পবিত্র আশুরা ১০ সেপ্টেম্বর , আজ হিজরি নববর্ষ শুরু

পবিত্র আশুরা ১০ সেপ্টেম্বর , আজ হিজরি নববর্ষ শুরু
পবিত্র আশুরা ১০ সেপ্টেম্বর , আজ হিজরি নববর্ষ শুরু

পহেলা মহররম আজ। ১৪৪০ হিজরি সনকে বিদায় জানিয়ে শুরু হলো ১৪৪১ হিজরি বর্ষের পথচলা। স্বাগত হিজরি নববর্ষ ১৪৪১। ইসলামের বিধিবিধান হিজরি সন ও চান্দ্র তারিখের সঙ্গে সম্পর্কিত। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসবসহ সব ক্ষেত্রেই মুসলিম উম্মাহ হিজরি সনের ওপর নির্ভরশীল। বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সংস্কৃতিতে ও মুসলমানদের জীবনে হিজরি সনের গুরুত্ব অপরিসীম।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দেশের আকাশে হিজরি ১৪৪১ সালের মহররম মাসের চাঁদ দেখা গেছে। তাই আজ রোববার থেকে পবিত্র এ মাসের গণনা শুরু হবে। সে হিসেবে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার উদযাপিত হবে পবিত্র আশুরা। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি শেখ মো. আব্দুল্লাহ।
মহররম শব্দের অর্থ সম্মানিত। ইসলামের ইতিহাসে এই মাসটি এমন কতগুলো উল্লেখযোগ্য স্মৃতিবিজড়িত, যে স্মৃতিসমূহের সম্মানার্থেই এই মাসকে মহররম বা সম্মানিত বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (দ.)-এর হিজরতের বছরকে ইসলামি সন গণনার প্রথম বছর ধরা হয়েছে বলে এটি হিজরি সন নামে পরিচিত। দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর (রা.)-এর খেলাফতের সময় ভূখণ্ড ইসলামি খেলাফতের অন্তর্ভুক্ত হয়।
আল্লামা শিবলি নোমানি (র.) সুপ্রসিদ্ধ আল ফারূক গ্রন্থে উল্লেখ করেন, হজরত উমর (রা.)-এর শাসনামলে ১৬ হিজরি সনের শাবান মাসে খলিফার কাছে একটি দাপ্তরিক পত্রের খসড়া পেশ করা হয়, পত্রটিতে সনের উল্লেখ ছিল না। দূরদৃষ্টিসম্পন্ন খলিফা বললেন, পরবর্তী কোনো সময়ে তা কীভাবে বোঝা যাবে যে এটি কোন সনে পেশ করা হয়েছিল? অতঃপর তিনি সাহাবায়ে কেরাম ও অন্যান্য শীর্ষ পর্যায়ের জ্ঞানী-গুণীদের পরামর্শে হিজরতের ১৬ বছর পর ১০ জুমাদাল উলা মুতাবিক ৬৩৮ খ্রিষ্টাব্দে হিজরি সন প্রবর্তনের এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। হিজরতের বছর থেকে সন গণনার পরামর্শ দেন হজরত আলী (রা.)। পবিত্র মহররম মাস থেকে ইসলামি বর্ষ শুরু করার পরামর্শ প্রদান করেন হজরত উসমান (রা.)। (বুখারি ও আবু দাউদ)।
হিজরি বছরের শেষ মাস এবং শুরুর মাস অনেক মর্যাদা ও ফজিলতের মাস। তাই এ হিজরি বছরের শেষ এবং নতুন বছরের প্রথম রাত ও দিন বিগত দিনের গোনাহ মাফ এবং আগামী দিনের কল্যাণ লাভের এক মর্যাদপূর্ণ সময়। মহররম মাস শুধুমাত্র কারবালার ঘটনা স্মরণ করার মাসই নয়, এমাস গোনাহ থেকে বেঁচে থাকার, ত্যাগের, ভালো কাজ করার, খারাপ কাজ থেকে বেঁচে থাকার এবং মুসলিম বিশ্বকে নতুন করে গড়ার প্রতিজ্ঞা করার মাস। ইসলাম ও মুসলমানের জন্য এ মাসের রয়েছে অনেক শিক্ষণীয় ও পালনীয় বিষয়। এ মাসের ৯, ১০ ও ১১ তারিখে রোজা রাখা উত্তম বলে ইসলামী স্কলাররা মত দিয়েছেন।