২০ বছর পরও কার্যকর জন্মনিবন্ধন ব্যবস্থা তৈরি হয়নি দেশে, আছে পুরোনো-নতুন সফটওয়্যারের জটিলতা

২০ বছর পরও কার্যকর জন্মনিবন্ধন ব্যবস্থা তৈরি হয়নি দেশে, আছে পুরোনো-নতুন সফটওয়্যারের জটিলতা

সামছুর রহমান, ঢাকা।।

২০০১ সালে দেশে জন্মনিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল, কিন্তু ২০ বছর পরও একটি কার্যকর জন্মনিবন্ধন ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব হয়নি। দেশে ১৭ কোটি ৬৪ লাখের বেশি জন্মনিবন্ধন হয়েছে। তবে নিবন্ধনে অসংখ্য দ্বৈততা আছে, অর্থাৎ এক ব্যক্তির নামে একাধিক নিবন্ধন রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, প্রকৃত নিবন্ধনকারীর সংখ্যা হবে মোট নিবন্ধনের অর্ধেকের কাছাকাছি।

কিছুদিন আগেও জন্মনিবন্ধনে যে অনলাইন সফটওয়্যারটি ব্যবহার করা হতো, সেটি ছিল এক দশকের পুরোনো। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে তথ্য যাচাই করা এবং দ্বৈততা চিহ্নিত করার সুযোগ ছিল না। ফলে অনেকে একাধিক জন্মসনদ নিয়েছেন।

জন্মনিবন্ধনের পুরোনো সফটওয়্যারটি নানা সমস্যায় জর্জরিত ছিল। অধিকাংশ সময় সার্ভারে ঢোকা যেত না। এ পরিস্থিতিতে একটি নির্ভুল এবং দ্রুতগতির জন্মনিবন্ধন সার্ভার গড়ে তুলতে ২০১৯ সালে বার্থ-ডেথ রেজিস্ট্রেশন ইনফরমেশন সিস্টেম (বিডিআরআইএস) নামে নতুন সফটওয়্যার চালু করা হয়েছে। তবে নতুন সফটওয়্যাটির ব্যবহার এখনো সব জন্মনিবন্ধকের কার্যালয়ে শুরু হয়নি।

অর্ধেকের মতো জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন নতুন সফটওয়্যার ব্যবহার করে হচ্ছে। বাকি ক্ষেত্রে এখনো পুরোনোটি ব্যবহার করতে হচ্ছে। পুরোনো সার্ভারের তথ্যগুলো নতুন সার্ভারে স্থানান্তরের কাজও চলছে। তবে পুরোনো সার্ভার ব্যবহারকারীরা কোনো তথ্য সংশোধন করলে সেটি নতুন সার্ভারে সংযুক্ত করতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।

শুরুর কথা
দেশের সব মানুষকে জন্মনিবন্ধনের আওতায় আনতে ২০০১ সালে ইউনিসেফ-বাংলাদেশের সহায়তায় প্রকল্প শুরু হয়। তখন হাতে লেখা জন্ম ও মৃত্যুসনদ দেওয়া হতো। আগের আইন স্থগিত করে ২০০৪ সালে সরকার ‘জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন আইন, ২০০৪’ পাস করে। আইনটি ২০০৬ সালের ৩ জুলাই থেকে কার্যকর হয়।

২০১০ থেকে অনলাইনে জন্মসনদ দেওয়া শুরু হয়। ২০১৬ সালে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন প্রকল্পটির তৃতীয় পর্যায় শেষ হয়। সরকার ওই বছরের ১ জুলাই থেকে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যক্রম রাজস্ব খাতে নিয়ে আসে। বর্তমানে স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীনে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের মাধ্যমে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

জনসচেতনতা বাড়াতে ২০১৮ সালের অক্টোবরে সরকার ৬ অক্টোবরকে ‘জাতীয় জন্মনিবন্ধন দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে।

এখন পর্যন্ত কত নিবন্ধন
বর্তমানে দেশ ও দেশের বাইরে মিলিয়ে ৫ হাজার ৫৩২টি জায়গা থেকে জন্মনিবন্ধন করা যাচ্ছে। দেশের সব ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, পৌরসভা কার্যালয়, সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের পাশাপাশি বিদেশের বাংলাদেশি দূতাবাসে অনলাইনের মাধ্যমে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

নিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শুরু থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট জন্মনিবন্ধন হয়েছে ১৭ কোটি ৬৪ লাখ ৪৭ হাজার ৫৩১ জনের। এর মধ্যে জন্মের ৫ বছরের মধ্যে নিবন্ধন হয়েছে ১ কোটি ৬৯ লাখ ১ হাজার ২১১ জনের। ২০২০ সালে জন্মনিবন্ধন হয়েছে ৩৮ লাখ ৩৯ হাজার ২৮ জনের।

শুরু থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট মৃত্যুনিবন্ধন হয়েছে ৯৯ লাখ ৩৯ হাজার ৯০০ জনের। এর মধ্যে ২০২০ সালে মৃত্যুনিবন্ধন হয়েছে ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৪০০ জনের।

কেন নিবন্ধন প্রয়োজন
জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদের অনুচ্ছেদ ৭ অনুযায়ী, জন্মগ্রহণের শিশুর পর জন্মনিবন্ধন করতে হবে। জাতীয়তা অর্জন, নামকরণ এবং পিতা–মাতার পরিচয় জানার এবং তাদের হাতে পালিত হওয়ার অধিকার শিশুর আছে।

জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন আইন, ২০০৪ অনুযায়ী, একজন ব্যক্তির বেশ কিছু তথ্য নিবন্ধকের মাধ্যমে রেজিস্ট্রারে লেখা বা কম্পিউটারে এন্ট্রি করা এবং জন্মসনদ নেওয়াই হচ্ছে জন্মনিবন্ধন। তথ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যক্তির নাম, লিঙ্গ, জন্মতারিখ, জন্মস্থান, মা-বাবার নাম, তাদের জাতীয়তা এবং স্থায়ী ঠিকানা।

বর্তমানে দেশে ১৬টি মৌলিক সেবা পেতে জন্মসনদ প্রয়োজন হয়। এগুলো হলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, বিয়ের নিবন্ধন, ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, সরকারি-বেসরকারি সংস্থায় নিয়োগ, ব্যাংক হিসাব খোলা, গ্যাস-পানি-টেলিফোন-বিদ্যুতের সংযোগ, ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর (টিআইএন), ড্রাইভিং লাইসেন্স, যানবাহন নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, আমদানি ও রপ্তানি লাইসেন্স, ঠিকাদারি লাইসেন্স, জমির নিবন্ধন এবং বাড়ির নকশা অনুমোদন।

আর মৃত্যুনিবন্ধন প্রয়োজন মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বণ্টন, পেনশন পাওয়ার ক্ষেত্রে। মৃত্যু নিবন্ধিত না হলে দেশের প্রকৃত জনসংখ্যা নির্ণয় সম্ভব হয় না। মৃত্যুনিবন্ধন করতে হলে মৃত ব্যক্তির জন্মনিবন্ধন থাকতে হবে। জন্মনিবন্ধন করা না থাকলে জন্মনিবন্ধন করার পর মৃত্যুনিবন্ধন করতে হবে।

২০ বছরেও একটি কার্যকর জন্মনিবন্ধন ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব হলো না কেন? সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, দেশের অনেক মানুষ দরিদ্র। হাসপাতালগুলোর অবস্থা খারাপ। ফলে জন্মনিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোগত সমস্যা আছে। তবে সব শিশু যেন জন্মনিবন্ধনের আওতায় আসে, সেটি নিশ্চিত করা জরুরি। ভারত ও শ্রীলঙ্কা এ ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে গেছে।

৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধন কম
মিরপুর এলাকার বাসিন্দা মাহফুজা আকতারের ছেলের বয়স দেড় বছর। এখনো ছেলের জন্মনিবন্ধন করেননি। তিনি বলেন, স্কুলে ভর্তি করানোর আগে জন্মনিবন্ধন করব। আপাতত কোনো কাজে লাগছে না, তাই করানো হয়নি।

