সিগারেটে ৬ ধরনের বিষাক্ত ধাতু

সিগারেটে ৬ ধরনের বিষাক্ত ধাতু

শাহনেওয়াজ ।।

ধূমপায়ীদের জন্য অশনি সঙ্কেত। এমনিতে সিগারেটের ক্ষতিকরের বিষয়টি সবারই কম-বেশি জানা রয়েছে। এরপরও অনেকে ধূমপান ত্যাগ করতে পারেন না। কিন্তু যারা ধূমপান করেন তারা হয়তো জানেন না, কি অশনি সঙ্কেত তাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। আর অশনি সঙ্কেতের আভাস দিয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। তাদের অশনি সঙ্কেতে ধরা পড়েছে দেশে উৎপাদিত বেনসন, গোল্ডলিফসহ ৬ ধরনের সিগারেটের মধ্যে হেভি মেটাল অর্থাৎ ভারী ধাতু পাওয়া গেছে। আর এই ধাতু শুধু ধূমপায়ীদের জন্য নয়, যারা এই ধূমপায়ীদের পাশে থাকবে তাদের জন্য স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করছে।  এ ব্যাপারে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. রেজাউল করিম মঙ্গলবার জানান, আমরা এই  সিগারেট নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে কাজ করেছি। কাজের মধ্যে কিছু প্রমাণের আভাস পাওয়া গেছে। আমরা পরীক্ষা করার জন্য সায়েন্স ল্যাবটেরিতে পাঠাই। পরীক্ষা শেষে প্রমাণ পাওয়া গেছে, বাংলাদেশে তৈরি সিগারেটের মধ্যে হেভি মেটাল পাওয়া গেছে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হতে পারে।

এদিকে সায়েন্স ল্যাবটেরি পরীক্ষা করার পর একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কাছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশে উৎপাদিত বেনসন, গোল্ডলিফ, স্টার, নেভি, হলিউড, ডারবি ব্র্যান্ডের সিগারেটের তামাকে লেড, ক্যাডমিয়াম ও ক্রোমিয়ামের মতো ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। অথচ তামাকের মধ্যে হেভি মেটাল থাকার কোনো সুযোগ নেই। এধরনের মেটাল প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ধূমপায়ীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ। ল্যাব টেস্টের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ছয়টি ব্র্যান্ডের সিগারেটের মধ্যে ০.৪৯-১০০.৯৫ গ্রাম বা কেজি লেড পাওয়া গেছে। পাশাপাশি ০.৪০৫-১.৩৭ গ্রাম বা কেজি ক্যাডমিয়াম ও ০.৮২-১.৪৯ গ্রাম বা কেজি ক্রোমিয়ামের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

এই প্রতিবেদনের রিপোর্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে খাদ্য নিরাপদ কর্তৃপক্ষ এ রিপোর্টের ভিত্তিতে বেশকিছু সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, বাজার থেকে পর্যায়ক্রমে এসব ব্র্যান্ডের সিগারেট তুলে নেওয়া। একই সঙ্গে সিগারেট উৎপাদনকারীদের সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া।

এর আগে হাকিমপুরি, শাহজাদি ও রতন জর্দাসহ দেশের ২২টি জর্দা, খয়ের ও গুলে বিষাক্ত হেভি কেমিক্যাল লেড, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম খুঁজে পায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। এগুলো দীর্ঘদিন ধরে খাওয়ার কারণে দাঁতের মাড়ি ও লিভার ক্যানসারের মতো জটিল রোগ হয়। এসব উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করে বিএফএসএ। একই সঙ্গে এসব জর্দা বাজার থেকে তুলে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে পণ্যগুলো বাজার থেকে তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন।