Dhaka ০৬:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে চাকসু নির্বাচন, বেইল পদ্ধতি না থাকায় ভোটারদের অসন্তোষ

দীর্ঘ ৩৫ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ বুধবার সপ্তমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন।

সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ, শেষ হবে বিকেল ৪টায়। এরপর গণনা ও ফল ঘোষণা। ভোট ঘিরে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন।

এবারের চাকসু নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৬ জন। যাতে ভিপি-জিএসসহ কেন্দ্রীয় সংসদে পদ আছে ২৬টি। ১৫ হল ও হোস্টেল সংসদে পদসংখ্যা ১৪টি করে। যার বিপরীতে প্রার্থী ৯০৮ জন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ১৩টি প্যানেল ও স্বতন্ত্র মিলে প্রার্থী ৪১৫ জন। ৫টি অনুষদ ভবনের ১৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে ৬০টি কক্ষে।

ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে পাঁচটি অনুষদে, ১৫টি হলের জন্য নির্ধারিত ১৫টি কেন্দ্রে। মোট ৬০টি কক্ষে ৬৮৯টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

১৪টি এলইডি স্ক্রিনে সরাসরি দেখানো হচ্ছে ভোট গ্রহণ ও গণনা। ভোটগ্রহণ চলছে ব্যালট পেপারে। গণনা হবে ওএমআর মেশিনে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৯০৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ১৩ টি প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে ৪১৫ জন এবং হল ও হোস্টেল সংসদে ৪৯৩ জন।

কেন্দ্রীয় সংসদে নারী প্রার্থী ৪৭ জন। এর মধ্যে চাকসুর ২৬টি পদে লড়ছেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর হল সংসদের ১৪টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৯৩ জন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, ‘চাকসু নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ভোটাররা নির্বিঘ্নে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট প্রদান করবেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) আটটি দল কাজ করছে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্যাম্পাসে অবস্থান করবে বলে জানিয়েছে র‍্যাব কর্তৃপক্ষ।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে রয়েছে পুলিশ সদস্য, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তর। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে প্রস্তুত আছে সেনাবাহিনী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী শহরে অবস্থান করেন। তাদের ক্যাম্পাসে নিয়ে আসার সুবিধার্থে বাড়তি শাটল ট্রেন এবং বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথম চাকসু নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা আয়োজন করতে পারেনি।

সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর মাত্র ছয়বার এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বেইল পদ্ধতি না থাকায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী প্রার্থী ও ভোটারদের অসন্তোষ

মোরশেদ আলম, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে বেইল পদ্ধতি না থাকায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

ছাত্র শিবির সমর্থিত ঐক্যজোটের কার্যকরি নির্বাহী সদস্য প্রার্থী আকাশ দাশ জানিয়েছেন, “আমরা নির্বাচন কতৃপক্ষকে বারবার অবহিত করেছি, কিন্তু বেইল পদ্ধতি রাখা হয়নি। এর কারণে অনেক শিক্ষার্থী ভোট দিতে বেগ পাচ্ছেন।”

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী উৎস নামে এক ভোটারও জানিয়েছেন, “বেইল পদ্ধতি না থাকায় তাদের ভোট ঠিক জায়গায় পড়বে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।”

একাধিক শিক্ষার্থীও একই ধরনের অভিযোগ করেছেন, যেখানে তারা ভোটারদের সুষ্ঠু অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করতে বেইল পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন কতৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন
লেখক তথ্য সম্পর্কে

জনপ্রিয় পোস্ট

বন্ধ থাকা প্যাসিফিক জিনস গ্রুপের সাতটি কারখানা আগামীকাল খুলছে!

৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে চাকসু নির্বাচন, বেইল পদ্ধতি না থাকায় ভোটারদের অসন্তোষ

আপডেটের সময় : ০৮:০৫:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

দীর্ঘ ৩৫ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ বুধবার সপ্তমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন।

সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ, শেষ হবে বিকেল ৪টায়। এরপর গণনা ও ফল ঘোষণা। ভোট ঘিরে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন।

এবারের চাকসু নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৬ জন। যাতে ভিপি-জিএসসহ কেন্দ্রীয় সংসদে পদ আছে ২৬টি। ১৫ হল ও হোস্টেল সংসদে পদসংখ্যা ১৪টি করে। যার বিপরীতে প্রার্থী ৯০৮ জন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ১৩টি প্যানেল ও স্বতন্ত্র মিলে প্রার্থী ৪১৫ জন। ৫টি অনুষদ ভবনের ১৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে ৬০টি কক্ষে।

ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে পাঁচটি অনুষদে, ১৫টি হলের জন্য নির্ধারিত ১৫টি কেন্দ্রে। মোট ৬০টি কক্ষে ৬৮৯টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

১৪টি এলইডি স্ক্রিনে সরাসরি দেখানো হচ্ছে ভোট গ্রহণ ও গণনা। ভোটগ্রহণ চলছে ব্যালট পেপারে। গণনা হবে ওএমআর মেশিনে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৯০৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ১৩ টি প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে ৪১৫ জন এবং হল ও হোস্টেল সংসদে ৪৯৩ জন।

কেন্দ্রীয় সংসদে নারী প্রার্থী ৪৭ জন। এর মধ্যে চাকসুর ২৬টি পদে লড়ছেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর হল সংসদের ১৪টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৯৩ জন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, ‘চাকসু নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ভোটাররা নির্বিঘ্নে তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট প্রদান করবেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) আটটি দল কাজ করছে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্যাম্পাসে অবস্থান করবে বলে জানিয়েছে র‍্যাব কর্তৃপক্ষ।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে রয়েছে পুলিশ সদস্য, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তর। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে প্রস্তুত আছে সেনাবাহিনী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী শহরে অবস্থান করেন। তাদের ক্যাম্পাসে নিয়ে আসার সুবিধার্থে বাড়তি শাটল ট্রেন এবং বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথম চাকসু নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা আয়োজন করতে পারেনি।

সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর মাত্র ছয়বার এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বেইল পদ্ধতি না থাকায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী প্রার্থী ও ভোটারদের অসন্তোষ

মোরশেদ আলম, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে বেইল পদ্ধতি না থাকায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

ছাত্র শিবির সমর্থিত ঐক্যজোটের কার্যকরি নির্বাহী সদস্য প্রার্থী আকাশ দাশ জানিয়েছেন, “আমরা নির্বাচন কতৃপক্ষকে বারবার অবহিত করেছি, কিন্তু বেইল পদ্ধতি রাখা হয়নি। এর কারণে অনেক শিক্ষার্থী ভোট দিতে বেগ পাচ্ছেন।”

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী উৎস নামে এক ভোটারও জানিয়েছেন, “বেইল পদ্ধতি না থাকায় তাদের ভোট ঠিক জায়গায় পড়বে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।”

একাধিক শিক্ষার্থীও একই ধরনের অভিযোগ করেছেন, যেখানে তারা ভোটারদের সুষ্ঠু অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করতে বেইল পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন কতৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি।

খালেদ / পোস্টকার্ড ;

আপনার সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এই পোস্ট শেয়ার করুন