ভারত - বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

ভারত - বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য
ভারত - বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য
 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সরকারের আমন্ত্রণে এই মুহুর্তে অবস্থান করছেন ভারতে। ভারত সরকার নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে তিনি ভারত সফরে যান। সফরকালীন তিনি কয়েকটি চুক্তিও সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।

শনিবার (৫ অক্টোবর) নয়াদিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে তিনটি প্রকল্প উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানান আমন্ত্রন জানানোর জন্য।

তিনি বলেছেন, দুই দেশের এ সম্পর্কের শুভ সূচনা হয়েছিল ১৯৭১ সালে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের জনগণ ও সরকারের অপরিসীম অবদানের কথা আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তা মাইলফলক হয়ে থাকবে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশ্ব সম্প্রীতিতে অনন্য নজির।

ভারত সরকারের আর্থিক অনুদানে বাংলাদেশে নির্মিত রামকৃষ্ণ মিশনের বিবেকানন্দ ভবন ছাত্রাবাসের শুভ উদ্বোধনে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত। রামকৃষ্ণ মিশন বাংলাদেশের শিক্ষা বিস্তারে অনন্য ভূমিকা পালন করছে।

প্রতি বছর অসংখ্য শিক্ষার্থী এ প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন খাতের উন্নয়নেও এ প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুলনায় ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সে স্থাপিত বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের উন্নতমানের যন্ত্রপাতি ওই অঞ্চলের ক্ষুদ্র-মাঝারি প্রতিষ্ঠানকে নানা ধরনের সেবা দেওয়ার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে ভূমিকা রাখবে।

এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিন শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। বিআইপিএসডিআই এ অঞ্চলের নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে তাদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে এলপিজি রপ্তানির সিদ্ধান্ত দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে। এর ফলে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর জ্বালানি চাহিদা পূরণ সহজ হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিগত এক দশকে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন প্রথাগত খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন নতুন ও অপ্রচলিত খাত; যেমন- ব্লু ইকোনমি ও মেরিটাইম, পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, মহাকাশ গবেষণা, ইন্টারনেট ব্যান্ডউইড্থ রপ্তানি, সাইবার সিকিউরিটি ইত্যাদি খাতে উভয় দেশ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

এসব বহুমুখী ও বহুমাত্রিক সহযোগিতার ফলে আমাদের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিশ্ববাসীর সামনে সু-প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। ভবিষ্যতেও এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করেন তিনি।

এর আগে, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যৌথভাবে খুলনায় অবস্থিত ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইনজিনিয়ার্সে বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিআইপিএসডি); রামকৃষ্ণ মিশন, ঢাকায় বিবেকানন্দ ভবন উদ্বোধন ও বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় এলপিজি আমদানি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও পানিসম্পদ বিষয়ে ছয়টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে দুই দেশের মধ্যে।

বিকেলে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে দেশটির রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেলে সফরকালীন আবাসস্থল হোটেল তাজমহলে এক অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে ‘ঠাকুর শান্তি পুরস্কার’ দেবে এশিয়াটিক সোসাইটি। ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন তিনি।