চট্টগ্রাম আউটার রিং রোড যুক্ত হবে মীরসরাই ইকোনমিক জোনে! 

চট্টগ্রাম আউটার রিং রোড যুক্ত হবে মীরসরাই ইকোনমিক জোনে! 
চট্টগ্রাম আউটার রিং রোড যুক্ত হবে মীরসরাই ইকোনমিক জোনে! 

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।। 

ডিজাইনে পরিবর্তন আসছে চট্টগ্রাম আউটার রিং রোডের। মীরসরাই ইকোনমিক জোনকে কর্ণফুলীর তলদেশের টানেলসহ বিস্তৃত যোগাযোগ নেটওয়ার্কে অন্তর্ভুক্ত করতে এই পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

শুরুতে ফৌজদারহাটে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও নতুন ডিজাইনে আউটার রিং রোডকে ভাটিয়ারি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বেজা কার্যালয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, নগরীর যান চলাচলে গতিশীলতা সৃষ্টির পাশাপাশি নাগরিক দুর্ভোগ কমাতে আউটার রিং রোড প্রকল্প গ্রহণ করেছিল চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দর সড়কের যানজট কমানোসহ শহরের ভেতর দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের বড় একটি অংশকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্যই কার্যতঃ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছিল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে শহরের চারদিকেই একটি সার্কুলার রোড গড়ে তোলার কথা। তবে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণের পর আউটার রিং রোডের পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত এলাকা নতুন মাত্রা পায়। বিষয়টি আর শুধুমাত্র আউটার রিং রোড বা শহরের গাড়ি বাইরে পাঠিয়ে দেয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে। দক্ষিণ চট্টগ্রামকে মূল যোগাযোগ নেটওয়ার্কে নিয়ে আসা থেকে শুরু করে শিল্পায়ন, আবাসন ও পর্যটনে অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেয় রাস্তাটি। ২ হাজার ৪২৬ কোটি ১৪ লাখ টাকার এই প্রকল্পের আওতায় পতেঙ্গা থেকে সাগরিকা বিভাগীয় স্টেডিয়ামের সন্নিকট পর্যন্ত ১৫.২ কিলোমিটারের চার লেনের রাস্তাটি যান চলাচলের জন্য অনানুষ্ঠানিকভাবে চালু করে দেয়া হয়েছে। ১৫.২ কিলোমিটার আউটার রিং রোডের সাথে পোর্ট টোল রোডের পাঁচ কিলোমিটার অংশ ব্যবহার করে যে কোনো গাড়ি পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাটে এসে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে উঠছে। বর্তমানে পতেঙ্গা থেকে আউটার রিং রোড সাগরিকা পর্যন্ত ১৫.২ কিলোমিটার লম্বা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০ ফুট উঁচু ৮৪ ফুট প্রস্থ রাস্তাটিকে পোর্ট টোল রোডের সাথে আপাতত যুক্ত করা হলেও মূল প্রকল্পে রাস্তাটি ফৌজদারহাট পর্যন্ত আরো পাঁচ কিলোমিটার আলাদাভাবে নির্মিত হবে। রাসমনিঘাট থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত আলাদা সড়ক নির্মাণ করে আউটার রিং রোডকে পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাটে নিয়ে মিলিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার সিডিএর উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে আউটার রিং রোডের উপরোক্ত ডিজাইনে পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্তানুযায়ী, পতেঙ্গা থেকে শুরু হওয়া রাস্তাটিকে ফৌজদারহাটে শেষ না করে বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে আরো পাঁচ কিলোমিটারেরও বেশি নিয়ে ভাটিয়ারি পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া হবে।

মীরসরাই বঙ্গবন্ধু ইকোনমিক জোন থেকে ভাটিয়ারি পর্যন্ত আসা চার লেনের রাস্তার সাথে আউটার রিং রোডের বর্ধিতাংশ যুক্ত করে দেয়া হবে। এতে করে পতেঙ্গা থেকে শুরু হওয়া আউটার রিং রোড কার্যতঃ মীরসরাই ইকোনমিক জোন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। পথিমধ্যে ফৌজদারহাটেও রাস্তাটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাথে মিলিয়ে দেয়া হবে।

মীরসরাই ইকোনমিক জোন থেকে বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে ভাটিয়ারি পর্যন্ত আনা রাস্তাটির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। দুইটি রাস্তা যুক্ত করার ব্যাপারে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের একটি প্রতিনিধিদল আজ বেজা কার্যালয়ে গিয়ে সংস্থার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীর সাথে বৈঠক করার কথা রয়েছে।

চট্টগ্রাম আউটার রিং রোড প্রকল্পের পরিচালক এবং সিডিএর চিফ ইঞ্জিনিয়ার কাজী হাসান বিন শামস জানান, আউটার রিং রোডের কাজ প্রায় ৯০ শতাংশই শেষ। এখন আমরা ডিজাইনে কিছুটা পরিবর্তন এনে রাস্তাটিকে ভাটিয়ারি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রাসমনি ঘাট থেকে ফৌজদারহাটে নিয়ে রাস্তাটি শেষ করার কথা ছিল। তবে মীরসরাই ইকোনমিক জোনের কথা চিন্তা করে আমরা রাস্তাটিকে ভাটিয়ারি পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছি। ইকোমনিক জোন থেকে শহরমুখি যে রাস্তাটি ভাটিয়ারিতে এসে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে যুক্ত হওয়ার কথা ছিল সেটিতে কিছুটা পরিবর্তন এনে নতুন করে ডিজাইন তৈরি করা হবে। বিষয়টি নিয়ে বেজা কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠানের বিষয়টিও সিডিএর চিফ ইঞ্জিনিয়ার কাজী হাসান বিন শামস নিশ্চিত করেছেন।