করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে ১৫ শর্ত দিয়ে সরকারের প্রজ্ঞাপন জারি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে ১৫ শর্ত দিয়ে সরকারের প্রজ্ঞাপন জারি

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

প্রাণঘাতী করোনা রোধে ১৫ জুন পর্যন্ত ১৫ শর্ত দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।

আজ জারি করা এই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে,

১. আগামী ৩১ মে ২০২০ থেকে ১৫ জুন ২০২০ পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। ৫, ৬, ১২ ও ১৩ জুন ২০২০ সাপ্তাহিক ছুটি এ নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

২. নিষেধাজ্ঞাকালে এক জেলা হতে অন্য জেলায় জনসাধারণের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। প্রতিটি জেলার প্রবেশ ও বহির্গমন পথে চেকপোস্টের ব্যবস্থা থাকবে। জেলাপ্রশাসন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় এ নিয়ন্ত্রণ সতর্কভাবে বাস্তবায়ন করবে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে চলাচলে নিষেধাজ্ঞাকালে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। রাত ৮টা হতে সকাল ৬টা পর্যন্ত অতীব জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (প্রয়োজনীয় ক্রয়-বিক্রয়, কর্মস্থলে যাতায়াত, ওষুধ ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনােভাবেই বাড়ির বাইরে আসা যাবে না। তবে সর্বাবস্থায়ই বাইরে চলাচলের সময় মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। অন্যথায় নির্দেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৩. নিষেধাজ্ঞাকালীন জনসাধারণ ও সব কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশমালা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।

৪. হাটবাজার, দোকান-পাটে ক্রয় বিক্রয়কালে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য বিধি কঠোরভাবে প্রতিপালন করতে হবে। শপিংমলের প্রবেশমুখে হাত ধােয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আগত যানবাহনসমূহকে অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। হাটবাজার, দোকানপাট এবং শপিংমলসমূহ আবশ্যিকভাবে বিকাল ৪টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।

৫. আইন-শৃঙ্খলা, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কার্যে নিয়োজিত সংস্থা এবং জরুরি পরিসেবা, যেমন-ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের (স্থল বন্দর, নদীবন্দর এবং সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতা-বহির্ভূত থাকবে।

৬. সড়ক ও নৌপথে সকল প্রকার পণ্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত যানবাহন (ট্রাক, লরি, কার্গো ভেসেল প্রভৃতি) চলাচল অব্যাহত থাকবে;

৭. কৃষি পণ্য, সার, বীজ, কিটনাশক, খাদ্য, শিল্প পণ্য, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের মালামাল, কাঁচাবাজার, খাবার, ঔষধের দোকান, হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এসবের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।

৮. চিকিৎসা সেবায় নিয়ােজিত চিকিৎসক, নার্স ও কর্মী এবং ঔষধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মী, গণমাধ্যম (ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া) এবং ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কে নিয়োজিত কর্মীগণ এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবেন; ঔষধশিল্প, কৃষি এবং উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলো, উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী শিল্পসহ সকল কলকারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করে চালু রাখতে পারবে।

৯. স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক প্রণীত ‘বিভিন্ন শিল্প কারখানায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণে নির্দেশনা প্রতিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

১০. নিষেধাজ্ঞাকালীন কোনোশিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে না। তবে, অনলাইন কোর্স/ডিস্টেন্স লার্নিং অব্যাহত থাকবে;

১১. ব্যাংকিং ব্যবস্থা পূর্ণভাবে চালু করার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়ােজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।

১২. সকল সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিসসমূহ নিজ ব্যবস্থাপনায় সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি, অসুস্থ কর্মচারী এবং সন্তান সম্ভবা নারীগণ কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এক্ষেত্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিতকরণের জন্য স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারিকৃত দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় ক্ষেত্র ব্যতীত সকল সভা ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে আয়োজন করতে হবে।

১৩. উক্ত নিষেধাজ্ঞাকালে কেউ কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবে না। উক্ত সময়ে শর্তসাপেক্ষে সীমিত পরিসরে সংখ্যক যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্য সম্মত বিধি নিশ্চিত করে গণপরিবহণ, যাত্রীবাহী নৌযান ও রেল চলাচল । পারবে। তবে সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে, নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়ােজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।

১৪. বিমান কর্তৃপক্ষ নিজ ব্যবস্থাপনায় বিমান চলাচলের বিষয় বিবেচনা করবে।

১৫. উক্ত নিষেধাজ্ঞাকালে সকল প্রকাশ সভা সমাবেশ, গণজমায়েত, অনুষ্ঠান আয়োজন বন্ধ থাকবে। মসজিদ, মন্দির ও সকল প্রকার প্রার্থনালয়ে স্থাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায় ও প্রার্থনা অব্যাহত থাকবে।