৎপরতা বৃদ্ধি পায় এবং গেরিলা যোদ্ধাগণ হানাদার বাহিনীর সদস্যদের উপর গ্রেনেট নিক্ষেপ, চুরাগোপ্তা হামলা চালানো, মহা সড়কের সেতু ও রেল পথের সেতু উড়াইয়া দেওয়া সহ সীতাকুন্ড থানা আক্রমন করার মধ্য দিয়ে হানাদার শিবির ভীতির সঞ্চার করে ও তাদেরকে ব্যতিব্যস্ত রাখতে সক্ষম হয়। এই সময়ে শহীদ জলিল ও শহীদ টিপু সহ অসংখ্য মানুষ শাহাদাত বরণ করেন।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
ট্যাগ:
লেখক তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় পোস্ট

আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ইশরাককে শপথ পড়ানো যাবে না: রিটকারীর আইনজীবী

সীতাকুণ্ড মুক্তির স্বাদ পায় ১২ ডিসেম্বর

আপডেটের সময় : ১০:৩১:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর রাতে সীতাকুণ্ড সদর হানাদার মুক্ত হয় । তবে ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়বকুণ্ড থেকে ফৌজদার হাট এলাকায় খণ্ড খণ্ড যুদ্ধ চলে। সীতাকুণ্ডের কুমিরায় যুদ্ধের সূচনালগ্নে সংঘটিত যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা প্রাথমিকভাবে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে। এই যুদ্ধে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইপিআরের শখানেক সৈন্যের আক্রমণে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি কোম্পানি প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ১২ ডিসেম্বর সীতাকুণ্ড সদরে সম্মুখযুদ্ধ হয়। রাতে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী সীতাকুণ্ড থানা ও উপজেলা সদর হানাদারমুক্ত করে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা গুলো তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং রাতেই বাংলাদেশ ও মিত্রবাহিনী কুমিরায় পাকিস্তানের ডিফেন্স এর সীমানায় পৌঁছে যায়। কুমিরায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি গভীর খালের ওপরে থাকা ব্রিজ উড়িয়ে দিয়ে পাকিস্তানিরা ব্রিজের দক্ষিণে রাস্তার দুপাশে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করেছিল।

১৪ ডিসেম্বর গভীর রাত পর্যন্ত এখানে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যৌথ বাহিনীর তুমুল লড়াই চলে। ভোর ৩টায় যৌথ বাহিনী কুমিরা মুক্ত করতে সক্ষম হয়।

১৫ ডিসেম্বর কুমিরার দক্ষিণে পাকিস্তানিদের কতগুলো অস্থায়ী ডিফেন্স ভেঙে যৌথবাহিনী ভাটিয়ারিতে পৌঁছে যায়। সেখান থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী প্রবল প্রতিরক্ষা অবস্থান তৈরি করেছিল। এখানে ১৬ ডিসেম্বর প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত যুদ্ধ হয়। একপর্যায়ে পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটতে থাকে।পালানোর সময় ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভাটিয়ারী অংশে তারা একটি সেতু ধ্বংস করে দিয়ে যায়। যে কারণে চট্টগ্রামের পথে আগুয়ান মুক্তিযোদ্ধা-স্বেচ্ছাসেবক ভারতীয় বাহিনীর অগ্রযাত্রা বিলম্বিত হয়। যদিও ১৬ ডিসেম্বর সারা রাতে সেতুর পাশে খালের মধ্যে একটি বিকল্প সড়ক তৈরি করা হয়। এরপর বাংলাদেশ বাহিনী দ্রুত বিনা বাধায় চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশ করে।

উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধে সীতাকুণ্ড এলাকার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল অপ্রত্যাশিত। তারা মুক্তিযুদ্ধে ব্যপক ভুমিকা রেখেছেন । যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ২৫ শে মার্চ ১৯৭১ ইং কালো রাতে হানাদার বাহিনীর জঘন্যতম হামলা হতে বেঁচে যাওয়া বাঙ্গালী সৈনিক ও ই,পি, আর জোয়ানেরা পরবর্তীতে ২৬ শে মার্চ ১৯৭১ সকাল বেলা থেকে সীতাকুন্ড থানা এলাকার দক্ষিণে ওভার ব্রিজ হইতে উত্তর দিকে কুমিরা এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়ে জনতার সহযোগীতায় পাক হানাদার বাহিনীর গতিরোধ করার লক্ষ্যে প্রতিরোধ বুহ্য গড়ে তোলেন।

