কাল সীতাকুণ্ড আওমীলীগের সম্মেলন, নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ ও উৎকন্ঠা

কাল সীতাকুণ্ড আওমীলীগের সম্মেলন, নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ ও উৎকন্ঠা

মোহাম্মদ আলাউদ্দীন ।।

কাল বহুল কাঙ্খিত সীতাকুণ্ড উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন । এর আগে ১৬ ও ২৩ নভেম্বর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ থাকলেও তা পেছানো হয়েছিল। দীর্ঘ ৭ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কাউন্সিলকে ঘিরে ইতোমধ্যে পুরো সীতাকুণ্ড জুড়ে চলছে জল্পনা কল্পনা। কারা হচ্ছেন আলোচিত সীতাকুণ্ড উপজেলা আওয়ামীলীগের কান্ডারী।

সম্মেলনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে উপজেলার ৯০টি ওয়ার্ড, ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার কাউন্সিল শেষ হয়েছে। শুক্রবার সীতাকুণ্ড সরকারি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলার আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলন ঘিরে তৃণমূল নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন।

সভাপতি-সম্পাদক কারা হচ্ছেন তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এই দুই পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় উপস্থিত থেকে কাউন্সিলরদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন। প্রার্থিতা ঘোষণা নিয়ে সরগরম প্রার্থী ও সমর্থকদের ফেসবুক। বিশেষ করে সম্ভাব্য প্রার্থীরা ফেসবুকে নানামুখী প্রচার চালাচ্ছেন। এর আগে সীতাকুণ্ড উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন হয়েছিল ২০১২ সালের ২২ অক্টোবর।

তিন বছরের মেয়াদের কমিটি মেয়াদ সাত বছর পার হলেও দলীয় গ্রুপিংসহ নানা সমস্যায় যথাসময়ে হয়নি সম্মেলনও। দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ২২ অক্টোবর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন তৎকালীন এমপি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মরহুম এবিএম আবুল কাসেম ও সাধারণ সম্পাদক হন তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া। পরবর্তীতে দীর্ঘদিন অসুস্থতার পর এবিএম আবুল কাশেম ওই বছরের ২৪ নভেম্বর মারা যান। ওই সময় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মোহাম্মদ ইসহাক।

উপজেলা আ. লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া এবং সাবেক এমপি মরহুম এবিএম আবুল কাসেম মাস্টারের জ্যেষ্ঠপুত্র উপজেলা চেয়ারম্যান এস.এম আল মামুন, উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মো.ইদ্রিস সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া বর্তমান সংসদ সদস্য দিদারুল আলম নিজে প্রার্থিতা ঘোষণা না দিলেও দলীয় নেতাকর্মীরা তার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে আ. লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সম্প্রতি সময়ে উপজেলা পর্যায়ে এমপিরা দলীয় সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী না হওয়ার অনুরোধ করা নেতাকর্মীরা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছেন। তবে এ বিষয়ে উপজেলা আ. লীগের সম্মেলন সমন্বয়ক এডভোকেট ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপজেলা পর্যায়ে সভাপতি/সম্পাদক পদে এমপিদের নিরুৎসাহিত করার জন্য কথাটা বলেছেন। কারণ নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করা এবং একই ব্যক্তি উপজেলা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদ যেন ধরে না রাখে। তবে এমপিদের উপজেলা পর্যায়ে সভাপতি হতে কোনো বাধা নেই।

কাউন্সিলকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা। ৭ বছর পর হতে যাওয়া কাউন্সিলে এই মূহর্তে সীতাকুণ্ড উপজেলা আওয়ামীলীগ তিন গ্রুপে বিভক্ত।


ইতিপূর্বে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভার মাধ্যমে সভাপতি হিসেবে প্রার্থীতা ঘোষনা করেছে উপজেলা আওয়ামীলীগের দীর্ঘ দিনের সাধারন সম্পাদক আবদুল্লাহ আল বাকের ভূইয়া।


তাছাড়া সভাপতি-সম্পাদক করে প্যানেল প্রার্থীতা ঘোষনা করেছেন উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মো.ইদ্রিস ইউপি ও চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম নিজামী।

এছাড়াও আগেই প্রার্থীতা ঘোষনা করেছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতি এসএম আল মামুন সভাপতি পদে এবং সাধারন সম্পাদক পদে রেহান উদ্দিন রেহান ও শওকত আলী জাহাঙ্গীর।

সভাপতি প্রার্থী ইদ্রিস বলেন, আগামী ২৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া উপজেলা আ’লীগের সম্মেলনে বাচাই নয়, কাউন্সিলরদের প্রত্যেক্ষ ভোটার মাধ্যমে হতে হবে। দলীয় প্রভাবের বাইরে ভোটারদের অবাধ স্বাধীনতার মাধ্যমে কাউন্সিল করলে যোগ্য নেতারা নেতৃত্বের হাল ধরবে।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী তাজুল ইসলাম নিজামী বলেন, আর সিলেকশান নয়, এবার ইলেকশানের মাধ্যমে যোগ্য নেতা নির্বাচিত করতে সংকল্পবদ্ধ কাউন্সিলরা। তাই কোন ধরনের অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে প্রভাবিত না হয়ে অবাধ, সুষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে উপজেলা আ’লীগের নেতা নির্বাচিত করার আহব্বান জানান।

নেতাকর্মীরা জানান, উপজেলা রাজনীতি বর্তমান এমপি দিদারুল আলম, উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া এবং উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন তিন গ্রুপে বিভক্ত।

এদিকে কাউন্সলকে ঘিরে একদিকে নেতা-কর্মীদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে আবার অন্য দিকে উৎকন্ঠাও বিরাজ করছে। তৃর্ণমুলের নের্তৃবৃন্দ আশা করছেন সীতাকুণ্ডে যেন সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে কাউন্সিল সম্পন্ন হয়। এজন্য আইন শৃংখলা বাহিনীর সহায়তা কামনা করছেন।