সীতাকুণ্ডে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ট্রান্সপোর্ট ব্যবসা, হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি টাকা

সীতাকুণ্ডে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ট্রান্সপোর্ট ব্যবসা, হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি টাকা

বিশেষ প্রতিবেদক।।

নামসর্বস্ব ভুয়া ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে সীতাকুণ্ডে প্রতিদিন অবৈধভাবে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শীপ ব্রেকিং ইয়ার্ড ও স্টীল মিলস্‌ সেক্টরে পরিবহনের অবৈধ ট্রান্সপোর্টের দৌরাত্না নিয়ে মালিক ও পরিবহণ শ্রমিকদের মাঝে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

একটি নামসর্বস্ব চালান বই ছাপিয়ে ট্রাক/কাভার্ডভ্যান মালিক ও শ্রমিকদের কাছ থেকে একটি চক্র এক প্রকার জোরপূর্বক কোটি কোটি হাতিয়ে নিচ্ছে বলে একাধিক ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক এবং চালক অভিযোগ জানিয়েছে।  নামসর্বস্ব এসব ট্রান্সপোর্টের বৈধ সরকারী কোন কাগজপত্র নেই। একটি সিন্ডিকেট অবৈধভাবে ভূয়া ট্রান্সপোর্টেরর চালান বই ছাপিয়ে প্রতিদিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

বৈধ ট্রান্সপোর্টের নির্ধারিত কমিশন হচ্ছে গাড়ি প্রতি ৮শত টাকা। বর্তমানে একেক ট্রান্সপোর্ট নিজেদের ইচ্ছেমতো একেক ধরণের কমিশন আদায় করছে। যার পরিমান ৮ হাজার ৫শত টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ট্রান্সপোর্টের একটি সরকারী নীতিমালা থাকলেও তা মানছে না উক্ত সিন্ডিকেট চক্রটি। ফলে ট্রাক্য/কাভার্ডভ্যান মালিক ও চালকরা তাদের ন্যায্য ভাড়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

জানা যায়, সীতাকুণ্ড শীপ ব্রেকিং ইয়ার্ড ও স্টীল মিলস্‌ থেকে একটি ট্রাক মাল পরিবহণ করে ঢাকা গেলে তাদের ভাড়া আসে ২২/২৩ হাজার টাকা। সেই টাকা থেকে সিন্ডিকেট চক্রটি গাড়ি প্রতি ৮থেকে ১০ হাজার টাকা কেটে নেয় সম্পুর্ণ নিয়মবহির্ভূতভাবে। সীতাকুণ্ডের ইয়ার্ড ও স্টীল মিলস্‌ থেকে প্রতিদিন ৫শতের উপর ট্রাক মালামাল পরিবহণ করে থেকে। এই ৫শ ট্রাক থেকে চক্রটি গাড়ি প্রতি ১০ হাজার টাকা করে নিয়ে প্রতিদিন যার পরিমাণ দাঁড়ায় কোটি টাকার উপরে।

এব্যাপারে তেজগাঁও ট্রাক -কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সদস্য ইব্রাহিম খলিল নিশান বলেন, শীপ ব্রেকিং ইয়ার্ড থেকে মালামাল পরিবহন করার ক্ষেত্রে ট্রান্সপোর্ট মার্কেট হিসাবে প্রতি চালান তাদের ভাড়া উঠে ২২ থেকে ২৩ হাজার টাকা। কিন্তু একটি সিন্ডিকেট অবৈধ ট্রান্সপোর্টের দৌরাত্নের কারণে ভাড়া পাচ্ছে ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা। প্রতি গাড়ি থেকে তারা কেটে নিচ্ছে ১০ হাজার টাকা করে। একটি গাড়ি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা গেলে ১৩ হাজার টাকাতে কোন মতেই পুশানো যায়না। বড় একটি সিন্ডিকেট চক্র আমাদের ন্যায্য ভাড়া থেকে আমাদের বঞ্চিত করছে। এমতাবস্থায় গাড়ির ব্যবসাটা আমাদের জন্য বুঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে আমরা ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতি বরাবরে অভিযোগ দিয়েছি।

রাকিবুল আলম নামের আরেক ট্রাক মালিক বলেন, আমরা ট্রাক ও শ্রমিকরা সরকারের কাছে এই সেক্টরে নির্দিষ্ট নীতিমালা চাই এবং এই সকল অবৈধ ট্রান্সপোর্ট বন্ধে করে বৈধভাবে ট্রান্সপোর্ট প্রতিষ্ঠা করা হউক। এতে করে ট্রাক মালিক ও শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য ভাড়া পাবে।

এদিকে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঔই ট্রান্সপোর্ট চক্রের সদস্য শামীম আহমদ অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আসলে ট্রান্সপোর্টের কমিশনের বিষয়টি লাগামহীনভাবেই চলছে। যার যেমন ইচ্ছা তেমন ভাবেই কমিশন আদায় করছে। বেশ কয়েকটি নতুন নতুন ট্রান্সপোর্ট হয়েছে তারা অতিরিক্ত কমিশন আদায় করছে। এটা যাতে সহনীয় পর্যায়ে আসে এবং অতিরিক্ত কমিশন নেওয়া বন্ধ হয় তা নিয়ে আমরা কাজ করছি। ভাড়া নিয়ে যারা দালালী করে তাদেরকে সাথে নিয়ে আমরা একটা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।