বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধন শেষ হলো জমকালো আয়োজনে

বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধন শেষ হলো জমকালো আয়োজনে
বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধন শেষ হলো জমকালো আয়োজনে

ক্রীড়া ডেস্ক ।।

বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) উদ্বোধন অনুষ্ঠান জমকালো আয়োজনে শেষ হলো । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিপিএল উদ্বোধন করেন। এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষ হয় বলিউড সুপারস্টার সালমান খান ও ক্যাটরিনা কাইফের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। আর এই ফাঁকে গান পরিবেশন করেন মমতাজ, জেমস, সনু নিগম, কৈলাস খের প্রমুখ।

গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করা এই টুর্নামেন্ট।

প্রধানমন্ত্রী উদ্ধোধনী ভাষণে বলেন, ‘সকলকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে, টুর্নামেন্ট সফল হোক, স্বার্থক হোক এবং উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সফলতা কামনা করে আমি বঙ্গবন্ধু বিপিএল-২০১৯ এর উদ্বোধন ঘোষণা করছি।’

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই রকমারি আতশবাজির রোশনাইতে মিরপুরের আকাশ ছেয়ে যায়। ক্রিকেটের আলো যেন ছড়িয়ে পড়ল পুরো দেশে।

শীত তখনও জেকে বসেনি। মিরপুরে ডিসেম্বরের সন্ধ্যায় তখনও জেমস এসে পৌঁছাননি। ক্রিকেটের সমর্থকেরা আগেভাগে আসন দখল করেছেন। ব্যস্ত নগরীর উৎসুক দর্শক তখন জ্যাম ঠেলে এসে আসতে পারেননি। পুরো মিরপুর নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা ছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যই এতো কড়াকড়ি। অবশ্য এতে করে কোনো সমস্যা হয়নি। বিকেলে চাপ না থাকলেও সন্ধ্যার পর মিরপুরের গ্যালারি ভরে গেছে ক্রীড়াপ্রেমী সমর্থকদের উপস্থিতিতে।

রেশমি মির্জার ‘কমলা নৃত্য করে থমকিয়া থমকিয়া’ বিভোর হয়ে শুনলেন শ্রোতারা। এরপরেই আসেন ‘গুরু’ খ্যাত জেমস। ‘সুলতানা বিবিয়ানা, সাহেব বাবুর বৈঠকখানা’ গাওয়া শেষ হতেই প্রধানমন্ত্রী এসে পৌঁছান। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন স্বাগত জানান শেখ হাসিনাকে। স্বাগত বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটের খোঁজখবর নেন। কিছুক্ষণ তিনি অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।

ভারতের বিখ্যাত গায়ক সনু নিগমের ‘ধনধান্যে পূস্পেভরা আমাদের এই বসুন্ধরা’ গাইছিলেন। প্রধানমন্ত্রীও এতে ঠোঁট মেলান। ডিএল রায় এই গানটির সুরকার ও গীতিকার ছিলেন। হিন্দি গানের শিল্পি হলেও বাংলাতেও তিনি কম যান না। এরপর সনু চমক উপহার দেন, ‘বাংলাদেশ, আমার বাংলাদেশ’ গেয়ে। সবাই প্রত্যাশা করেছিলেন সনু হয়তো হিন্দিতে গাইবেন। তবে তিনি চমকেই দিলেন সবাইকে শুরুতে। পরে অবশ্য তিনি জনপ্রিয় অনেক হিন্দি গানও করেছেন।

সনু নিগমের পর লেজার শো ছিল। এর আগে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তৈরী স্বল্পদৈর্ঘ্যরে চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। লেজার হয়ে যাওয়ার পর ভারতের আধ্যাতিক গানের শিল্পী কৈলাস খের আসেন। এর মূল আকর্ষণ ছিল সালমান খান ও ক্যাটরিনা কাইফ। রাত যতই বাড়ছিল ক্রিকেটপ্রেমীরা যেন রোমাঞ্চিত হয়ে পড়ছিল। বলিউড তারকা সালমান খান ও ক্যাটরিনা কাইফের জন্য অপেক্ষা শেষ হয় রাত ৯টার পর। তুমুল উচ্ছ্বাসে পুরো মিরপুর উপভোগ করেন সালমান ক্যাটরিনার পারফরম্যান্স। রাত যত গভীর হয়েছে মিরপুর প্রাণের উচ্ছ্বাস কোরাসে গেয়েছে, নেচেছে মনের আনন্দে।

রাত তখন দশটার কাছাকাছি। কৈলাসের ‘তেরে দিওয়ানী’ শ্রোতাদের মনের কোনে দোলা দিয়ে যাচ্ছে। এমন রাতে সালমান-ক্যাটরিনার জন্য রোমাঞ্চকর অপেক্ষা। সালমান ভক্ত এক নারী বেরসিক নিরাপত্তা-রক্ষীর মন গলাতে ব্যর্থ হলেও। কয়েক হাজার শ্রোতা-দর্শককে আনন্দে ভাসিয়েছেন দাবাং খ্যাত সালমান। শিলা কি জাওয়ানি থেকে শুরু করে সালমানের ‘ও,ও জানে জানা’ গানে দর্শকরা বিনোদিত করেছে। সালমান ও ক্যাটরিনা মঞ্চে এসে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলেছেন। বাংলা ভাঙা ভাঙা উচ্চারণে হলেও , সালমান বলেছেন- ‘আমি তোমাদের ভালোবাসি। দুই উপস্থাপক জুয়েল ও সঙ্গীতা বাংলা শিখিয়ে দিয়েছেন তাকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্যাটরিনা বলেছেন, ‘আমি আপনাকে দেখে বিমোহিত। আপনাকে ভালবাসি। বাংলাদেশকে ভালবাসি।’

বিপিএলে এবার ৭টি দল অংশগ্রহণ করবে। ১১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে আসর চলবে ১৭ জানুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত। ঢাকা ছাড়াও সিলেট ও চট্রগ্রামে প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে।