সড়কে জুন মাসে নিহত ৫২৪, সবচেয়ে বেশি মোটরসাইকেলে : রোড সেফটি ফাউন্ডেশন প্রতিবেদন

সড়কে জুন মাসে নিহত ৫২৪, সবচেয়ে বেশি মোটরসাইকেলে : রোড সেফটি ফাউন্ডেশন প্রতিবেদন
সড়কে জুন মাসে নিহত ৫২৪, সবচেয়ে বেশি মোটরসাইকেলে : রোড সেফটি ফাউন্ডেশন প্রতিবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক।। 

সারা দেশের সড়ক, মহাসড়ক, রেল ও নৌপথে ৪৬৭টি দুর্ঘটনায় গত জুন মাসে নিহত হয়েছেন ৫২৪ জন। আহত হয়েছেন ৮২১ জন। এর মধ্যে মোটরসাইকেলেই ঘটেছে ১৯৭টি দুর্ঘটনা, যাতে নিহত হয়েছেন ২০৪ জন। যা মোট নিহতদের মধ্যে ৩৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অপর দিকে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪২ দশমিক ১৮ শতাংশ। সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এসব তথ্য জানিয়েছে। সংগঠনটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, ৮টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত, ১৬ জন আহত এবং ৩ জন নিখোঁজ হয়েছেন। অন্যদিকে ১৮টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং ৪ জন আহত হয়েছে। যানবাহনের দিক থেকে মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ২০৪ জন, বাস যাত্রী ২৪ জন, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি-ডাম্পার আরোহী ৩৯ জন, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-জীপ যাত্রী ১৪ জন, থ্রি-হুইলারে ১০৬ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি নসিমন-ভটভটি-মাহিন্দ্র-চান্দেরগাড়িতে ১৩ জন এবং অযান্ত্রিক যানবাহনের মাধ্যমে নিহত হয়েছেন ১৭ জন। ৪৬৭টি দুর্ঘটনার মধ্যে জাতীয় মহাসড়কে সংঘটিত হয়েছে ১৫৯টি, আঞ্চলিক সড়কে ১৭৪টি, গ্রামীণ সড়কে ৭২টি, শহরের সড়কে ৫৬টি এবং অন্যান্য স্থানে ৬টি। এসব দুর্ঘটনায় মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে ১০৩টি, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১৯৮টি, পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া ১০৯টি, যানবাহনের পেছনে আঘাত করে ৩৮টি, এবং অন্যান্য কারণে ঘটেছে ১৯টি দুর্ঘটনা।

দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লাখ করা হয়েছে: ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহনের চলাচল, তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি ও গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।

সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান দুর্ঘটনা পর্যালোচনা করে বলেছেন, জুন মাসে প্রতিদিন গড়ে ১৭ দশোমিক ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কর্মক্ষম মানুষ ৭৮ দশমিক ৮১ শতাংশ। ট্রাকসহ পণ্যবাহী দ্রুতগতির যানবাহন ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এক ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। গণপরিবহন সহজ, সাশ্রয়ী ও উন্নত করে, যানজট কমিয়ে মোটরসাইকেল নিরুৎসাহিত করা অতিব জরুরি। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে সড়ক পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যস্থাপনার কারণে। এই অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন।

খালেদ/ পোস্টকার্ড ;