পেঁয়াজ পঁচছে টিসিবির গুদামে , ৩০ শতাংশ পেঁয়াজই পঁচা পাচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা

পেঁয়াজ পঁচছে টিসিবির গুদামে , ৩০ শতাংশ পেঁয়াজই পঁচা পাচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা
পেঁয়াজ পঁচছে টিসিবির গুদামে , ৩০ শতাংশ পেঁয়াজই পঁচা পাচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা

পোস্টকার্ড প্রতিবেদেক ।।

বিমানে করে উড়ে নিয়ে আনা হয়েছে পেঁয়াজ। অথচ সে পেঁয়াজই ঠিকমত সংরক্ষণ করতে না পারায় পঁচে যাচ্ছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গোডাউনে। টিসিবির খোলা ট্রাকে বিক্রি করা ৩০ শতাংশ পেঁয়াজই পঁচা পাচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা। অর্থাৎ, এক কেজি পেঁয়াজের মধ্যে ৩শ গ্রাম পঁচা পেঁয়াজ পঁচা।  এমন অভিযোগ এসেছে চট্টগ্রামের ক্রেতাদের কাছ থেকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পঁচা পেঁয়াজ বিক্রি করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন টিসিবির ডিলাররাও। কয়েক জায়গায় ক্রেতাদের সঙ্গে ডিলারের নিয়োগকৃত কর্মচারীদের হাতাহাতিও হয়েছে। ডিলারদের বক্তব্য, প্রতিদিন ২শ  থেকে ৩শ কেজি পেঁয়াজ নষ্ট পাচ্ছেন তারা।

টিসিবির চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান জামাল উদ্দিন আহমেদও পেঁয়াজ পঁচে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, 'পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা খুব কঠিন। মিসর ও তুরস্ক থেকে আসা পেঁয়াজের মান ভালো। কিন্তু পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় আমরা গুদামে ভালোভাবে তা সংরক্ষণ করতে পারছি না। সীমিত জনবল দিয়ে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। তারপরও হয়তো কিছু পেঁয়াজ নষ্ট হচ্ছে। ডিলাররা যতটা দাবি করছে, নষ্ট পেঁয়াজের পরিমাণ অতটা হবে না।'

পঁচা পেঁয়াজ নিয়ে ক্রেতাদের পাশাপাশি ডিলাররাও বিপাকে। ডিলার মোহাম্মদ ইউছুফ বলেন, 'টিসিবি থেকে পেঁয়াজ এনে প্রতিদিনই ক্রেতাদের গালাগাল শুনতে হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে তারা যদি এক কেজি পেঁয়াজের মধ্যে ৩০০ গ্রামই পচা কিংবা নষ্ট পান, তাহলে তারা তো ক্ষুব্ধ হবেনই।’

প্রসঙ্গত, টিসিবির বিক্রি করা পেঁয়াজ আনা হয়েছে বিমানপথে কিংবা সমুদ্রপথে। সমুদ্রপথে মিসর ও তুরস্ক থেকে আনা হয় রেফার্ড কনটেইনারে। এটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিশেষায়িত কনটেইনার। ৪০ ফুট দীর্ঘ একটি কনটেইনারে সাধারণত ২৭ থেকে ২৮ টন পেঁয়াজ আনা হয়। কার্গো বিমানে আসা পেঁয়াজও থাকে বিশেষায়িত অবস্থায়। এ জন্য বিমান ও সমুদ্রপথে পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম। ব্যবসায়ীরাও বলছেন, মিয়ানমারের পেঁয়াজের গুণগতমান কিছুটা খারাপ থাকলেও মিসর কিংবা তুরস্কের পেঁয়াজ পচা থাকে না। কিন্তু টিসিবির ক্ষেত্রে ঘটছে উল্টো ঘটনা।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, টিসিবির গুদামেই এ পেঁয়াজ পঁচে নষ্ট হচ্ছে। তারা ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারছেন না।

পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক করতে চট্টগ্রামে ১৯ নভেম্বর থেকে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে টিসিবি। শুরুতে ছয়জন ডিলারকে ছয় টন বা ছয় হাজার কেজি পেঁয়াজ খোলা বাজারে বিক্রি করতে দেন তারা। ৩০ নভেম্বর থেকে এর পরিমাণ বাড়িয়ে দিনে ১০ টন করা হয়। ২ ডিসেম্বর থেকে আরেক দফা বাড়িয়ে পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় দিনে ১২ টন। এখন ১২ জন ডিলার নগরীর ১২টি পয়েন্টে প্রতিদিন নিয়ে যাচ্ছেন ১২ টন পেঁয়াজ।