লকডাউন আইন কি ? কতটুক প্রয়োগ হচ্ছে এ দেশে ?

লকডাউন আইন কি ? কতটুক প্রয়োগ হচ্ছে এ দেশে ?

রহিম উদ্দিন।।

লকডাউন আইন । আপনি হয়তো জেনে অবাক হবেন,এই দেশেও সংক্রামক রোগের জন্য আলাদা একটা আইন তৈয়ার আছে! কেউ জানেন সে আইন কোথায় আছে? কেমন আছে?

আসুন, সেই আইনের কিছু অংশ জেনে নিই।

সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন ২০১৮।

এই নামে আইন আছে, আইননের প্রয়োগ কতটুকু? শাস্তি কী?

শুধুমাত্র, সংক্রামক রোগের বিস্তার এবং তথ্যগোপনের অপরাধ ও দণ্ড সমূহ নিচে তুলে ধরলাম!

ধারা-২৪। (১)
যদি কোনো ব্যক্তি সংক্রামক জীবাণুর বিস্তার ঘটান বা বিস্তার ঘটিতে সহায়তা করেন, বা জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও অপর কোনো ব্যক্তি সংক্রমিত ব্যক্তি বা স্থাপনার সংস্পর্শে আসিবার সময় সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়টি তাহার নিকট গোপন করেন তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।

ধারা-২৪।(২)
যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনূর্ধ্ব ৬ (ছয়) মাস কারাদণ্ডে, বা অনূর্ধ্ব ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান ও নির্দেশপালনে অসম্মতি জ্ঞাপনের অপরাধ ও দণ্ড সমূহ-

ধারা-২৫। (১)
যদি কোনো ব্যক্তি-
(ক) মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তাহার উপর অর্পিত কোনো দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বাধা প্রদান বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন, এবং

(খ) সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলের উদ্দেশ্যে মহাপরিচালক, সিভিল সার্জন বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কোনো নির্দেশ পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করেন,

তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।

ধারা-২৫।(২)
যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) মাস কারাদণ্ডে, বা অনূর্ধ্ব ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

মিথ্যা বা ভুলতথ্য প্রদানের অপরাধ ও দণ্ড সমূহ-

ধারা-২৬ । (১)
যদি কোনো ব্যক্তি সংক্রামক রোগ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বা ভুল তথ্য প্রদান করেন তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।

ধারা-২৬।(২)
যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনূর্ধ্ব ২ (দুই) মাস কারাদণ্ডে, বা অনূর্ধ্ব ২৫ (পঁচিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

ফৌজদারী কার্যবিধির প্রয়োগ:

ধারা-২৭
এই আইনের অধীন সংঘটিত কোনো অপরাধের অভিযোগ দায়ের, তদন্ত, বিচার ও আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যবিধির বিধানাবলি প্রযোজ্য হইবে।

অপরাধের অ-আমলযোগ্যতা, জামিনযোগ্যতা ও আপোষযোগ্যতা:

ধারা-২৮
এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধসমূহ অ-আমলযোগ্য (Non-cognizable), জামিনযোগ্য (Bailable)এবং আপোষযোগ্য (Compoundable)হইবে।

এখন বলুন, এই আইনের প্রয়োগ হয়? কতটুকু? তাই সংশয় নিয়ে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হয়, কেমন আছো আমার লকডাউন আইন? উল্লেখ্য, পুরো আইন পড়লেই বুঝতে পারবেন, এই আইন লকডাউন আইন। আসুন, আইন জানি, নিয়ম মানি।


কবি ও প্রাবন্ধিক