চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ও তুলাতলী মৌজায় উপকূলীয় বনের মধ্যে গড়ে তোলা কোহিনুর স্টিল শিপব্রেকিং ইয়ার্ড উচ্ছেদ করে সরকারী খাস জায়গা উদ্ধার করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ।
আজ বুধবার (২৫ জুন) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় সীতাকুণ্ড উপজেলার তুলাতলী মৌজার বিএস খতিয়ান নং-০১, বিএস দাগ নং-৪৯৪ এর আওতাধীন মোট ১১৩.৬৩ একর জমির মধ্যে অবৈধভাবে দখলকৃত সরকারি খাস জমি উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আল আমিন হোসেন ও মোঃ মঈনুল হাসান ।
উল্লেখ্য যে , তুলাতুলী মৌজার অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে ২০/০৩/২৫ তারিখে ৭ (সাত) দিনের মধ্যে দখল ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে অবৈধ দখলদারদের নোটিশ প্রদান করা হয়। তবে নির্ধারিত সময়ের পরও দখলদারগণ দখল না ছাড়ায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদ্বয়কে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সলিমপুর ও তুলাতলী মৌজায় প্রায় ১০ একর জায়গায় কয়েক বছর ধরে কোহিনুর স্টিল নামক একটি শিপইয়ার্ড নির্মাণের কাজ করছেন স্থানীয় শিল্পপতি এম এ কাসেম রাজা। এর মধ্যে কিছু সম্পত্তি তাঁর ক্রয়কৃত এবং অবশিষ্ট অংশ সমুদ্র সিকস্তি (লিজকৃত)। তিনি ইতোমধ্যে সেখানে ইয়ার্ডের অফিস নির্মাণ, হুইন্স মেশিন স্থাপন, বনের মধ্য দিয়ে সুপ্রশস্ত রাস্তা তৈরিসহ বিভিন্ন নির্মাণ কাজ করেন।
এর আগে শিপ ইয়ার্ডের চারপাশের উপকূলীয় বনের হাজার হাজার সরকারি গাছ ছিল যা ইয়ার্ড নির্মাণের সময় কেটে উজাড় করা হয়েছে এবং উপকূলীয় বনের হাজার হাজার সরকারি গাছ এখনো আছে – এমন অভিযোগ তুলে শিপইয়ার্ডটির ইজারা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। শুধু তাই নয়, বেলা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে সরকারি সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাকে লিগ্যাল নোটিশও দেয়।
এই অবস্থায় আদালতের নির্দেশনায় ইয়ার্ডটির লিজ নবায়ন বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের দাবী কোহিনুর শিপ ইয়ার্ডের ভবনটি বনায়ন আওতায় তুলাতলী মৌজা পড়েছে এবং তাই ফৌজদারহাট মৌজায় এই শিপ ইয়ার্ডটি গুড়িয়ে দেয় জেলা প্রশাসন।এই অভিযানে খননযন্ত্র দিয়ে সমুদ্র সিকস্তি ভূমিতে গড়ে তোলা কোহিনুর স্টিলের একটি ২ তলা বিল্ডিং, ১ তলা একটি বিল্ডিং, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, বৈদ্যুতিক খুটি এবং কাটা তারের বেড়া অপসারণ করা হয়। অভিযান পরিচালনায় সহায়তা করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, আনসার বাহিনী, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন বিভাগ।
অভিযান শেষে উদ্ধারকৃত জমি সরকারের দখলে আনা হয় এবং পুনরায় দখল রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
এই সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আল আমিন হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সকল অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতেও নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
খালেদ / পোস্টকার্ড ;