৪৩ শিক্ষার্থীকে এতিম সাজিয়ে সরকারি টাকা লোপাট করলো মাদ্রাসা অধ্যক্ষ

ফরিদপুর প্রতিনিধি ।।

৪৩ শিক্ষার্থীকে এতিম সাজিয়ে সরকারি টাকা লোপাট করলো মাদ্রাসা অধ্যক্ষ

৪৩ শিক্ষার্থীকে এতিম সাজিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে গত ১ বছরে ৫ লাখ ২৬ হাজার টাকা লোপাটের তথ্য পাওয়া গেছে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নে আল গফুরিয়া হাফিজিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ।

অভিযুক্ত ব্যক্তি এতিমখানাটির অধ্যক্ষ মাওলানা শাহ মো. খালেদ বিন নাসের। ৮ বছর ধরে এই এতিমখানায় এমন অ’নিয়ম চলছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় হচ্ছে। সন্তানদের এতিম দেখিয়ে সরকারি টাকা লোপাটের ঘটনায় ক্ষো’ভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।

জানা গেছে, ওই এতিমখানার শিক্ষার্থীরা ফরিদপুর ও রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকার। কয়েক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানায়, তাদের মা-বাবা বেঁচে রয়েছেন। প্রতিমাসে পরিবারের লোকজন তাদের সঙ্গে দেখা করতে আসে। থাকা ও খাওয়ার খরচ বাবদ প্রতিমাসে ১ হাজার করে টাকা তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে নেয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি এতিমখানার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য নেওয়ার সময় মাদ্রাসার একজন বা’ধা দেন।

এতিম দেখিয়ে সরকারি অনুদান নেওয়ার বিষয়টি জানার পর স্থানীয় কয়েকজন খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, প্রতিবছর সমাজসেবা অফিস থেকে প্রতিজন এতিমের বিপরীতে ১ হাজার টাকা করে পেয়ে থাকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এ বছর মাদ্রাসার পক্ষ থেকে সমাজসেবা অফিসে ৪৩ এতিমের তথ্য দিয়ে আবেদন করে টাকা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের বেশিরভাগই এতিম নয়। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ এলাকার স্থানীয় চেয়ারম্যানের সনদপত্র রয়েছে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের এতিম সাজিয়ে সরকারি টাকা লোপাটের অভিযোগ দেওয়া হয়েছে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে। এ ব্যাপারে কথা বলতে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শাহ মোহাম্মদ খালেদ বিন নাসেরের সঙ্গে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। তবে মাদ্রাসা ও এতিমখানার উপ-অধ্যক্ষ জানান, অ’নিয়মের বিষয়টি তিনি জেনেছেন। মাদ্রাসার শিক্ষকরা এলাকায় কালেকশনে গিয়ে এতিম সাজানোর বিষয়টি তাদের জানান।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা প্রকাশ কুমার বিশ্বাস বলেন, কথিত এতিমদের তালিকা তৈরির বিষয়ে জেলা কার্যালয় থেকে তদন্তের একটি চিঠি পেয়েছি। দ্রুতই তদন্ত শুরু করা হবে।

এতিমখানার অ’নিয়মের বিষয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এএসএম আলী আহসান জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তে কেউ দায়ী হলে তার বিরু’দ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।