জেলা শিল্পকলা একাডেমি উদ্যোগে ‘এসো মিলি সবে নবান্নের উৎসবে’ আয়োজিত

জেলা শিল্পকলা একাডেমি  উদ্যোগে ‘এসো মিলি সবে নবান্নের উৎসবে’ আয়োজিত

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত নবান্ন উৎসব-১৪২৬ বঙ্গাব্দের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেছেন, আমাদের আদিমতম উৎসবগুলোর একটি ‘নবান্ন উৎসব’। কৃষিভিত্তিক সভ্যতায় গড়ে ওঠা শস্যভিত্তিক এই লোকজ উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয় বাংলার গ্রাম-গঞ্জে কৃষকের ঘরে ঘরে। নবান্ন শব্দটি শুনলেই পিঠা, পায়েস, মুড়ি-মুড়কি আর নতুন চালের ভাতের সুগন্ধে ভরে ওঠে মনটা। অন্ন বা আহার নিয়ে এই উৎসবের জন্ম। কার্তিক মাসের শুরু থেকেই দেশের বিস্তীর্ণ জনপদে ধান কাটা শুরু হয়ে যায়। অগ্রহায়ণে কৃষকের গোলা ভরে ওঠে ধান-চালে। যার ফলে কৃষি নির্ভর বাংলায় পিঠা-পুলি, চিঁড়া-মুড়ি নিয়ে উৎসব করার সময় এটাই। আমাদের নতুন প্রজন্মের সন্তানদেরকে বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য সম্পর্কে জানাতে হবে।

‘এসো মিলি সবে নবান্নের উৎসবে’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে প্রতিবছরের মতো এবারও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেন।

প্রধান আলোচক বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক ড. হরিশংকর জলদাস বলেন, অগ্রহায়ণের শুরুতেই দুই বাংলাতে চলে উৎসবের নানা আয়োজন। নতুন ধান কাটা আর সেই ধানের প্রথম অন্ন খাওয়াকে কেন্দ্র করে পালিত হয় নবান্ন উৎসব। বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। হেমন্ত এলেই দিগন্তজোড়া প্রকৃতি ছেয়ে যায় হলুদ-সবুজ রঙে। এই শোভা দেখে কৃষকের মন আনন্দে ভাসতে থাকে। কারণ, কৃষকের ঘর ভরে উঠবে গোলা ভরা ধানে। বছর ঘুরে আবার এসেছে অগ্রহায়ণ। বাঙালির প্রধান কৃষিজ ফল কাটার ক্ষণ। স্মরণাতীত কাল থেকে বাঙালির জীবনে পয়লা অগ্রহায়ণকে বলা হয়ে থাকে বাৎসরিক সুদিন। এ দিনকে বলা হয় নবান্ন। নবান্ন হচ্ছে হেমন্তের প্রাণ। নতুন ধানের চাল দিয়ে তৈরি করা হয় পিঠা, পায়েস, ক্ষীরসহ হরেক রকমের খাবার বাড়ির আঙিনা নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে ভরে ওঠে। চিরায়ত বাংলার চিরচেনা রূপ এটি।

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর কবিরের সভাপতিত্বে ও ফারুক তাহেরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত নবান্ন উৎসবের আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাইফুল আলম বাবু। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কালচারাল অফিসার মোসলেম উদ্দিন সিকদার লিটন ও একাডেমির সদস্য সাংবাদিক রনজিত কুমার শীল। আলোচনা সভা শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও অন্যান্য সংগঠনের শিল্পীরা সমবেত সঙ্গীত, দলীয় নৃত্য, একক সঙ্গীত, একক আবৃত্তি ও পুঁথি পরিবেশন করেন।-বিজ্ঞপ্তি