নিন্মমানের কাজের কারণে কাজ শেষ না হতেই উঠে যাচ্ছে বিটুমিন

নিন্মমানের কাজের কারণে কাজ শেষ না হতেই উঠে যাচ্ছে বিটুমিন
নিন্মমানের কাজের কারণে কাজ শেষ না হতেই উঠে যাচ্ছে বিটুমিন

সাবের আহমদ রিজভী, বোয়ালখালী।।

দীর্ঘদিন দাবীর পর অবশেষে জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতুর মেরামতের কাজে হাত দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। ১৪ জানুয়ারি থেকে চলে আসা এ সংস্কার কাজ আগামী ২৩ জানুয়ারি ১০ দিন পর্যন্ত চলছিল বলে জানিয়েছেন তাঁরা। প্রতিরাত ১০ টা থেকে ভোর ৬ টা পর্যন্ত দৈনিক ৮ ঘন্টা সেতু বন্ধ রেখে চালানো হয়েছিল একাজ।

দীর্ঘ দিন পর সেতু সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হলেও কাজের মান ও বরাদ্দ নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে সেতুর উপরদিয়ে যাতায়তকারী যাত্রীরা। এখনও সপ্তাহ না পার হলেও মেরামতের জন্য লাগানো বিটুমিন গুলো ঘষাদিলেই উঠেযাচ্ছে। তাদের অভিযোগ- ব্লকগুলোতে গর্জন কাঠের পরিবর্তে লাগানো হয়েছে নিম্নমানের কাঠ।

যেগুলো কিছুদিন পর নষ্ট হয়ে যাবে। কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের আহবায়ক মো. আবদুল মোমিন দীর্ঘদিন কাজ করছেন নতুন সেতুর দাবি নিয়ে।

তিনি বলেন-দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল হিসেবে এখানে নতুন সেতুর ঘোষণা পেয়েছি সরকার থেকে। এব্যাপারে নব নির্বাচিত সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদও আন্তরিক। তবে এটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হতে তো কয়েক বছর সময় লাগতে পারে। অন্তত ততদিন পুরোনো সেতুটি সচল রাখতে হবে। সেতুটির এখন যে অবস্থা তাতে আগের চেয়ে আরো বেশি সংস্কার প্রয়োজন। কয়েক লাখ টাকার লোক দেখানো বাজেটে কোন কাজ হবে না। এখন যে কাজ চলছে তাতে সেতুটি আরো জরাজীর্ণ হয়ে যাবে। এতে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। তখন রেল কর্তৃপক্ষ কোনভাবেই দায় এড়াতে পারবে না।

৫২ লাখ টাকায় সেতু সংস্কারের কাজটির সংস্কারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবি কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী অনিমেশ কর বলেন- কাজটি দুই পর্যায়ে শেষ করা হবে প্রাথমিকভাবে গর্তগুলো ভরাট করে স্বাচ্ছন্দ্যে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এখানে সিডিউল অনুযায়ী জানা যায়- ১৯৩০ সালে নির্মিত একমুখি এ সেতুটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় ২০০১ সালে রেল কর্তৃপক্ষ, এরপর ২০১১ সালে চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) একদল গবেষকও এটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা দেয়। এমতাবস্থায় ২০০৪ সালে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে বড় ধরনের সংস্কারের মাধ্যমে সচল রাখা হয় মেয়াদোত্তীর্ণ এ সেতুটি।

তবে অন্য যে কোন সময়ের তুলনায় সেতুর বর্তমান অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় বলে জানান এলাকাবাসী। তাঁরা জানিয়েছেন- সেতুটির বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। গর্তে ট্রাক পড়লে কিংবা ট্রেন পারাপারের সময় ঝাঁকুনি দিয়ে কেঁপে ওঠে পুরো সেতু। এছাড়াও রেলিংয়ের নিচের কাঠগুলো ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে গেছে। এঅবস্থায় প্রতিদিন ১ লাখেরও বেশি লোক ব্যবহার করছে সেতুটি। এছাড়া সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন একটি যাত্রীবাহী ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত দুই বার যাওয়া-আসা করে। এছাড়া ও দোহাজারী বিদ্যুৎকেন্দ্রের তেল পরিবহন করে অপর একটি মালবাহী ট্রেন। কালুরঘাট সেতুর পশ্চিম পাশ (শহর এলাকা) থেকে বোয়ালখালী সদর গোমদন্ডির দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। কিন্তু ১০ মিনিটের এই পথ যেতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে বলে জানায় যাতায়তকারী যাত্রীসাধরনর ।