সীতাকুণ্ডের কণ্যা খাল দখলে দূষণে বিধ্বস্ত

সীতাকুণ্ডের কণ্যা খাল দখলে দূষণে বিধ্বস্ত
সীতাকুণ্ডের কণ্যা খাল দখলে দূষণে বিধ্বস্ত

বিশেষ প্রতিবেদক ।।

সীতাকুণ্ডের কুমিরা ইউনিয়নের দুইশত বছরের পুরোনো কণ্যা খালটি এখন দখলে দূষণে বিধ্বস্ত প্রায়।৮ ফুট প্রস্থ ও ৫.৩ ফুট গভীরের খালটি একেবারেই সংকুচিত হয়ে এসেছে। খালের দু’পাড় ভরাট হয়ে খালটি সরু ড্রেনে পরিণত হয়েছে।

কুমিরা ইউনিয়নের রাজাপুর,আলেকদিয়া,জেলেপাড়া,কোটপাড়া ও লোহারপুল এলাকা হয়ে খালটি সাগরে গিয়ে পড়েছে।পাহাড়ি ঝরণা ও বৃষ্টির পানি প্রবাহিত হয়ে কণ্যা খাল দিয়ে সাগরে গিয়ে জমা হয়।খালটির সঙ্গে আশেপাশের দশটি গ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন জড়িত রয়েছে। এসব এলাকার বৃষ্টির পানি সমুদ্রে পতিত হওয়ার একমাত্র পথ এই কণ্যা খাল।কিন্তুু খালটি বর্তমানে দখল ও দূষণে নিমজ্জিত হয়ে বিলীন হওয়ার পথে।

১২ জুলাই রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় খালটি নিস্প্রাণ হতে চলেছে। জোয়ারের পানি আটকানোর জন্য খালটির সমুদ্র সম্মুখে একটি সুইস গেটও রয়েছে। কিন্তুু সেই সুইস গেটটিও নির্দিষ্ট মহল ভেঙে ফেলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খাল সংলগ্ন এলাকায় গড়ে তুলেছে শিপ ইয়ার্ড প্রতিষ্ঠান।এরপর জায়গাটির রদবদল হয়েছে কয়েকটি কতৃপক্ষের কাছে।আর এসব কতৃপক্ষ নিজেদের ব্যবসার সুবিধার্থে খালটি সময় সুযোগ বুঝে নানাভাবে দখলে নিয়েছে। ভরাট করেছে খালের বেশির ভাগ জায়গা।মালামাল আনা নেওয়ার সুবিধার্থে খালের উপর নিমার্ণ করা হয়েছে একটি ব্রিজও।আর এসব শিপ ইয়ার্ডের লোহার জং পড়ে দূষিত হচ্ছে খালটি।সম্প্রতি এই জায়গায় খালটি পূর্ণ দখলে নিয়ে শিপ ইয়ার্ড তৈরির অভিযোগ উঠেছে একটি ইস্পাত তৈরি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। পুরোনো সুইসগেট আর ভরাট হওয়া খালের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা এমন প্রশ্নের উদ্বেগ হচ্ছে জনমনে।খালটি ভরাট ও দখলের ফলে ঐ এলাকার ১০ টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। প্লাবিত হয়ে কৃষি জমির ফসলাদি ও ঘরবাড়ি ডুবির সম্ভাবনা শতভাগ।এসবের ফলে এলাকার মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সরকারি দপ্তরে লিখিত নোটিশও দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন,খালের সম্মুখভাগের সুইস গেটটি অবস্থানরত ইয়ার্ড কোম্পানি দখলে নিয়ে ভেঙে ফেলেছে। বর্তমানে খালের বড় একটি অংশ বিলীন হওয়ার পথে।

স্থানীয়রা জানান, কণ্যা খালটি দশ গ্রামের পানি চলাচলের একমাত্র উপায়।কিন্তুু খালটি ভরাট হয়ে বিলুপ্তির পথে।পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে।

তবে অভিযুক্ত শিপইয়ার্ডের মালিক কামাল পাশা জানান,তিনি পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রেখেই শিপইয়ার্ড নির্মাণ করবেন।তিনি খাল দখল করবেন না বলেও জানান।

শুধু দখল ও দূষণ নয় কণ্যা বা নাপিত্তা নামক খালটির সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের হেয়ালিপনাও কম নয়।বাপাউবো থেকে খাল সংস্কার ও দখল উদ্বারে নেওয়া হয়নি কোন উদ্যোগ।যার দরুণ দখলকৃত খালটি উদ্বার ও সংস্কারের অভাবে জনদূর্ভোগ আরো প্রকট হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড এর উপ বিভাগীয় দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী  আবু বক্কর জানান,আমি খাল দখল ও সুইস গেটের বিষয়টি সম্পর্কে জানিনা।এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নিবো বলে জানান তিনি। যা সম্পূর্ণ হেয়ালিপনার সামিল।