চট্টগ্রামের দেওয়ানবাজারের বাসিন্দা আমল দাস তিন বছর পর আবুধাবি থেকে দেশে আসা ছেলে সুমনকে আনতে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে যান । দীর্ঘদিন কাছে পাওয়া ছেলেকে নিয়ে বাসায় ফেরার পথে ছিনতাইকারীরা প্রবাসী সুমনের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়। ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার রাত নয়টায় নগরীর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে। তাতে ক্লান্ত হয়নি ছিনতাইকারীরা। পিতা-পুত্রকে সীতাকুণ্ডের পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে গিয়ে পরিবারের কাছে ছিনতাইকারীরা মুক্তিপণ দাবি করে ১৮ লাখ টাকা। পরে রাত ১২ টায় (বুধবার) সুমন ও তার বাবাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে এ ঘটনা কাউকে জানালে মৃত্যুর হুমকি দেয় ওরা।
প্রবাসী সুমনের বোন বিপাশা দাশ জানান, বুধবার আবুধাবি থেকে দেশে আসে তার ভাই সুমন। পরিচিত একজন ট্যাক্সিচালক নিয়ে ভাইকে বিমানবন্দর থেকে আনতে গিয়েছিলেন বাবা। রাত আনুমানিক নয়টায় বিমান বন্দর থেকে বের হয়ে ট্যাক্সি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠে। কিছুদূর চলার পর পেছন দিক থেকে আসা একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস ট্যাক্সিকে ধাওয়া করে। ট্যাক্কি না থামলে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে থামায়। মাইক্রোবাস থেকে মুখোশ পরা ৮/৯ জন ছেলে নেমে প্রথমে ট্যাক্সির কাঁচ ভেঙ্গে দেয়। তারা অস্ত্রের মুখে সুমনকে জিম্মি করে নগদ ৫০ হাজার টাকা, পাসপোর্ট ও লাগেজ কেড়ে নেয়। পরে তারা সুমনকে স্বর্ণ দেয়ার জন্য চাপ দেয়। এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা ট্যাক্সি চালককে ছেড়ে দিয়ে সুমন ও তার বাবাকে মাইক্রোতে তুলে সীতাকুণ্ডের পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে যায়।
সুমন বার বার জানায় তার কাছে কোন স্বর্ণ নেই। এ কথা শুনে অস্ত্রধারী ছিনাতাইকারীরা তাদের মুঠোফোনে সুমনের ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে বলে- আমাদের কাছে খবর আছে তোর কাছে স্বর্ণ আছে। তবে যে ছবি ও ভিডিও দেখানো হয়েছে তা বিমানবন্দরের তোলা। ধারণা করা হচ্ছে স্বর্ণ আছে এমন কোন ব্যক্তি ছিনাতাইকারীদের টার্গেট ছিল। ভুলে তারা সুমনকে টার্গেট করে ফেলেছে। স্বর্ণ না পেয়ে তারা ঘরে ফোন করে ১৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। সুমনের কাছ থেকে নগদ টাকা, পাসপোর্ট, লাগেজ সবকিছু কেড়ে নিয়ে রাত ১২ টায় ছেড়ে দেয়া হয়। ঘটনার পর থেকে অনেকটা ট্রমা অবস্থায় আছেন প্রবাসী সুমন।
বিপাশা জানান, ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে ছাড়া পাওয়া ট্যাক্সি চালক এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নেমে একাধিকবার ‘৯৯৯’ এ ফোন করেন। কিন্তু সংযোগ পাননি। লালখান বাজারে থাকা একজন ট্রাফিক পুলিশের সহযোগিতা চেয়েও পাননি। গতকাল রাত সাড়ে দশটায় ঘটনার শিকার সুমন ডবলমুরিং থানায় মামলা দায়ের করতে যান।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটায় ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক বাবুল আজাদকে দুইবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলে তিনি তা দেখেন। তবে কোন জবাব দেননি। পূর্বকোণ
খালেদ / পোস্টকার্ড ;