অপর দিকে নিরস্ত্র জনতা ও সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন বাজারে সমুহে মহা সড়ক অবরোধ করার জন্য গাছ কেটে বা কেউ কেউ নিজ দোকানঘর ভেঙ্গে মহাসড়কের উপর বসিয়ে দিয়ে বেরিকেড সৃষ্টি করে। ২৬ শে মার্চ সকালে স্থানীয়দের সাথে প্রগতি ইন্ডাষ্ট্রিজে কর্মরত অবাঙ্গালী কর্মচারীদের উপর হামলা হয়। এসময় দুইজন অবাঙ্গালী নিহত হয় এবং ফকির হাটের নুরুল আলম ও হাতিলোটার আবদুল হক শাহাদাত বরণ করেন।

২৭ শে মার্চ সকাল ১১ টার দিকে বাড়বকুন্ড বাজারে পাক হানাদার বাহিনীর কম্ভয়ের উপর সরাসরি আক্রমণ করতে গিয়ে ছাদেকুল্লাহর ছেলে বাদশা মিয়া শাহাদাত বরণ করেন। সেদিন রাত ১০ টা থেকে ভোর ৪ টা পর্যন্ত কুমিরা নামক স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিপাগল প্রতিরোধ যোদ্ধাদের তুমুল যুদ্ধ হয়। এতে হানাদার বাহিনীর দুইজন অফিসারসহ বেশকিছু সৈনিক নিহত ও অনেকে আহত হয়।

উক্ত প্রতিরোধ যুদ্ধে পরবর্তী ২৮ শে মার্চ পর্যন্ত কালু শাহ মাজার থেকে কুমিরা পর্যন্ত স্থানে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিরোধ যুদ্ধে ভাটিয়ারী এলাকার মুনাফ দারোয়ান, মাহবুবুল আলম, আমির হোসেন মিস্ত্রী ও তার কন্যা, দায়রা বাড়ীর ছালে আহাম্মদ সহ নায়েক রুহুল আমিন, নায়েক আবুল খায়ের, নায়েক আবদুল ওদুদ সহ অনেক নাম নাজানা বীর প্রতিরোধ যোদ্ধা শাহাদাত বরণ বরণ করেন। কালু শাহ মাজারের পূর্ব পার্শ্বে, বর্তমান সাংগু রাস্তার পূর্ব পার্শ্বে ভাটিয়ারী শহিদ মিনারের পাশে, কদম রসুল সিটি সি. এন.জি. ষ্টেশনের পাশে হাফিজ জুট মিল ও পাক্কা মসজিদ সংলগ্ন স্থানে বার আউলিয়া মাজারের উত্তর পার্শ্বে ঐ সকল শহিদদের সমাধির চিহ্ন বিদ্যমান আছে।

৪ ঠা এপ্রিল সীতাকুন্ড মহন্তর হাটে হানাদার বাহিনীর ২টি জঙ্গি বিমান হইতে নিরস্ত্র জনতার উপর মেশিন গান দিয়ে আক্রমন চালায়, এতে শত শত সাধারণ জনতা হতাহত হয়। ৫ই এপ্রিল হইতে ১০ই এপ্রিল পর্যন্ত সীতাকুণ্ড অঞ্চল হানাদার মুক্ত থাকে।

১১ই এপ্রিল মুক্তি সেনাদের ডিফেন্সের উপর হানাদার বাহিনী ট্যাং সাজোয়াজান, গানবোট ও বিমান ব্যবহার করে মুক্তি সেনাদের উপর প্রচন্ড আঘাত হানে। এ সময় কিছু মুক্তিসেনা হানাদারদের হাতে বন্দি হয়। যাহাদের হদিস অদ্যবধি পর্যন্ত পাওয়া যায় নাই। অবশিষ্ট মুক্তিসেনারা পশ্চাদপসারণ করে মিরশ্বরায়ের দিকে চলে যায়। তৎসময়ে মুক্তিসেনাদের নেতৃত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন সুবেদ আলী ভূঁইয়া, ক্যাপ্টেন মতিন সহ অপরাপর সেনা কর্মকর্তাগণ।

২০ শে মে হইতে ১০ ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পুরো সীতাকুন্ড অঞ্চলে গেরিলা তৎপরতা বৃদ্ধি পায় এবং গেরিলা যোদ্ধাগণ হানাদার বাহিনীর সদস্যদের উপর গ্রেনেট নিক্ষেপ, চুরাগোপ্তা হামলা চালানো, মহা সড়কের সেতু ও রেল পথের সেতু উড়াইয়া দেওয়া সহ সীতাকুন্ড থানা আক্রমন করার মধ্য দিয়ে হানাদার শিবির ভীতির সঞ্চার করে ও তাদেরকে ব্যতিব্যস্ত রাখতে সক্ষম হয়। এই সময়ে শহীদ জলিল ও শহীদ টিপু সহ অসংখ্য মানুষ শাহাদাত বরণ করেন।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন