চালু হলো ফৌজদারহাট-পতেঙ্গা আউটার রিং রোড  

অভ্যন্তরীণ রুট ব্যবহার করবে না ইপিজেডমুখি ভারী গাড়ি , নগরীর সড়কে যানজট কমবে

চালু হলো ফৌজদারহাট-পতেঙ্গা আউটার রিং রোড  
চালু হলো ফৌজদারহাট-পতেঙ্গা আউটার রিং রোড  

নিজস্ব প্রতিবেদক ।।

বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার যৌথ উদ্যোগে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বাস্তবায়নে বিমানবন্দর সড়কের ভোগান্তি এবং যানজট এড়াতে বহুল প্রত্যাশার  সীতাকুন্ডের ফৌজদারহাট-পতেঙ্গা আউটার রিং রোড অনানুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয়েছে। যান চলাচলের জন্য প্রকল্পটির কিছু অংশ ইতিমধ্যে চালু হলেও প্রকল্পটির উদ্বোধন করতে একটু সময় লাগবে।

উপকূলীয় বাঁধ কাম আউটার রিং রোড প্রকল্পের আওতায় ১৭ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয় ফৌজদারহাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত। এরমধ্যে ১৫ দশমিক ২০ কিলোমিটার মূল সড়ক এবং ২ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক রয়েছে। সড়কটি সরাসরি কর্ণফুলী ট্যানেলে গিয়ে যুক্ত হয়েছে। আউটার রিং রোড চালু হলে ইপিজেডমুখি ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান এবং লরি নগরীর অভ্যন্তরীণ রুট ব্যবহার করবে না। ফলে অনেকটাই যানজটমুক্ত হবে নগরীর সড়কগুলো। সড়কটি দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অর্থনৈতিক জোন থেকে বন্দরে সহজে পণ্য পরিবহন করা যাবে। আর ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক দিয়ে কক্সবাজারমুখি গাড়ি ট্যানেল হয়ে নদীর দক্ষিণ পাড়ে যেতে পারবে।এতে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে গতিশীলতার পাশাপাশি পর্যটকও বাড়বে। একইসঙ্গে শহর রক্ষা বাঁধ হিসেবেও কাজ করবে আউটার রিং রোড। সড়কটি অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মূল চালিকাশক্তিতে পরিণত হবে । এখন টোল রোডের সাথে যুক্ত করে রাস্তাটি চালু করা হয়েছে। এতে ১৫.২ কিলোমিটার আউটার রিং রোড এবং ৫ কিলোমিটারের টোল রোড ব্যবহার করে যে কেউ ইচ্ছে করলে পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাটে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পৌঁছতে পারবেন। 

অপরদিকে ফৌজদারহাট থেকে টোল রোড ধরে রাসমনি ঘাটের কাছ পর্যন্ত গিয়ে আউটার রিং রোড ব্যবহার করে অনায়াসে যাওয়া যাবে পতেঙ্গায়। লালখান বাজার বা জিইসি মোড় থেকে ফ্লাইওভার ধরে বায়েজিদ-ফৌজদারহাট বাইপাস রোড ব্যবহার করে ফৌজদারহাট গিয়ে টোল রোড দিয়ে মাত্র চশি মিনিটে পতেঙ্গায় পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে। সম্প্রতি অনানুষ্ঠানিকভাবে সড়কটি চালু করার পর প্রতিদিন অনেক মানুষ এই রোড ব্যবহার করে পতেঙ্গা আসা-যাওয়া করছেন।

চট্টগ্রাম আউটার রিং রোড প্রকল্পের পরিচালক এবং সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, আমাদের কাজ প্রায় নববই শতাংশ শেষ হয়েছে। কিছু সমস্যা হয়েছে। এগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়িত হতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে পতেঙ্গা থেকে দক্ষিণ কাট্টলী রাসমনি ঘাট পর্যন্ত আউটার রিং রোডের কাজ প্রায় পুরোপুরি শেষ। এই পয়েন্ট থেকে এক কিলোমিটারের মতো অংশ পিচঢালা করে টোল রোডের সাথে যুক্ত করেছি। এতে করে পতেঙ্গা থেকে এসে রাসমনি ঘাট পয়েন্ট থেকে ফৌজদারহাটের দিকে টোল রোড ব্যবহার করা যাচ্ছে। তবে এই ব্যবস্থাটি দীর্ঘমেয়াদি নয়।

তিনি বলেন, আউটার রিং রোড প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। তাতে রাসমনি ঘাটের এই পয়েন্ট থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত আলাদা পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা হবে। এটি শুধু আউটার রিং রোডের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হবে। টোল রোডে কোনো ডিসটার্ব করবে না। তবে ওই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত টোল রোডের এই পাঁচ কিলোমিটার এলাকা ব্যবহার করে ফৌজদারহাট থেকে পতেঙ্গা আসা-যাওয়া করা যাবে।

সড়কটি চালু করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিমানবন্দর সড়কে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে। বন্দরকেন্দ্রিক অনেক গাড়ি এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের জন্য বিমানবন্দর সড়কে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছিল। এক্ষেত্রে মূল শহর থেকে বিমানবন্দর বা পতেঙ্গা যাতায়াতে মানুষ যাতে কষ্ট থেকে রক্ষা পান সেজন্য ফৌজদারহাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত রাস্তা চালু করে দেওয়া হয়েছে। ফলে বহু গাড়ি এখন বিমানবন্দর সড়কের পরিবর্তে আউটার রিং রোড ব্যবহার করছে। এর ফলে এই রাস্তায় গাড়ির চাপ ক্রমান্বয়ে কমে আসছে।