আইন অনুযায়ী, শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্মনিবন্ধন বাধ্যতামূলক। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। মোট জন্মনিবন্ধনের তুলনায় জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধনের হার খুবই কম। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সন্তানকে স্কুলে দেওয়ার আগে আগে অভিভাবকেরা জন্মনিবন্ধন করাচ্ছেন।

জন্মনিবন্ধন রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের হিসাবে, ২০১৯ সালে মোট জন্মনিবন্ধন হয়েছে ৬৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫০ জনের, এর মধ্যে জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধন হয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৬টি। অর্থাৎ ২০১৯ সালে মাত্র ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ নিবন্ধন হয়েছে জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে।

জন্ম বা মৃত্যুর ৪৫ দিন পর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত নিবন্ধন ফি দেশে ২৫ টাকা, বিদেশে ১ ডলার। ৫ বছর পর নিবন্ধন ফি দেশে ৫০ টাকা, বিদেশে ১ ডলার। জন্মতারিখ সংশোধনের জন্য আবেদন ফি দেশে ১০০ টাকা, বিদেশে ২ ডলার। অন্যান্য তথ্য সংশোধন এবং বাংলা-ইংরেজি উভয় ভাষায় সনদের নকল সরবরাহের জন্য আবেদন ফি দেশে ৫০ টাকা, বিদেশে ১ ডলার। ২০১৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় দেশে-বিদেশে জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধনের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

পুরোনো সফটওয়্যার নিয়ে এখনো সমস্যা
জন্মনিবন্ধনের নতুন সার্ভারটি এখনো সব নিবন্ধক ব্যবহার করতে পারছেন না। আবার পুরোনো সার্ভারটিতে প্রবেশ করতেও সমস্যা হচ্ছে। দিনের বেলা অধিকাংশ সময় সার্ভারে প্রবেশই করা যায় না। প্রবেশ করতে পারলেও কয়েক ঘণ্টায় একটি জন্মনিবন্ধনের কাজ শেষ করা যায় না।

বরগুনা জেলার বামনা উপজেলার বুকাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আবদুল বারেক খান বলেন, নতুন সার্ভারটির ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড এখনো দেওয়া হয়নি। পুরোনো সার্ভারটিতে প্রবেশেই করা যায় না। ফলে অধিকাংশ সময় জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধই রাখা হচ্ছে।

জন্মনিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেল মানিক লাল বণিক বলেন, পুরোনো সার্ভারটিতে সক্ষমতার তুলনায় চাপ অনেক বেশি থাকে। নতুন সার্ভারটির সক্ষমতা বেশি। এটি দ্বৈত নিবন্ধন খুঁজে বের করতে পারে। এই সফটওয়্যারে এক ব্যক্তির একাধিক জন্মনিবন্ধনের সুযোগ নেই। এটিতে প্রবেশ ও কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে না। কিছুদিনের মধ্যে সব নিবন্ধককে নতুন সার্ভারে যুক্ত করা হলে এই সমস্যাগুলো থাকবে না। ফলে একটি নির্ভুল জন্মনিবন্ধনের তথ্যভান্ডার গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

দেশে বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা আছে। ভুয়া জন্মসনদ ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট পাওয়ার খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে। জন্মনিবন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকতে জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়েছে জন্মনিবন্ধন রেজিস্ট্রারের কার্যালয়। কক্সবাজার জেলার স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক শ্রাবস্তী রায় বলেন, কোনো চেয়ারম্যান বা পরিষদের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের জন্মসনদ দেওয়া হলে বা ইস্যুর পর প্রমাণিত হলে তা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে মামলা করা হবে।

একাধিক জন্মনিবন্ধন নিয়ে জটিলতা
দেশে এখন পর্যন্ত যত জন্মনিবন্ধন হয়েছে, তার মধ্যে অসংখ্য দ্বৈততা রয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত মোট জন্মনিবন্ধনের সংখ্যাকে প্রকৃত নিবন্ধিত সংখ্যা হিসেবে ধরার সুযোগ নেই। মূলত জন্মনিবন্ধনে ব্যবহৃত পুরোনো সফটওয়্যারটির তথ্য যাচাইয়ে দুর্বলতা থাকায় এক ব্যক্তির নামে একাধিক জন্মনিবন্ধন হয়েছে।

