পরিকল্পিত ডাস্টবিন না থাকায় সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৮টি দীঘিতে বর্জ্য ও ময়লার ভাগাড়!

পরিকল্পিত ডাস্টবিন না থাকায় সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৮টি দীঘিতে বর্জ্য ও ময়লার ভাগাড়!
পরিকল্পিত ডাস্টবিন না থাকায় সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৮টি দীঘিতে বর্জ্য ও ময়লার ভাগাড়!

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি।।

পরিকল্পিত ডাস্টবিন না থাকায় সীতাকুণ্ড পৌরসভা এলাকার মানুষ যত্রতত্র ময়লা-আর্বজনা ফেলছে। সুষ্টু নালার(ড্রেন) ব্যবস্থা না থাকা এবং বাসিন্দাদের অসচেতনতার কারণে পৌর এলাকার মধ্যে ৮টি বড় দীঘিতে বর্জ্য ও ময়লা ফেলায় পানির দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

স্থানীয় সুত্র জানায়, পৌরসদরের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে গজারিয়া দীঘি, বৃন্দার মা দীঘি, থানার দীঘি, জেলা পরিষদ লাল দীঘি, রেলওয়ে স্টেশন দীঘি, আমিরাবাদ দীঘি, শিবপুর দীঘি, নুনাছড়া দীঘি। এসব দীঘিতে মাছ বাজার, মাংসের বাজার, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বিভিন্ন কারখানা ও বাসা বাড়ির বর্জ্য ফেলা হয়। এতে করে এলাকার মানুষ এসব দীঘির পানি ব্যবহার করে এলার্জি ও শ্বাসকষ্টসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।জেলা পরিষদের লাল দীঘি নামে পরিচিত পুকুরে চারিপার্শ্বে সীতাকুণ্ড সরকারি স্কুল, আলীয়া মাদ্রাসাসহ কয়েকটি মসজিদ রয়েছে। মুসল্লীরা এই পুকুরের পানি দিয়েই অজু করে এবং পৌরসভার বড় বড় রেস্টুরেন্টগুলোতে ওই পানিই ব্যবহার করে। অথচ ১০/১২টির মত পায়খানার মল এই পুকুরের সাথে সংযোগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া পুকুরের সাথে লাগানো পৌরসভার একটি ডাস্টবিনের ময়লার অধিকাংশ এ পুকুরেই পড়ে।

সোবহানবাগ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম(৪০) ও আবুল হোসেন(৩৫) জানান, পৌরসভার নালা(ড্রেন) না থাকায় দীঘিসহ বিভিন্নস্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়। অনেকে তাদের গোসলখানা ও টয়লেটের বর্জ্য পানি পাইপলাইনের মাধ্যমে দীঘিতে ফেলছে। তবে বিপদে পড়ে এ পানি ব্যবহার করে চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে হচ্ছে। এতে শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেশি। এসব পুকুরে মশা বংশ বিস্তার করছে। আর দুর্গন্ধ তো আছেই।

পৌরসভার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতা দূর করে পুকুর-দীঘি ডোবাগুলো পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ৪৩ কিলোমিটার (ড্রেন) নালা প্রয়োজন। বর্তমানে পৌর এলাকার ১৫ কিলোমিটার নালা রয়েছে।

সীতাকুণ্ড পৌরসভার সচিব মো. নজরুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার মিনি ট্রাক দিয়ে ময়লা-আবর্জনা এনে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা হয়। এছাড়া যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা না ফেলার জন্য পৌরসভার জনগনকে সচেতন হতে হবে।

সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ বলেন, পুকুর-দীঘির দূষিত পানি পেটে গেলে আমাশয় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। আর মশাবাহিত ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং চর্ম রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

সীতাকুণ্ড পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব বদিউল আলম বলেন, পৌর এলাকায় প্রতিটি ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত ডাস্টবিন রয়েছে। পৌরসভার সংশ্লিষ্ট কর্মীরা প্রতিদিনই ময়লা-আবর্জনা ট্রাকে করে তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু বাসিন্দারা বসতঘরের ময়লা-আর্বজনা ডাস্টবিনে না ফেলে পুকুরে বা ডাস্টবিনের বাইরে ফেলে। যার কারনে পরিবেশ দুষণ হচ্ছে। এলাকার নাগরিকরা সচেতন হলেই পৌর এলাকার পরিবেশ অনেকটা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে।