'তিন সিরিজেই নিরঙ্কুশ জয় বাংলাদেশের' টেস্ট,ওডিআই টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইট ওয়াশ জিম্বাবুয়ে

'তিন সিরিজেই নিরঙ্কুশ জয় বাংলাদেশের'     টেস্ট,ওডিআই টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইট ওয়াশ জিম্বাবুয়ে

নজরুল ইসলাম।।

বাংলাদেশের জয় ৩-০ তে। অর্থাৎ তিন সিরিজেই নিরঙ্কুশ জয় বাংলাদেশের। টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি তিন সিরিজেই হোয়াইট ওয়াশ হলো জিম্বাবুয়ে। পাকিস্তান সফরের তৃতীয় ধাপের প্রস্তুতি হিসেবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এ সিরিজের আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ। আর তাতেই শতভাগ সফল টাইগাররা। কোনো ধরনের প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারল না জিম্বাবুয়ে। তিনটি সিরিজেই একেবারে নিরঙ্কুশ বিজয় টাইগারদের। এই তিন সিরিজেই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান এবং বোলাররা দারুণ করেছে ব্যাট এবং বল হাতে। দারুণ ফর্মে ফিরেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। যে লক্ষ্যে জিম্বাবুয়েকে আনা হয়েছিল সে উদ্দেশ্য পুরো সফল। দারুণ প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে টাইগাররা এই সিরিজের মাধ্যমে। গতকাল টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে পুরো সফরে শতভাগ জয় নিয়ে শেষ করল বাংলাদেশ। গতকালও বাংলাদেশের বোলাররা দারুণ বল করেছে। যে কারণে ব্যাটসম্যানদের জন্য ম্যাচটা একেবারে সহজ হয়ে গিয়েছিল। আর সে সহজ কাজটি আরো সহজভাবে সম্পন্ন করে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে এই সফরে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন লিটন দাশ। সে সাথে তামিম, সৌম্য, মুশফিকরা দারুণ করেছেন ব্যাট হাতে। যার ফসল দারুণ তিনটি সিরিজ জয়।
টসে হেরে ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ের শুরুটা ভাল হয়নি। দুই ওপেনার বিচ্ছিন্ন হয় ১২ রানে। তিনাশে কামুনহুকামুইয়েকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙ্গেন আল আমিন। দ্বিতীয় উইকেটে শন এরভিন এবং ব্রেন্ডন টেইলর মিলে যোগ করেন ৫৭ রান। সে সময় মনে হচ্ছিল বড় ইনিংস গড়ার দিকে এড়িয়ে যাচ্ছে জিম্বাবুয়ে। কিন্তু এ জুটি ভাঙ্গার পর দ্রুতই উইকেট হারাতে থাকে জিম্বাবুয়ে। ২৯ রান করা এরভিনকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙেন আফিফ। এরপর বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং এর সামনে পড়ে কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারেনি জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা। কেবল ব্রেন্ডন টেইলর একপ্রান্ত আগলে রেখে একাই লড়াই করে গেছেন। তার ৫৯ রানের ইনিংসটি না হলে হয়তো শতরানের নিচেই অল আউট হয়ে যেতো জিম্বাবুয়ে। ১১৯ রানে থেমে যাওয়া জিম্বাবুয়ের পক্ষে টেইলর একাই করেছেন ৫৯ রান। যা মোট রানের প্রায় অর্ধেক। ৪৮ বলে ৬টি রচার এবং একটি ছক্কার সাহায্যে ৫৯ রান করে অপরাজিত ছিলেন টেইলর। অথচ এবারের বাংলাদেশ সফরে একেবারেই ব্যর্থ ছিলেন টেইলর ব্যাট হাতে। একমাত্র টেস্ট, তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ এবং প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ সবমিলিয়ে খেলা ছয় ইনিংসে তার সর্বোচ্চ ছিলো মাত্র ১৭। আর মোট সংগ্রহ ছিলো মাত্র ৬১ রান। অবশেষে বাংলাদেশ থেকে ফেরার আগে খেলা শেষ ম্যাচে রানের দেখা পেলেন জিম্বাবুয়ের অভিজ্ঞতম ব্যাটসম্যান। খেলেছেন ৪৮ বলে ৫৯ রানের ইনিংস। যা দলের প্রায় অর্ধেকের সমান। যদিও এতে খুব একটা লাভ হয়নি জিম্বাবুয়ের। পরের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সিকান্দার রাজা করেছেন ১২ রান। বাংলাদেশের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান এবং আল আমিন হোসেইন। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন সাইফউদ্দিন, আফিফ হোসেন ধ্রুব এবং মেহেদি হাসান।
১২০ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরু করেছিল দুই ওপেনার। এই ম্যাচে তামিমকে বিশ্রাম দেওয়ায় লিটন দাশের সাথে ইনিংসের গোড়া পত্তন করতে নেমেছিলেন নাঈম শেখ। দুজন মিলে যোগ করেন ৭৭ রান। যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি। আগের ম্যাচে তামিম ইকবাল এবং লিটন দাশ মিলে তাদেরই গড়া আগের ৭২ রানের জুটিটা ভেঙে গড়েছিলেন ৯২ রানের জুটি। যা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের উদ্বোধনী জুটি। গতকাল সেটাকে টপকাতে না পারলেও নাইম এবং লিটন মিলে করেছেন ৭৭ রানের জুটি। ৩৪ বলে ৩৩ রান করা নাইমকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন এমপুফু। এরপর সৌম্য সরকারকে নিয়ে আরো দ্রুত গতিতে এগিয়ে যেতে থাকে লিটন দাশ। আর এরই মধ্যে সিরিজে টানা দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন। আগের ম্যাচে ৫৯ রান করে ফিরেছিলেন লিটন। গতকাল তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি। ১৫.৫ ওভারে জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। আর তখন লিটন দাশ অপরাজিত ছিলেন ৬০ রানে। তার ৪৫ বলের ইনিংসটিতে ৮টি চারের মার ছিল। ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিরেও আগের সেরা ৬১ রানকে টপকাতে পারেনি লিটন দাশ। অপরদিকে আগের ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করা সৌম্য সরকার গতকাল অপরাজিত ছিলেন ১৬ বলে ২০ রান করে। যেখানে ২টি ছক্কার মার ছিল।