জন্মনিবন্ধন কার্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জন্মনিবন্ধনের যে সংখ্যা, তা প্রকৃত নিবন্ধিত সংখ্যা নয়, এতে দ্বৈততা রয়েছে। কেউ ঢাকার বাইরে থেকে নিয়েছে, আবার ঢাকা থেকেও নিয়েছে। কেউ নিবন্ধন সনদ হারিয়ে ফেলায় নতুন করে আবার নিয়েছে। তথ্য পরিবর্তন করেও অনেকে নতুন নিবন্ধন নিয়েছে। সার্ভারে সমস্যার কারণে একই নিবন্ধন একাধিকবার করার নজিরও রয়েছে।

১০ জানুয়ারি রাজধানীর তোপখানা রোডের জন্মনিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, জন্মসনদের সমস্যা নিয়ে অনেকেই এখানে আসছেন। মিরপুর থেকে এক ব্যক্তি এসেছেন তাঁর ছেলের জন্মসনদের তথ্য সংশোধন করাতে। রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে থেকে জানানো হয়, জন্মতারিখ ও কিছু তথ্য বদল করে ওই ব্যক্তির ছেলের নামে তিনটি জন্মনিবন্ধন করা হয়েছে। তিনি যেখান থেকে নিবন্ধনগুলো করিয়েছেন, তাঁকে সেখানে যোগাযোগ করতে বলা হয়।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাহমুদা আলী বলেন, একটি সনদ দেওয়া হলে সেটির মূল্য থাকতে হবে। পুরোনো সফটওয়্যারে এক ব্যক্তির একাধিক সনদ নিলেও ধরার কোনো উপায় ছিল না। নতুন সফটওয়্যারটিতে দ্বৈত সনদ থাকলেই ধরা পড়ছে।

জন্মনিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় থেকে জানা যায়, কারও দ্বৈত নিবন্ধন ধরা পড়লে তাঁকে সংশ্লিষ্ট নিবন্ধকের কার্যালয়ের মাধ্যমে একাধিক নিবন্ধন বাতিলের আবেদন করতে হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা স্থানীয় সরকার উপপরিচালকের অনুমোদন সাপেক্ষে একটি রেখে বাকি নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।

একাধিক সনদ নেওয়ার বিষয়ে শুরু থেকেই অবগত জন্মনিবন্ধন কার্যালয়। দ্বৈততা বন্ধ করতে ২০১৪ সালে জন্মনিবন্ধন দিবসের প্রধান প্রতিপাদ্য করা হয়েছিল ‘জন্ম একবার, নিবন্ধনও একবার’। কিন্তু সেই প্রচার কাজে আসেনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম বলেন, জন্ম, মৃত্যু ও স্থানান্তর—এই তিনটি বিষয়ের সঠিক তথ্য থাকা খুব জরুরি। জন্মনিবন্ধনের কাজটি আরও আন্তরিকতার সঙ্গে করা উচিত। প্রয়োজনীয় লোকবল বরাদ্দ দিতে হবে, জন্মের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিবন্ধন করতে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। যারা এই কাজের সঙ্গে জড়িত, তাদের দায়বদ্ধতার মধ্যে আনতে হবে। বর্তমানে জন্মনিবন্ধনের কার্যক্রমে নানা অসংগতি রয়েছে। সঠিক ও গুণগত উপাত্ত না থাকলে ভ্রান্তিকর অবস্থা তৈরি হয়।

দেশের জনসংখ্যা গণনা হয় ১০ বছর পরপর। সর্বশেষ আদমশুমারি হয়েছিল ২০১১ সালে। এ বছর আবার আদমশুমারি হবে। মাঝের বছরগুলোতে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের সঠিক হিসাব থাকত, তাহলে জনসংখ্যার প্রকৃত চিত্র বোঝা সম্ভব হতো। অধ্যাপক মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম বলেন, জন্মনিবন্ধনের সঠিক তথ্য না থাকলে বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রার অর্জনও ব্যাহত হবে।