প্রধানমন্ত্রীর ১০ বাস দিলেন নগরীর শিক্ষার্থীদের জন্য , যেখানেই নামুক ভাড়া মাত্র ৫ টাকা

প্রধানমন্ত্রীর ১০ বাস দিলেন নগরীর শিক্ষার্থীদের জন্য , যেখানেই নামুক ভাড়া মাত্র ৫ টাকা
প্রধানমন্ত্রীর ১০ বাস দিলেন নগরীর শিক্ষার্থীদের জন্য , যেখানেই নামুক ভাড়া মাত্র ৫ টাকা

পোস্টকার্ড প্রতিবেদক।।

চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুলে যাতায়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের বিআরটিসির ১০টি দ্বিতল বাস পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। নগরীর দুটি সড়কে ১০টি বাস মর্নিং ও ইভিনিং শিফটে চলবে। যেখানেই নামুক না কেন, শিক্ষক্ষার্থীদের ভাড়া গুনতে হবে মাত্র ৫ টাকা।

সম্ভাব্য আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে দ্বিতল বাসগুলো দুই সড়কে মর্নিং ও ইভিনিং শিফটে চলাচল করার কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন। তিনি বলেন, উদ্বোধন হওয়ার পর সরকারি-বেসরকারি স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বাসগুলোতে যাতায়াত করতে পারবে। স্কুলের পরিচয়পত্র দেখিয়েই তারা বাসে উঠতে পারবে। যেখানেই নামুক না কেন, ভাড়া মাত্র ৫ টাকা। ভাড়া পরিশোধও করতে হবে অভিনব পদ্ধতিতে। ভাড়া আদায়ের জন্য সুপারভাইজারের বদলে বাসের সামনে ও পিছনের অংশে দুটি বক্স থাকবে তালাবদ্ধ। ‘সততা বক্স’ নামের এই বক্সগুলোতে নিজের উদ্যোগেই ফেলতে হবে ওই ৫ টাকা। শিক্ষার্থীদেরকে নীতি-নৈতিকতা শিখানোর জন্য এটি একটি মহৎ উদ্যোগ। প্রত্যেক বাসে কমপক্ষে ১০০ জন শিক্ষার্থী উঠতে পারবে। দ্বিতল বাসের প্রতি ফ্লোরে একাধিক সিসি ক্যামেরা থাকবে এবং শিক্ষার্থীরা বাসে উঠে কি করছে তা একটি নির্দিষ্ট সফট্ওয়ারে নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে দেখা যাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ উদ্যোগ নেয়ার কারণে কার বা অন্যান্য প্রাইভেট গাড়ি করে সন্তানকে নিয়ে অভিভাবকদেরকে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে হবে না। এতে করে একদিকে যানজট কমবে, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন বলেন, চট্টগ্রামের স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী ১০টি বাস উপহার দিয়েছেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি বাসযাত্রা উদ্বোধন করতে পারেন। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি। তিনি সম্মতি দিলে দ্রুত তা করা হবে। আর প্রধানমন্ত্রীকে পাওয়া না গেলে শিক্ষা উপমন্ত্রীকে দিয়ে বাসগুলোর উদ্বোধন করা হবে বলে তিনি জানান।- বাসস

জানা যায়, শিক্ষার্থীদের জন্য ভাড়া পাঁচ টাকা করে রুট নির্ধারণ করে ওই বাবদ সাড়ে চার লাখ টাকা আয় হলেও ব্যয় হবে সাড়ে নয় লাখ টাকা। দোতলা বাসের চালক সংকট ও পরিবহন ব্যয়ের সংস্থান নিয়ে দীর্ঘ নয় মাস ঝুলে থাকে বাস চলাচলের বিষয়টি। বাস চালক-হেলপারের বেতন, জ্বালানী ও আনুষাঙ্গিক খরচ জেলা প্রশাসন, বিআরটিসি, জিপিএইচ ইস্পাত লি. ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অফিসার সমন্বয় করবে। ঘাটতি পূরণের জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জিপিএইচ ইস্পাতের সাথে মাসিক পাঁচ লাখ টাকা হারে বছরে এক কোটি ২০ লাখ টাকায় ২ বছরের জন্য একটি বিজ্ঞাপনের মাসিক চুক্তি করা হয়েছে।

বিআরটিসি চট্টগ্রাম ডিপোর ম্যানেজার (অপারেশনস) এম জে রহমান এবং জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলমাস শিমুলের মধ্যে গত ১৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ চুক্তি সম্পাদিত হয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. আবু হাসান সিদ্দিক জানান, ১ নং রুটের বাসগুলো বহদ্দারহাট থেকে ছেড়ে বাদুরতলা, মুরাদপুর, চকবাজার, গণি বেকারি, জামালখান, চেরাগী পাহাড়, আন্দরকিল্লা, কোতোয়ালী হয়ে নিউমার্কেট যাবে। একইভাবে নিউমার্কেট থেকে ছেড়ে কোতোয়ালী, আন্দরকিল্লা, জামালখান, চকবাজার, বাদুরতলা হয়ে বহদ্দারহাট যাবে।

অন্যদিকে ২ নং রুটের বাসগুলো অক্সিজেন, মুরাদপুর, ২ নং গেইট, জিইসি মোড়, ওয়াসা, টাইগারপাস হয়ে আগ্রাবাদ যাবে। একইভাবে আগ্রাবাদ, টাইগারপাস, ওয়াসা, জিইসি মোড়, ২ নং গেইট, মুরাদপুর হয়ে অক্সিজেন যাবে।

চট্টগ্রামের খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক সাহেলা খাতুন বলেন, বহদ্দারহাট থেকে মেয়েকে নিয়ে স্কুল এসে পুরো সময় স্কুলের সামনে বসে থাকি। স্কুল ছুটি হলে আবার মেয়েকে সাথে নিয়ে বাসায় ফিরি। রয়েছে অতিরিক্ত পরিবহন ব্যয় ও দুর্ঘটনার ঝুঁকিসহ নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

মহিউদ্দিন নামের আরেক অভিভাবক বলেন, হালিশহর থেকে মেয়েকে নিয়ে কষ্ট করে জামালখান খাস্তগীর স্কুলে দিয়ে অফিসে যাই। আবার ছুটির সময় এসে তাকে নিয়ে বাসায় ফিরি। বাস সার্ভিস চালুর ফলে দুর্ভোগ কমে আসবে। তবে চালুর পর সঠিক তদারকি করা দরকার।