করোনাজনিত সংকট কালে যে ৪ শর্তে বাড়লো বাস ভাড়া

করোনাজনিত সংকট কালে যে ৪ শর্তে বাড়লো বাস ভাড়া
ফাইল ফটো

পোস্টকার্ড ডেস্ক ।।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দুই মাস বন্ধ থাকার পর আজ সোমবার থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে শুরু হচ্ছে গণপরিবহন চলাচল। প্রতিটি বাস-মিনিবাসের অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে চালানোর সিদ্ধান্ত দিয়েছে বিআরটিএ।

এর ফলে পরিবহন মালিকরা লোকসানের কথা উল্লেখ করে শতভাগ ভাড়া বৃদ্ধির দাবি করে। কিন্তু বিআরটিএর ভাড়া নির্ধারণে স্থায়ী ব্যয় বিশ্লেষণ কমিটি ঘণ্টা খানেকের বৈঠকে ৮০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব করে। এরপর এ নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা।

অবশেষে আজ রোববার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ৮০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব করলেও তা কমিয়ে চারটি শর্ত দিয়ে করোনাকালীন গণপরিবহনের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ধারা ৩৪ এর ২ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে করোনাভাইরাসজনিত রোগের (কোভিড-১৯) বিস্তার রোধকল্পে শর্তসাপেক্ষে সীমিত পরিসরে নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকল্পে সরকার আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লায় চলাচলকারী (ঢাকা মহানগর ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা এবং চট্টগ্রাম মহানগরসহ) বাস ও মিনিবাসের সর্বোচ্চ ভাড়া নিম্নোক্তভাবে পুনর্নির্ধারণ করল।

(ক) আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লা রুটে বাস বা মিনিবাস চলাচলের ক্ষেত্রে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ২০১৬ সালের ৩ মে প্রজ্ঞাপনমূলে উল্লিখিত বিদ্যমান ভাড়ার (যাত্রীপ্রতি কিলোমিটার সর্বোচ্চ ১.৪২ টাকা) ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হলো।

(খ) ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে বাস বা মিনিবাস চলাচলের ক্ষেত্রে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ২০১৬ সালের ১৬ সেপ্টেম্বরে প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত বিদ্যমান ভাড়ার (ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলরত বাস ও মিনিবাসের সর্বোচ্চ ভাড়া প্রতি যাত্রী প্রতি কিলোমিটার যথাক্রমে ১.৭০ টাকা ও ১.৬০ টাকা। বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ভাড়ার বিদ্যমান হার ৭ টাকা ও ৫ টাকা) ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি।

(গ) ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটির (ডিটিসিএ) আওতাধীন জেলার (নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা জেলা) অভ্যন্তরে চলাচলকারী বাস ও মিনিবাস উভয় ক্ষেত্রে ভাড়ার হার প্রতি যাত্রী প্রতি কিলোমিটার ১.৬০ টাকার ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি।

এ জন্য চারটি শর্ত দেয়া হয়, শর্তাবলি হচ্ছে-

১. একজন যাত্রীকে বাস বা মিনিবাসের পাশাপাশি দুইটি আসনের একটি আসনে বসিয়ে অপর আসনটি অবশ্যই ফাঁকা রাখতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসারে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটে উল্লিখিত মোট আসন সংখ্যার অর্ধেকের বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না এবং দাঁড়িয়ে কোনো যাত্রী বহন করা যাবে না।

২. বর্ণিত প্রজ্ঞাপনদ্বয়ে উল্লিখিত ভাড়ার বিদ্যমান হারে প্রচলিত ভাড়ার চার্টে বর্ণিত ভাড়ার সাথে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ভাড়া বৃদ্ধির হার যোগ করে নতুন ভাড়া নির্ধারিত হবে।

৩. স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণপূর্বক বাস বা মিনিবাস পরিচালনা করতে হবে।

৪. অনুমোদিত ভাড়ার হার করোনাভাইরাসজনিত (কোভিড-১৯) সংকটকালের জন্য প্রযোজ্য হবে। এ সংকট দূর হলে প্রজ্ঞাপনদ্বয়ের বিদ্যমান হারের ভাড়া পুনঃপ্রযোজ্য হবে।