মুয়াজ্জিনের মর্যাদা আল্লাহর নিকট অপরিসীম , মুয়াজ্জিন ও আজানের তাৎপর্য

মাওলানা দৌলত আলী খান ।।

মুয়াজ্জিনের মর্যাদা আল্লাহর নিকট অপরিসীম , মুয়াজ্জিন ও আজানের তাৎপর্য

মুয়াজ্জিন বলা হয় যিনি আজান দেন তাকে। একজন মুয়াজ্জিনের মর্যাদা আল্লাহর নিকট অপরিসীম। যে ব্যক্তি সাত বছর আজান দেবেন তাকে আল্লাহ তায়ালা জাহান্নামের আগুন থেকে অবশ্য মুক্তি দেবেন এবং ক্ষমা করে দেবেন। এ মহা পুরস্কার একমাত্র মুয়াজ্জিনদের জন্য। এ ছাড়াও মুয়াজ্জিন হলো একজন আমানতদার। কারণ মুয়াজ্জিন ঠিক সময়ে আজান দিলেই মানুষের নামাজ ঠিক সময়ে পড়া হয় এবং ইফতার ঠিক সময়ে করা যায়।
এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সাত বছর শুধু সওয়াবের নিয়তে আজান দেবে, তার জন্য দোজখের আগুন থেকে মুক্তি অবধারিত।’ (তিরমিজি : ২০৬)। রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘ইমাম হলো নামাজের জামিনদার (দায় বহনকারী) আর মুয়াজ্জিন হলো আমানতদার। আল্লাহ তুমি ইমামদের ঠিক পথে চালাও এবং মুয়াজ্জিনদের ক্ষমা করে দাও।’ (তিরমিজি: ২০৭)
মুয়াজ্জিন নামাজের নির্ধারিত ওয়াক্তে আজান দিয়ে থাকেন। আবার জামাত শুরুর আগে নামাজের ইকামত দিয়ে থাকেন। উভয়টি নামাজে আসা ও জামাত শুরু করার ঘোষণার নিমিত্তে দেওয়া হয়। আজানের ধ্বনিতে মুমিনদের অন্তর প্রশান্তি লাভ করে।
সবাই কাজ-কর্ম ছেড়ে মসজিদের দিকে ছুটে যায়। কিন্তু আজানের ধ্বনির সঙ্গে সঙ্গে শয়তান বায়ু ত্যাগ করতে করতে পালিয়ে যায়। এমনকি আজান সম্প্রচারিত এলাকা ছেড়ে বহু দূরে চলে যায়। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন নামাজের আজান দেওয়া হয় তখন শয়তান বায়ু ত্যাগ করতে করতে এত দূরে চলে যায়, যেখান থেকে আজান শোনা যায় না। আজান শেষ হলে আবার ফিরে আসে। ইকামত বলার সময় আবার দূরে চলে যায়। ইকামত শেষ হলে মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দেওয়ার জন্য আবার ফিরে আসে। যেসব কথা মনে নেই শয়তান এসে সেসব কথা স্মরণ করতে বলে। শয়তান এভাবে কুমন্ত্রণা দিতে থাকেÑ ‘সেই কথাটি স্মরণ কর, ওই বিষয়টি মনে কর।’ এর ফলে একজন নামাজি কত রাকাত নামাজ পড়েছে তা তখন আর তার স্মরণ থাকে না।’ (বুখারি : ৬১০)
তবে আজান ও ইকামতের মধ্যকার সময়টি দোয়া কবুল হওয়ার সময়। এই সময় দোয়া করলে ফেরত দেওয়া হয় না। তাই এ সময় নিজের যাবতীয় প্রয়োজনীয় বিষয়ে আল্লাহর নিকট কায়মনোবাক্যে দোয়া করা উচিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া আল্লাহর দরবার থেকে ফেরত দেওয়া হয় না।’ (তিরমিজি : ২১২)

লেখক : শিক্ষক, নাজিরহাট বড় মাদ্রাসা, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম