সেবার তথ্য চেয়েছে সার্ভেইল্যান্স টিম চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর কাছে

সেবার তথ্য চেয়েছে সার্ভেইল্যান্স টিম চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালগুলোর কাছে

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে মানুষকে চিকিৎসাবঞ্চিত করা চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে প্রশাসন। চট্টগ্রামে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর সেবার তথ্য চেয়েছে সার্ভেইল্যান্স টিম ।

চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে গঠিত সার্ভেইল্যান্স টিম নগরীর ২০টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিককে চিঠি দিয়ে সেসব প্রতিষ্ঠানে দৈনিক কত রোগীর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে তার তথ্য চেয়েছে ।

সার্ভেইল্যান্স টিমের আহ্বায়ক চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, বুধবার ২০টি হাসপাতালকে চিঠি দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সার্কুলার এবং সার্ভেইল্যান্স টিম গঠনের বিষয়টি জানিয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে।

ইতিমধ্যে আমরা তথ্য পেতে শুরু করেছি। তথ্য যাচাই করে চিকিৎসা সেবার অবকাঠামোগত ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

মার্চে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ পরীক্ষার ফল ‘নেগেটিভ’ না হলে সাধারণ রোগীদেরও সেবা দিতে অনীহার কথা শোনা যাচ্ছিল।

একাধিক হাসপাতালে ঘুরে সেবা না পেয়ে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগও ওঠে বেশ কয়েকটি।

পাশাপাশি করোনাভাইরাস চিকিৎসায় সরকারি হাসপাতাগুলোতে অপ্রতুল আইসিইউ ও শয্যা সংখ্যার বিষয়টি প্রকট হয়ে ওঠে মে মাসের মাঝামাঝি থেকে।

শুরু থেকে নানা উদ্যোগ নিয়েও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে কোভিড-১৯ চিকিৎসা চালু করাতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন।

২৭ মে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকে কোভিড-১৯ এবং অন্য সব ধরনের রোগীকে আলাদা ইউনিটে রেখে চিকিৎসা দিতে নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এরপরও চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসাপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা না পেয়ে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ আসতে থাকে।

সবশেষ ৩০ মে স্থানীয় প্রশাসন বেসরকারি ক্লিনিক মালিকদের সাথে এক সভায় এই সার্ভেইল্যান্স টিম গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়।

এরপর বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোকে চিঠি দিয়ে তথ্য চায় সার্ভেইল্যান্স টিম।  

যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে সেগুলো হলো- হাসপাতালে বা ক্লিনিকে কত রোগী দৈনিক সেবা নিতে আসেন, এরমধ্যে কতজন সাধারণ ও কতজনের কোভিড-১৯ এর উপসর্গ আছে, কতজনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে, কাউকে সেবা না দিয়ে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছি কিনা, দিলে তার কারণ এবং হাসপাতালে মোট শয্যা সংখ্যা।

সার্ভেইল্যান্স টিমের আহ্বায়ক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, প্রতিদিনের তথ্য পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে ই-মেইলে জানাতে বলেছি। আমরা তথ্য পেতে শুরু করেছি।

কোভিড ডেডিকেটেড হিসেবে ঘোষিত বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতাল ও ইম্পেরিয়াল এবং এর বাইরে পার্কভিউ ও ডেল্টা হাসপাতালকে কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হিসেবে চালুর জন্য কাজ চলছে।

এছাড়া কিছু বেসরকারি হাসপাতাল আগ্রহী হলেও তাদের ‘সীমাবদ্ধতার’ কথাও জানিয়েছে সার্ভেইল্যান্স দলকে।

মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, “অবকাঠামো ও অন্যান্য কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। কোনো কোনো ক্লিনিকে একটিই প্রবেশপথ ও লিফট। তারা লিখিতভাবে সীমাবদ্ধতার কথা জানালে আমরা সে অনুসারে ব্যবস্থা নেব। অবৈজ্ঞানিক কোনো সিদ্ধান্ত দেয়া হবে না।

দলের সদস্য সচিব চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ইতিমধ্যে মৌখিকভাবে রোগীদের স্বজনরা কেউ কেউ সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন। সেগুলো আমরা যোগাযোগ করে নিরসন করছি।

তথ্য চাওয়া হয়েছে। দৈনিক সেবাগ্রহীতার তথ্য পেলে তা যাচাই করেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

মৌখিক অভিযোগের বিষয়ে আহ্বায়ক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, গত রাত দুইটায়ও এক রোগীর স্বজন টেলিফোনে অভিযোগ জানিয়েছেন। রোগীর স্বজনরা ফোন করছেন। ফোন পেলে আমরা যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

এদিকে কমিটি গঠনের তিনদিন পরই সদস্য হিসেবে থাকা চট্টগ্রাম বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল ইকবাল চৌধুরীর পরিবর্তে সভাপতি মুজিবুল হক খানকে নেয়া হয়েছে।

নানা ঘটনায় আলোচিত ফয়সাল ইকবালকে কমিটিতে রাখায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার মুখে তাকে সরিয়ে দেয়া হল।

‘বিতর্ক এড়াতে’ কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বিএমএ নেতা ফয়সাল ইকবাল চৌধুরীকে। তবে সমালোচনার পরও ক্লিনিক মালিক লিয়াকত আলী কমিটিতে বহাল আছেন।

কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, “বিভাগীয় কমিশনার স্যার কমিটি গঠন করেছেন। তিনি পরিবর্তন করে বিএমএ সভাপতিকে সদস্য করেছেন। বিএমএর প্রতিনিধিই তো, সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদক কিছু না। তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