সীতাকুন্ড চন্দ্রনাথধামে শিব চতুর্দশী মেলা শুরু, সমাগম ঘটবে লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর

সীতাকুন্ড চন্দ্রনাথধামে শিব চতুর্দশী মেলা শুরু, সমাগম ঘটবে লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর

সীতাকুন্ড প্রতিনিধি ।।

সনাতনী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম তীর্থস্থান খ্যাত সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় সম্বুনাথ মন্দির ও চন্দ্রনাথ শিবলিঙ্গ মন্দিরসহ বেশ কিছু মঠ, মন্দির নিয়ে প্রতি বছরের ন্যায় এবার গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে তিনদিনব্যাপী শিব চতুদর্শী মেলা।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট ২১ সেকেন্ডে তিথি শুরু হয়ে কাল শনিবার সন্ধ্যা ৭টা ৭মি ৫৩ সেকেন্ডে শেষ হবে। তবে এই মেলা মাসব্যাপী চলবে। শিব চতুদর্শী মেলা উপলক্ষে সীতাকুন্ড রেল স্টেশনে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী এবং চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী প্রতিটি ট্রেন ২-৫ মিনিট যাত্রা বিরতি করবে।

জানা যায়, বিশ্বের সনাতনী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় তীর্থস্থান খ্যাত সীতাকুন্ডের শিব চতুদর্শী মেলা। কথিত রয়েছে পৃথিবীর সকল তীর্থস্থান দর্শন করেও কোন সনাতন ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি যদি চন্দ্রনাথ দর্শন না করেন তাহলে তার পুণ্যলাভ হয় না। এ কারণে ধর্মপ্রাণ হিন্দুরা জীবনে একবার হলেও এ মহাতীর্থ দর্শনে আসেন। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ফাল্গুন মাসের ৭ তারিখ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ফাল্গুন মাসের চতুর্দশী তিথিকে বলা হয় শিব চতুর্দশী। তাই এই তিথিতে শ্রদ্ধার সঙ্গে মহাদেবের পূজা করতে ও একই সুযোগে মহাতীর্থ ভ‚মির মঠ মন্দিরগুলো দর্শন করে পুণ্যলাভের আশায় এখানে ছুটে আসেন। ভারত, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাসহ সারাবিশ্বের হিন্দুরা এই তিথিতে অংশগ্রহণ করার জন্য আসেন।

সীতাকুন্ডে এ তীর্থস্থান ঘিরে মহাসড়ক থেকে শুরু করে কুন্ডস্থান অর্থাৎ শঙ্করমঠ মিশন পর্যন্ত রাস্তার উভয় পাশে হরেক রকমের দোকান বসে। এতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে যোগ দেন অন্য ধর্মের লোকও। মঠ-মন্দিরের পূজার্”চনা ছাড়াও তীর্থভ‚মির মোহন্ত আস্তানায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় ধর্মীয় আলোচনা বিশ্ব বৈদিক সম্মেলন, সেমিনার, সাধক-ঋষি-সন্ন্যাসি সম্মিলন এবং সম্মাননা ও মহাতীর্থ পদক প্রদান অনুষ্ঠান। তিনদিনব্যাপি বিশ্ব বৈদিক সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রী, এমপি, সচিব, রাষ্ট্রদূত ও বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনারগণ।

মেলা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রতিবছরের মতো এবারও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে মেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। সীতাকুন্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে কার্যকরি সভাপতি ও পলাশ চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে ১১১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পলাশ চৌধুরী বলেন, মেলাটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে কমিটি প্রস্তুতি নিয়েছে। আইন-শৃঙ্খলার ও স্থানীয় সাধারণ মানুষকে নিয়ে উপজেলা পরিষদে মতবিনিময়, সংবাদ সম্মেলন ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়েও সভার মাধ্যমে প্রস্তুতি ও দিক নির্দেশনা নেওয়া হয়েছে।

সীতাকুন্ড থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফিরোজ হোসেন মোল্লা বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ মেলায় সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রশাসনের জন্য রয়েছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে থানা পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে ডিবি ও র‌্যাবসহ যৌথ বাহিনীর নজর থাকবে উক্ত মেলায়। কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা সর্বদা সচেষ্ট থাকবে।