সীতাকুণ্ডে শেষ মুহূর্তে জমজমাট প্রচারণা, প্রার্থীরা ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে
সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি ।।
প্রথম দিকে তেমন নির্বাচনী আমেজ না থাকলেও শেষ মুহূর্তে কাউন্সিলরদের প্রচারণায় জমজমাট হয়ে উঠেছে সীতাকুন্ড পৌর এলাকা। প্রথম ধাপে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একমাত্র পৌরসভার নির্বাচন ২৮ ডিসেম্বর।
প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পৌরসভার অলি গলিতে প্রার্থীদের প্রচারণা চলছে।প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। প্রতিটি পাড়া মহল্লায় ঝুলছে পোস্টার। ভোটারদের বাড়িতে গিয়ে নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম দলীয় নেতাকর্মী ও ভোটারদের নিয়ে উঠান বৈঠক ও মতবিনিময় করছেন। তবে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতায় মাঠে নামতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন বিএনপির প্রার্থী (ধানের শীষ প্রতীক) বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মুনছুর। তবে যে কোনো ধরনের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে নির্বাচন অফিস।
এ নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন তিনজন। এরা হলেন আ. লীগের একক প্রার্থী বর্তমান মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম, বিএনপি প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মুনছুর ও নাগরিক কমিটির প্রার্থী বিএনপি সমর্থক জহিরুল ইসলাম।
এ হিসেবে আওয়ামীলীগের একজন প্রার্থী হলেও বিএনপির নেতা ও সমর্থক দুইজন নির্বাচনে দাঁড়ানোয় মেয়র পদে আ. লীগ তুলনামূলকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। কিন্তু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে কাউন্সিলর পদে। পৌরসভার ৯টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ৩টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগ থেকে প্রার্থী হয়েছেন ৬৩ জন। অন্যদিকে প্রত্যেক ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী আছে মাত্র একজন করে। ফলে কাউন্সিলর পদে আ. লীগ একক প্রার্থী নিশ্চিত করতে না সুবিধা পাবে বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থীরা। এ কারণে দুশ্চিন্তায় আছে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ।
পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড এলাকার তানজিবুল কবির নামে এক ভোটার বলেন, এ বছর প্রথম ভোটার হয়েছি। তবে এর আগের নির্বাচনগুলোও দেখেছি। অনেকেই নির্বাচনের আগে নানা ধরনের আশ্বাস দেন, কিন্তু ভোটে জেতার পর আর কোনো খোঁজ খবর নেন না। তাই এবার বুঝে শোনে সৎ প্রার্থীকে ভোট দিব।
ইদিলপুর এলাকার দিনমজুর আব্দুল হক মিয়া বলেন, নির্বাচন এলে কাউন্সিলর-মেয়র প্রার্থীদের দেখা যায়। নির্বাচন শেষ হলে আর দেখা মিলে না। ফলে আমাদের ভোটের প্রতি দিন দিন অনীহা জন্মাচ্ছে।
বিএনপির মেয়র প্রার্থী আবুল মুনছুর বলেন, আমার নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দেয়া হচ্ছে। আমার কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আমার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। আমি নির্বাচন অফিসে লিখিত অভিযোগ করেছি। ভোটাররা ভোট দিতে পারলে আমি জয় লাভ করব।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম বলেন, বিএনপির কাছ থেকে ভোটাররা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বলে তারা আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এর আগেও পৌরবাসীর ভালোবাসায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। আশা করছি এবারও তারা আমাকে হতাশ করবে না।
সীতাকুণ্ড পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার বুলবুল আহমেদ বলেন, কিছু কিছু প্রার্থী আমার কাছে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ করেছেন। আমি সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এছাড়া পৌরসভার নির্বাচনের জন্য প্রশিক্ষণ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছি এবং নির্বাচনের সকল মালামাল নির্বাচন অফিসে এসে পৌঁছেছে।